বহুজাতিকতা

বহুজাতিকতা (ইংরেজি: "Polyethnicity") বলতে ভিন্ন জাতিগত পটভূমির মানুষের একটি দেশে বা অন্য নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে একত্রে বসবাস করাকে বুঝায়। ব্যক্তিবর্গের নিজেদের বহু জাতির লোক বলে পরিচয় দেয়ার ক্ষমতা এবং ইচ্ছাও এর সাথে সম্পর্কিত।[1] ভিন্ন জাতির মানুষ যখন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসবাস করে, বিশেষ করে অভিবাসন, অসবর্ণ বিয়ে, বাণিজ্য, বিজয়লাভ এবং যুদ্ধ-পরবর্তী ভূমি-বিভাগের মাধ্যমে তখন এমনটি হয়ে থাকে।[2][3][4]

বহুজাতিকতা, নিউ ইয়র্ক সিটিতে

প্রফেসর উইলিয়াম এইচ. ম্যাকনেইল "বহুজাতিকতা" নিয়ে তার ভাষণে উল্লেখ করেন যে, 'বিভিন্ন জাতি নিয়ে সংস্কৃতি তৈরী হওয়াই সামাজিক নিয়ম।'[5] দেশধর্মের উপর এটির অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব রয়েছে।[6][7]

সকল দেশে না হলেও বেশিরভাগ দেশেই কম বেশি বহুজাতিকতাদের লক্ষ্য করা যায়, তারমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকানাডাতে অধিক পরিমাণে এবং জাপানপোল্যান্ড-এ তুলনামূলক কম।[8][9][10][11]

বহুজাতিকতাের পরিমাণের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সমাজে কিছু বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে, তারমধ্যে একটি বিশ্বাস হচ্ছে, এটি প্রত্যেক সমাজের সবলতাকে দূর্বল করে দিচ্ছে এবং আরেকটি ধারণা হচ্ছে বহুজাতিকতা দেশের রাজনৈতিক- জাতিগত ব্যাপারগুলো নির্দিষ্ট জাতির জন্য আলাদা আইন হলে বেশি ভালভাবে কার্যকর করা যায়।[12][13]

ধারণামূলক ইতিহাস

১৯৮৫ সালে বহুজাতিকতা বিষয়ে অভিজ্ঞ কানাডিয়ান ইতিহাসবেত্তা অধ্যাপক উইলিয়াম এইচ. ম্যাকনেইল টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুজাতিকতা-এর অতীত ও বর্তমান সাংষ্কৃতি নিয়ে তিনটি ভাষণ দেন।[14] তার ভাষণের প্রধান গবেষণামূলক উপস্থাপনটি ছিল যে বিভিন্ন জাতি নিয়ে সমাজের গঠনই সাংস্কৃতির আদর্শ নিয়ম। ম্যাকনেইলের মতে সমজাতি সমাজকে আদর্শ ধারণা করার ব্যাপারটি ১৭৫০ থেকে ১৯২০ সালে পশ্চিম ইউরোপ-এ গড়ে ওঠে কারণ তখন সমাজের রাজনৈতিক সংগঠনগুলো একক জাতীয়তাবাদী বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। ম্যাকনেইল বিশ্বাস করেন যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-এর সময়ে সমজাতি রাষ্ট্রের ধারণাটি দূর্বল হতে শুরু করে।[15]

রাজনীতির ওপর প্রভাব

বহুজাতিকতা রাষ্ট্রে বিভেদ সৃস্টি করে, রাজনৈতিকভাবে স্থানীয় ও জাতীয় সরকারের সব জাতিগোষ্ঠীকে সন্তুষ্ট করার প্রচেষ্টাকে জটিল করে তোলে।[6] বহু রাজনীতিবিদ তাদের দেশে বিভিন্ন জাতিগত পরিচয়ে এবং পুরো জাতির সামগ্রিক পরিচয়ে সমতা আনার চেষ্টা করেন।[6] জাতীয়তাবাদও এসব রাজনৈতিক বিতর্কে বড় ভূমিকা রাখে কারণ বহুজাতিকতা রাষ্ট্রের জাতীয়তাবাদের গণতান্ত্রিক বিকল্প হলো সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ এবং ক্ষমতা ভাগাভাগি।[16] জাতিয়তাবাদের ধারণাটি জাতিগত হবার পরিবর্তে সামাজিক হওয়ার ফলে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, পরিচয় ভাগাভাগি করার চেতনা এবং বংশের উপর ভিত্তি না করেই সম্প্রদায় গঠিত হয়।[17] একাধিক সাংস্কৃতি নিয়ে গঠিত রাষ্ট্রগুলো সাংবিধানিকভাবে বিকেন্দ্রিক বা এককেন্দ্রিক হতে পারে (যেমন গ্রেট ব্রিটেন) বা ফেডারেল রাষ্ট্র (যেমন বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, বা কানাডা)।[18] এইসব বহুজাতিকতা অঞ্চলে জাতিগত দলগুলো রাষ্ট্রবিরোধী হয় না তবে তারা রাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দাবি করে।[12][17] অনেক বহুজাতিকতা রাষ্ট্র তাদের শাসনকার্যের সিদ্ধান্ত নিতে এসব সংকটের মুখোমুখি হয়। নিচে এমন কিছু রাষ্ট্র ও অঞ্ছলের এসব সমস্যা ও তার প্রভাব উল্লেখ করা হলোঃ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

U.S. languages (2006)[8]
English (only)224.2 million
Spanish, incl. Creole34.0 million
Chinese2.5 million
French, incl. Creole2.0 million
Tagalog1.4 million
Vietnamese1.2 million
German1.1 million
Korean1.1 million

তথ্যসূত্র

  1. McNeil 1985, page 85
  2. Arabandi 2000, Online
  3. Smith 1998, page 190
  4. Smith [1998, page 200
  5. Dreisziger 1990 page 1
  6. Safran 2000, Introduction
  7. Benhabib 1996, pages 154–155
  8. U.S. Census Bureau
  9. Thomson 2000, pages 213-215
  10. Burgess 2007, Online
  11. Safran 2000, pages 1-2
  12. Robertson 1992, pages 1-10
  13. Thomson 2000, pages 214–215
  14. Ritzer 2004, page 141
  15. Dreisziger 1990, pages 1-2
  16. Kellas 1991, page 8
  17. Kellas 1991, page 65
  18. Kellas 1991, pages 180-183
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.