ফেনী জেলা

ফেনী জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটা একসময়ে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার অংশ ছিল ও তৎকালীন ত্রিপুরা জেলা(বর্তমান ত্রিপুরা রাজ্যের )অংশ ছিল। ২০১১ সালের জনশুমারী অনুযায়ী, এর জনসংখ্যা ১৪৩৭৩৭১ জন, যা চট্টগ্রাম বিভাগের নবম জনবহুল জেলা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। ফেনীর প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র হলো ফেনী শহর, যা ফেনী সদর উপজেলার মূখ্য প্রশাসনিক কেন্দ্র। এর প্রকৃত নাম শমশের নগর। ১৯৮৪ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এটি এই নামে বৃহত্তর নোয়াখালী, কুমিল্লার (কিছু অংশ), চট্টগ্রাম জেলার (বাকি অংশ) উল্লেখযোগ্য মহকুমা ছিল।[1] ফেনী বাংলাদেশের ৬৪তম জেলা। এর উপজেলা সংখ্যা ৬টি। সেগুলো হলো: সোনাগাজী, ফুলগাজী, পরশুরাম, দাগনভুঁইয়া, ছাগলনাইয়া এবং ফেনী সদর

ফেনী
জেলা
নদীতীরে বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প, সোনাগাজী
নদীতীরে বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প, সোনাগাজী
বাংলাদেশে ফেনী জেলার অবস্থান
বাংলাদেশে ফেনী জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩°১′০″ উত্তর ৯১°২৩′৩০″ পূর্ব
দেশবাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগ
শহর
সদরদপ্তরফেনী
প্রতিষ্ঠাকাল৭ নভেম্বর ১৯৮৩ (প্রস্তাবনা)
৬ ডিসেম্বর ১৯৮৪ (৬৪তম জেলা হিসেবে কার্যকর হয়)
সরকার
  জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানখায়রুল বশর মজুমদার (তপন)
(বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ)
আয়তন
  মোট৯২৮.৩৪ বর্গকিমি (৩৫৮.৪৩ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
  মোট১৪,৯৬,১৩৮
  জনঘনত্ব১,৬০০/বর্গকিমি (৪,২০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
  মোট৬৯%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৩৯০০
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
২০ ৩০
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

আয়তন

ফেনী জেলার মোট আয়তন ৯২৭.৩৪ বর্গ কিলোমিটার।[2]

প্রশাসনিক অঞ্চল ও জনসংখ্যা

ফেনী জেলায় ৬টি উপজেলা, ৬ টি থানা, ৫টি পৌরসভা, ৪৩টি ইউনিয়ন, ৫৬৪ টি গ্রাম ও ৫৪০ টি মৌজা রয়েছে।

উপজেলার নাম এলাকা (বর্গ কিমি) সদর দপ্তর ইউনিয়ন জনসংখ্যা
ফেনী সদর উপজেলা ১৯৭.৩৩ ফেনী ১২ ৪০৪,৪৯৮
দাগনভূঞা উপজেলা ১৬৫.৮৪ দাগনভূঞা ২২৫,৪৬৪
ছাগলনাইয়া উপজেলা ১৩৩.৪৯ ছাগলনাইয়া ১৭০,৫২৪
সোনাগাজী উপজেলা ২০৫.০৭ সোনাগাজী ২৩৫,২২৯
পরশুরাম উপজেলা ৯৭.৫৭ পরশুরাম ৯৪,৩৭৮
ফুলগাজী উপজেলা ৯৯.০৩ ফুলগাজী ১১০,২৯১

অবস্থান ও সীমানা

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২২°৪৪´ থেকে ২৩°১৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৫´ থেকে ৯১°৩৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে ফেনী জেলার অবস্থান।[2] রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ১৫১ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৯৭ কিলোমিটার। এ জেলার উত্তরে কুমিল্লা জেলাভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে নোয়াখালী জেলাচট্টগ্রাম জেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা, পশ্চিমে নোয়াখালী জেলা

