গ্যালিফর্মিস
গ্যালিফর্মিস (Galliformes) বড় আকারের ভারী ভূচর পাখিদের একটি বর্গ। মুরগি, টার্কি, মথুরা, তিতির, বাতাই, বটেরা, ময়ূর প্রভৃতি পাখিরা এ বর্গের অন্তর্ভুক্ত। গ্যালিফর্মিস নামটি ল্যাটিন গ্যালাস থেকে এসেছে যার অর্থ মুরগি। এ বর্গের একটা বড় অংশ শিকারযোগ্য পাখি। প্রায় ২৯০ প্রজাতির পাখি এ বর্গের অন্তর্ভুক্ত, যার মধ্যে দুই-একটি মরু ও মেরু অঞ্চল বাদে প্রায় সমগ্র পৃথিবীতেই দেখা যায়।[1] দ্বীপসমূহে এদের কমই দেখা যায়, বিশেষ করে মহাসাগরীয় দ্বীপগুলোতে এরা প্রায় নেই বললেই চলে। যদিও কিছু কিছু দ্বীপে এদের দেখা যায়, তাও মানুষের মাধ্যমে অবমুক্ত করা হয়েছে। বহু প্রজাতিকে গৃহপালিত পাখি হিসেবে মানুষ বহুকাল আগে থেকে লালন-পালন করে আসছে।
গ্যালিফর্মিস সময়গত পরিসীমা: ইওসিন-বর্তমান, ৪.৫–০কোটি | |
---|---|
![]() | |
নীল ময়ূর, (Pavo cristatus) | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী জগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
উপপর্ব: | মেরুদণ্ডী/ ভার্টিব্রাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী/এভিস |
মহাবর্গ: | গ্যালোয়ানসেরাই |
বর্গ: | গ্যালিফর্মিস টেমিঙ্ক, ১৮২০ |
মোট পাঁচটি গোত্র নিয়ে এ বর্গটি গঠিত। গোত্রগুলো হল:
- Phasianidae- বনমোরগ, বটেরা, তিতির, বাতাই, মথুরা, টার্কি ও গ্রুস
- Odontophoridae- নতুন বিশ্বের কোয়েল
- Numididae- গিনিফাউল
- Cracidae- চাকালাকা আর কুরাসো
- Megapodiidae- মলি মুরগি ও ব্রাশ টার্কিসহ অন্যান্য মেগাপড।
বাস্তুতন্ত্রে এ বর্গের পাখিরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বীজের বিস্তার আর পোকামাকড় দমনে এদের গুরুত্ব অপরিসীম। এদের মাংস আর ডিম মানুষের প্রোটিনের অভাব পুরনে বিরাট ভূমিকা রাখে। এছাড়া এদের শিকার করা পূর্ব-পশ্চিম সবখানেই একটি জনপ্রিয় বিনোদন। অনেক প্রজাতিই বেশ দ্রুত দৌড়াতে সক্ষম আর অধিকাংশ সময়ে শত্রুর তাড়া খেলে উড়ে না যেয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। তাই বলে এমন নয় যে এরা উড়তে পারে না। তবে একেবারে বিপদে না পড়লে এরা সচরাচর ওড়ে না। বেশিরভাগ প্রজাতির পুরুষেরা স্ত্রীদের তুলনায় বেশ রঙচঙে আর সুন্দর পালকে শোভিত। প্রজনন মৌসুমে পুরুষরা নেচেকুঁদে, নানা অঙ্গভঙ্গী করে আর ডাক ছেড়ে স্ত্রীর মনোরঞ্জনের চেষ্টা করে। এরা পরিযায়ী স্বভাবের নয়।
তথ্যসূত্র
- Francois Haverschmidt। "Galliform"। Encyclopaedia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৩।