বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে চলে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় স্থানীয় পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা এবং রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত বিদ্যালয়ের নীতি বাস্তবায়নের জন্য দায়ীত্বশীল । বাংলাদেশে, সকল নাগরিককে অবশ্যই দশ বছরেরর মধ্যে প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে যা প্রাথমিক বিদ্যালয় স্তরে পাঁচ বছর এবং উচ্চ বিদ্যালয় স্তরে পাঁচ বছর। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা রাষ্ট্র দ্বারা অর্থায়ন করা হয় এবং সরকারি বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান করা হয়।
![]() | |
শিক্ষামন্ত্রালয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় | |
---|---|
শিক্ষা মন্ত্রী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী | দীপু মনি শাহাব উদ্দিন |
জাতীয় শিক্ষা বাজেট (২০২১) | |
বাজেট | ৭১ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা [1] |
সাধারণ বিবরণ | |
মাতৃভাষা | বাংলা, ইংরেজি |
ব্যবস্থার ধরণ | জাতীয় |
বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠিত | ৪ নভেম্বর ১৯৭২ |
স্বাক্ষরতা (২০১৯ [2]) | |
মোট | ৭৮.৭০% |
পুরুষ | ৮০.৭০% |
মহিলা | ৭৮.৯০% |
তালিকাভুক্তি | |
মোট | ২৩,৯০৭,১৫১ |
প্রাথমিক | ১৬,২৩০,০০০ |
মাধ্যমিক | ৭,৪০০,০০০ |
মাধ্যমিক পরবর্তী | ২৭৭,১৫১ |
লব্ধি | |
মাধ্যমিক ডিপ্লোমা | ৩৩৫,৪৫৪ |
মাধ্যমিক-পরবর্তী ডিপ্লোমা | ৮৬,৯৮৪ |
"Bangladesh Education Stats"। NationMaster। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬। "Statistical Pocket Book-2006" (পিডিএফ)। Bangladesh Bureau of Statistics। ২০০৬। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬। |
কারিগরী শিক্ষা ব্যবস্থা
http//www.nctb.gov.bd
ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা
বাংলাদেশ এ ইসলামী শিক্ষা সাধারণত মসজিদ ও মাদ্রাসা ভিত্তিক হয়ে থাকে। মাদ্রাসার প্রাথমিক স্তর মক্তব, নূরানি বা ফোরকানিয়া মাদ্রাসা নামে অভিহিত। ফোরকানিয়া শব্দের মূল ফুরকান যার অর্থ বিশিষ্ট। মিথ্যা থেকে সত্যকে সুস্পষ্টভাবে পৃথক করে বলে পবিত্র কুরআন-এর আরেক নাম আল ফুরকান। প্রাথমিক স্তরের যেসব মাদ্রাসায় কুরআন পাঠ ও আবৃত্তি শেখানো হয় সেগুলিকে বলা হয় দর্সে কুরআন। সাধারণত স্থানীয় কোন মসজিদেই আশেপাশের পরিবারের ছোটদের প্রাথমিক পর্যায়ের ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয়। মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জিনরাই সাধারণত এর শিক্ষক বা উস্তাদ হন।
মাদ্রাসার ধরন
- ইবতেদায়ী মাদ্রাসা
- দাখিল মাদ্রাসা
- আলিম মাদ্রাসা
- ফাজিল মাদ্রাসা
- কামিল মাদ্রাসা
- হাফিজিয়া মাদ্রাসা
- কওমি মাদ্রাসা
- দীনিয়া মাদরাসা
ইংরেজি শিক্ষা ব্যবস্থা
ইংরেজি একটি বিদেশি ভাষা হলেও এটি বাংলাদেশের দাপ্তরিক ভাষা ও শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত। ইংরেজি ভাষার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের জন্য প্রাথমিক হতে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যপাঠ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তাছাড়া বাংলাদেশে ইংরেজি ভাষায় দুই ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি চালু রয়েছে। প্রথমত, ইংরেজি ভার্সন যার পাঠ্যক্রম বাংলাদেশ কর্তৃক নির্ধারিত। এবং দ্বিতীয়ত ইংরেজি মাধ্যম, যার পাঠ্যক্রম আন্তর্জাতিক সিলেবাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশে সাধারণত তিন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় দেখা যায়। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়।
- সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় (৪৪)
- বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় (১০১)
- আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় (৩)
গণ শিক্ষা
প্রাপ্ত বয়স্ক শিক্ষা
গণসাক্ষরতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য নিয়ে দেশে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রাপ্ত বয়স্ক শিক্ষা প্রচলিত আছে।
বেসরকারি সংস্থাসমূহের অবদান
বর্তমানে সারাদেশে অসংখ্য সুবিধাবঞ্চিতদের স্কুল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাক্ষরতা অর্জনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন যা দেশের শিক্ষার হার বর্ধনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। এর মধ্যে বিজয় ফাউন্ডেশন, জাগো ফাউন্ডেশন, মজার ইশকুল, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, রোজেনবার্গ ফাউন্ডেশন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড
বাংলাদেশের শিক্ষা বোর্ড দেশের তিন স্তরবিশিষ্ট শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাথমিক স্তর এবং মাধ্যমিক স্তর পরিচালনার জন্যে গঠিত জেলাভিত্তিক শিক্ষা বোর্ড। উক্ত বোর্ডসমূহ ৬ বছর মেয়াদি প্রাথমিক, ৭ বছর মেয়াদি মাধ্যমিক (এর মধ্যে ৩ বছর মেয়াদী জুনিয়র, ২ বছর মেয়াদি মাধ্যমিক) এবং ২ বছর মেয়াদী উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ এই বোর্ডসমূহের তত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষা বোর্ড | স্থাপিত | অর্ন্তভুক্ত জেলা |
---|---|---|
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা | ৭ মে ১৯২১ | ঢাকা |
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী | ১৯৬২ | রাজশাহী |
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, কুমিল্লা | ১৯৬২ | কুমিল্লা |
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোর | ১৯৬২ | যশোর |
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম | ১৯৯৫ | চট্টগ্রাম |
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, বরিশাল | ১৯৯৯ | বরিশাল |
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, সিলেট | ১৯৯৯ | সিলেট |
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, দিনাজপুর | ২০০৬ | দিনাজপুর |
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ময়মনসিংহ | ২০১৭ | ময়মনসিংহ |
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার মাধ্যমে যার নাম বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন।
পাঠ্যপুস্তক প্রকাশনা
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল পাঠ্যপুস্তক বাংলাদেশ স্কুল টেক্সটবুক বোর্ড নামীয় একটি সরকারি সংস্থার মাধ্যমে প্রণীত, সম্পাদিত, মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। সরকার ২০০৩ সাল থেকে সীমিত পর্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম প্রবর্তন করে। বছর বছর এই কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়। ২০১৩ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীকে এই কর্মসূচির আওতায় আনা সম্ভব হয়। ২০১৩ সালের নতুন শিক্ষাবছর শুরুর আগেই ৩ কোটি পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে পৌঁছে দেয়া হয়।
তথ্যসূত্র
- রশীদ, মামুনুর (২০২১-০৬-০৬)। "শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়েনি, কমেছে"। The Daily Star Bangla (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৪।
- "Bangladesh education"। UNESCO। ৬ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০২১।