ইতিহাস

প্রতিষ্ঠাকাল

জেলা পরিষদ ভবন, ফেনী

১৯৮৪ সালে প্রশাসনিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে যে সকল মহকুমাকে মানোন্নীত করে জেলায় রূপান্তর করা হয়েছিল ফেনী জেলা তার একটি। ১৯৮৪ সালের পূর্বে এটি নোয়াখালী জেলার একটি মহকুমা ছিল। এ মহকুমার গোড়াপত্তন হয় ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মীরসরাই, ছাগলনাইয়া ও আমীরগাঁও এর সমন্বয়ে। প্রথম মহকুমা প্রশাসক ছিলেন কবি নবীনচন্দ্র সেন। ১৮৭৬ সালে মীরসরাইকে কর্তন করে চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রথম মহকুমা সদর দপ্তর ছিল আমীরগাঁওয়ে। ১৮৭২ থেকে ১৮৭৪ সালের মধ্যে মোগল আমলের আমীরগাঁও থানা নদী ভাঙ্গনের ফলে ফেনী নদীর ঘাটের কাছাকাছি খাইয়ারাতে স্থানান্তরিত হয়। পরবর্তীতে এটি ফেনী থানা নামে পরিচিত হয়। অতঃপর ১৮৭৬ সালে নতুন মহকুমার পতিত হলে খাইয়ারা থেকে থানা দপ্তরটি মহকুমা সদরে স্থানান্তরিত হয় ও নতুন মহকুমাটি ফেনী নামে পরিচিত হয়।[3] পরবর্তীতে ১৮৮১ সালে তা ফেনী শহরে স্থানান্তরিত হয়।[4]

নামকরণ

ফেনী নদীর নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম রাখা হয়েছে ফেনী। মধ্যযুগে কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় একটি বিশেষ নদীর স্রোতধারা ও ফেরী পারাপারের ঘাট হিসেবে ফনী শব্দের ব্যবহার পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ষোড়শ শতাব্দীর সময়ে কবি কবীন্দ্র পরমেশ্বর পরাগলপুরের বর্ণনায় উল্লেখ করেন, ফনী নদীতে বেষ্টিত চারিধার, পূর্বে মহাগিরি পার নাই তার। এরপর সতের শতকে মির্জা নাথানের ফার্সী ভাষায় রচিত বাহরিস্তান-ই-গায়েবীতে ফনী শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে ফেনী-তে পরিণত হয়।[5]

আঠারো শতকের শেষার্ধে কবি আলী রজা প্রকাশ কানু ফকির তার পীরের বসতি হাজীগাঁও এর অবস্থান সম্পর্কে লিখছেন, ফেনীর দক্ষিণে এক ষর উপাম, হাজীগাঁও করিছিল সেই দেশের নাম। কবি মুহম্মদ মুকিম তার পৈতৃক বসতির বর্ণনাকালে বলেছেন, ফেনীর পশ্চিমভাগে জুগিদিয়া দেশে। তারাও নদী অর্থে ফেনী ব্যবহার করেছেন। ধারণা করা হয় আদি শব্দ ফনী মুসলমান কবি ও সাহিত্যিকদের ভাষায় ফেনীতে পরিণত হয়েছে।[4]

সাধারণ ইতিহাস

দূর অতীতে এ অঞ্চল ছিল সাগরের অংশ, তবে উত্তর পূর্ব দিক ছিল পাহাড়িয়া অঞ্চলের পাদদেশ। ফেনীর পূর্ব দিকের রঘুনন্দন পাহাড় থেকে কাজিরবাগের পোড়ামাটি অঞ্চলে হয়ত আদিকালে শিকারী মানুষের প্রথম পদচিহ্ন পড়েছিল। এখানকার ছাগলনাইয়া গ্রামে ১৯৬৩ সালে একটা পুকুর খননকালে নব্য প্রস্তর যুগের মানুষের ব্যবহৃত একটা হাতিয়ার বা হাতকুড়াল পাওয়া গেছে। পণ্ডিতদের মতে ঐ হাতকুড়াল প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরাতন।[3]

বৃহত্তর নোয়াখালীর মধ্যে পূর্ব দিকের ফেনী অঞ্চলকে ভূ-খণ্ড হিসেবে অধিকতর প্রাচীন বলে পণ্ডিতগণ মত প্রকাশ করেছেন। ফেনীর পূর্বভাগের ছাগলনাইয়া উপজেলার শিলুয়া গ্রামে রয়েছে এক প্রাচীন ঐতিহাসিক শিলামূর্তির ধ্বংসাবশেষ। প্রকাশ শিলামূর্তির অবস্থানের কারণে স্থানটি শিলুয়া বা শিল্লা নামে পরিচিত হয়েছে। প্রাচীন কালে হয়ত এখানে বৌদ্ধ ধর্ম ও কৃষ্টির বিকাশ ঘটেছিল।[6]

ড. আহমদ শরীফ চট্টগ্রামের ইতিকথায় বলেছেন, প্রাচীনকালে আধুনিক ফেনী অঞ্চল ছাড়া নোয়াখালীর বেশির ভাগ ছিল নিম্ন জলাভূমি। তখন ভুলুয়া (নোয়াখালীর আদি নাম) ও জুগিদিয়া (ফেনী নদীর সাগর সঙ্গমে অবস্থিত) ছিল দ্বীপের মতো।[7] ছাগলনাইয়া নামকরণ সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন যে, ইংরেজ আমলের শুরুতে সাগর (Shagor) শব্দটি ভুল ক্রমে ছাগল (Chagol) নামে লিপিবদ্ধ হয়েছিল। তাই ছাগল নাইয়া শব্দটি প্রচলিত হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য ইংরেজ আমলের পূর্বে কোন পুঁথি পত্রে ছাগল নাইয়া নামের কোন স্থানের নাম পাওয়া যায় না।[6]

ফেনী নদীর তীরে রঘুনন্দন পাহাড়ের পাদদেশে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বীর বাঙ্গালী শমসের গাজীর রাজধানী ছিল। তিনি এখান থেকে যুদ্ধাভিযানে গিয়ে রৌশনাবাদ ও ত্রিপুরা রাজ্য জয় করেন। তিনি চম্পক নগরের একাংশের নামকরণ করেছিলেন জগন্নাথ সোনাপুর।[6]

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি

ফেনীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিস্তম্ভ

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সাথে তিন দিক থেকে ফেনীর রয়েছে সীমান্ত।

১মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণার সাথে সাথে সারা দেশের মতো ফেনীও ফুঁসে ওঠে । বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চভাষণের পরপরই ফেনীতে শুরু হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণের কাজ। জননেতা খাজা আহমদ ও জননেতা মালেক সাহেবের নেতৃত্বে গঠিত হয় ২টি সংগ্রাম কমিটি । একটি আওয়ামী লীগ সংগ্রাম কমিটি ও অপরটি যুব ও ছাত্র সংগ্রাম কমিটি । ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে একটি সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয় যা পরবর্তীতে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির অন্তর্ভুক্ত হয়ে একত্রে কাজ করে । এরই ধারাবাহিকতায় জননেতা খাজা আহমদের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ সকাল থেকে ফেনীর পূর্বউকিল পাড়াসহ হাজী মনির উদ্দিন সওদাগর বাড়ির রফিকুল হকের বাসায় কর্মনির্ধারনী বৈঠকে ১১ জন সংগঠক পবিত্র কুরআন ছুঁয়ে স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজনে আত্মোৎসর্গের শপথ নেন । মূলত ঐদিন থেকেই শুরু হয় ফেনীর মুক্তযুদ্ধের পথচলা। যুব ও ছাত্র সংগ্রাম কমিটিতে ছিলেন জয়নাল হাজারী, জয়নালয় আবদীন(ভিপি জয়নাল), কমান্ডার মুর্তজা ভূঁইয়া, আব্দুল মোতালেব (কমান্ডার), জহির উদ্দিন বাবর, হাফেজ আহমদ, নূর মোহম্মদ হাজারী, জাফর উল­্যাহ খান, খোন্দকার মোজাম্মেল, মোহাম্মদ মুছা, কাজী নূরুন নবী সহ আরো কয়েক জন।

২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীঘুমন্ত বাংগালীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লে ২৬ মার্চ বিকেলে জননেতা খাজা আহমদ ও জননেতা মালেক সাহেবের নেতৃতেব বৈঠকে বসেন সংগঠকবৃন্দসহ অপরাপর নেতৃবৃন্দ। বৈঠকের সিদ্ধান্তানুযায়ী ফেনী পিটিআই'র মাঠে শুরু হয় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। ৩০ মার্চ সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ, সামরিক, আধা-সামরিকবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সৈনিক এবং যুব ও ছাত্রদের নিয়ে মিশ্রবাহিনী । তৎপূর্ব হতেই ৩০০ জনের একটি বাহিনী নিয়ে পিটিআই মাঠে শুরুহয় সামরিক প্রশিক্ষণ । প্রথম থেকে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন সুবেদার মেজর(অবঃ) আবু আহম্মদ (খাজুরিয়া ইব্রাহিম মৌলবী বাড়ি), ফ্লাইট সার্জেণ্ট (অবঃ) নূরুল ইসলাম(কালিদহ), সার্জেণ্ট সামছুল হক(ফরহাদ নগর), সুবেদার সিদ্দিকুর রহমান, ব্যাটেলিয়ান সামছু(উকিল পাড়া), ক্যাপ্টেন আবদুররৌফ(সোনাপুর) সহ আরো কয়েকজন ।

২৩ এপ্রিল সংগঠকগনসহ হাজার হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন জনতাসীমানা অতিক্রম করে বিলোনিয়া সহ ভারতের বিভিন্ন ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং ফেনীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এইসময় বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স - বি এল এফ (বিলোনিয়া ) প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নেন জননেতা আব্দুল মালেক ।

ফেনী সীমান্তে মুক্তিযুদ্ধের বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। এর মধ্যে শুভপুর ও বিলোনিয়া যুদ্ধ অন্যতম। তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতা ফেনী মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল মালেক (যুদ্ধকালীন সময়ে বি এল এফ এর প্রেসিডেন্ট) ও খাজা আহমদের নেতৃত্বে ফেনীর মুক্তিযোদ্ধারা দেরাদুন ও চোত্তাখোলায় প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন সাব-সেক্টর কমান্ডার জাফর ইমামের নেতৃত্বে বিলোনিয়া যুদ্ধ একটি অনন্য রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে।

৬ ডিসেম্বর ফেনী জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ফেনীকে মুক্ত করেন। প্রতি বছর ৬ ডিসেম্বর দিনটিকে ফেনী জেলাবাসী ফেনী মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করে।[8] মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য ফেনীর ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় খেতাব দেওয়া হয়। খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ৪ জন বীর উত্তম, ৭ জন বীর বিক্রম এবং ২০ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত হন।[9]

শিক্ষা ব্যবস্থা

ফেনী জেলার সাক্ষরতার হার ৫৯.৬০%। এ জেলায় রয়েছে:[10]

  • বিশ্ববিদ্যালয় : ১টি
  • ডিগ্রী কলেজ : ১১টি
  • উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ : ১০টি
  • ক্যাডেট কলেজ : ১টি (বালিকা)
  • কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : ৭টি
  • কম্পিউটার ইনস্টিটিউট : ১টি
  • মাদ্রাসা : ৯৭টি
  • মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ১৫৫টি
  • শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র : ১টি
  • নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ১৯টি
  • পিটিআই : ১টি
  • প্রাথমিক বিদ্যালয় : ৫২৮টি

অর্থনীতি

ফেনী জেলার অর্থনীতি

  শিল্প (৩৫%)
  কৃষি ও কৃষি সম্পর্কিত (২৩.৫৭%)
  অন্যান্য (১৪.০২%)

জেলার মানুষের প্রধান পেশা কৃষি ও প্রবাসী। এ জেলার অর্থনীতি কৃষি ২১%, অকৃষি শ্রমিক ২.৫৭%, শিল্প ৩৫%, ব্যবসা-বাণিজ্য ১৫.৯৮%, পরিবহন এবং যোগাযোগ ৪.৬৬%, নির্মাণ ১.৮%, ধর্মীয় সেবা ০.৪৩%, ভাড়া এবং রেমিট্যান্স ১১.৪৩% এবং অন্যান্য ১২.১৯%। এই জেলায় দুটি শিল্প এলাকা রয়েছে। মোট বৃহৎ শিল্পের সংখ্যা ৪টি তার মধ্যে একটি স্টার লাইন গ্রুপ, মাঝারি শিল্প ১৪টি, ক্ষুদ্র শিল্প ৮২৬টি এবং কুটির শিল্প ৩৪১৯। ফেনী সদর এলাকার ধালিয়া ইউনিয়নে একটি গ্যাসক্ষেত্র আছে‌। কৃষি জমির পরিমাণ ৭৫,৯২২ হেক্টর এবং আবাদি জমির পরিমাণ ৭৪,৭২০ হেক্টর।[11][12]

যোগাযোগ ব্যবস্থা

ফেনী জেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়ক। সব ধরনের যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়। এছাড়া এ জেলায় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাও রয়েছে।

স্বাস্থ্য

ফেনী জেলায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ১টি আধুনিক হাসপাতাল, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স, ৩১ শয্যা বিশিষ্ট ৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স, ১টি হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, ১টি ডায়াবেটিক হাসপাতাল, ১টি বক্ষ ব্যাধি ক্লিনিক, ১টি ট্রমা সেন্টার, ১টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, ১টি নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ১৯টি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৩৩টি ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং ১১৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে।[10]

নদ-নদী

ফেনী জেলার প্রধান প্রধান নদীগুলো হল ফেনী নদী, মুহুরী নদী, ছোট ফেনী নদী, কহুয়া নদী, সিলোনিয়া নদী এবং কালিদাস পাহালিয়া নদী[10]

দর্শনীয় স্থান

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্যগণ

আসন এমপির নাম রাজনৈতিক দল
ফেনী-১ শিরিন আক্তার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল
ফেনী-২ নিজাম উদ্দিন হাজারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
ফেনী-৩ মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী জা. পা.

সংবাদপত্র

  • সাপ্তাহিক ফেনীর তালাশ
  • দৈনিক অজেয় বাংলা
  • সাপ্তাহিক নবকিরন
  • পাক্ষিক পরশুরাম
  • সাপ্তাহিক স্বদেশ বার্তা
  • সাপ্তাহিক ফেনীর আলো
  • সাপ্তাহিক ফেনী বার্তা
  • সাপ্তাহিক নবীন বাংলা
  • দৈনিক আমাদের ফেনী
  • ফেনী প্রতিদিন
  • দৈনিক স্টার লাইন
  • দৈনিক ফেনীর সময়
  • দৈনিক নয়া পয়গাম

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Sultan, Tipu (২০১২)। "Feni District"Islam, Sirajul; Jamal, Ahmed A.। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (Second সংস্করণ)। Asiatic Society of Bangladesh
  2. http://bn.banglapedia.org/index.php?title=%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%80_%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE
  3. জমির আহমেদ। ফেনীর ইতিহাসচট্টগ্রাম: সমতট প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ১২।
  4. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  5. জমির আহমেদ। ফেনীর ইতিহাসচট্টগ্রাম: সমতট প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ১১।
  6. জমির আহমেদ। ফেনীর ইতিহাসচট্টগ্রাম: সমতট প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ১৩।
  7. ফেনীর ইতিহাস-জমির আহমেদ(সমতট প্রকাশনী, ৩২, কাতাল গঞ্জ ,চট্টগ্রাম) পৃষ্ঠা-১৩, লাইন-১৬
  8. "ফেনী মুক্ত দিবস আজ"দৈনিক প্রথম আলো। ৬ ডিসেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১৬, ২০১৫
  9. "ফেনীর খেতাবপ্রাপ্ত ৩১ বীর মুক্তিযোদ্ধা"দৈনিক ইত্তেফাক। ২৪ অক্টোবর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১৬, ২০১৫
  10. এক নজরে ফেনী ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে, জাতীয় তথ্য বাতায়ন
  11. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "ফেনী জেলা"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743
  12. "দর্শনীয় স্থান"। zpfeni.gov.bd। ২৪ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ৮, ২০১৫

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.