কমলনগর উপজেলা

কমলনগর উপজেলা বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলার একটি একটি প্রশাসনিক এলাকা। লক্ষ্মীপুর জেলার পঞ্চম উপজেলা হিসেবে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৬ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এটি উদ্বোধন করেন।

কমলনগর
উপজেলা
কমলনগর
কমলনগর
বাংলাদেশে কমলনগর উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°৪২′ উত্তর ৯০°৫২′ পূর্ব
দেশবাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগ
জেলালক্ষ্মীপুর জেলা
আয়তন
  মোট৩১৫ বর্গকিমি (১২২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১৫)
  মোট২,৬৫,৯১৫[1]
সাক্ষরতার হার
  মোট২৭.৮৬%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
২০ ৫১ ৩৩
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

অবস্থান ও আয়তন

৩৬১ বর্গ মাইলের এই উপজেলাটি চট্টগ্রাম বিভাগের লক্ষ্মীপুর জেলায়। এ উপজেলার উত্তরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা, দক্ষিণে রামগতি উপজেলানোয়াখালী জেলার নোয়াখালী সদর উপজেলা, পূর্বে নোয়াখালী জেলার নোয়াখালী সদর উপজেলাসুবর্ণচর উপজেলা, পশ্চিমে মেঘনা নদীভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলা[2]

ইতিহাস ও নামকরণ

প্রাক্তন সংসদ সদস্য- (১৯৫৪ ও ১৯৮১ সাল) ভাষা সৈনিক মরহুম তোয়াহা ও তৎকালীন রামগতি হাতিয়ার সংসদ সদস্য মরহুম আবুল খায়ের রামগতিকে দুইটি থানা করার প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মরহুম কফিল উদ্দিন আহাম্মদ একটি প্রতিবেদন দেন। পরবর্তীতে প্রাক্তন বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মেজর (অবঃ) আঃমন্নান কর্তৃক এই প্রতিবেদন পুনরুপস্থাপনের কালক্রমে জনসাধারনের দাবির প্রেক্ষিতে মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব আশ্রাফ উদ্দিন নিজানের প্রচেষ্টায় জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির ৯৩ তম বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে গেজেট বিজ্ঞপ্তি নং-উপ-২/সি-১৫/২০০৫ /২৯৫ তারিখ- ৬/৬/২০০৬ অনুষ্ঠিত নিকার এর ৯৩তম বৈঠকে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার সাবেক ৫টি ইউনিয়ন যথা-চর কালকিনি,চর লরেঞ্চ ,চর ফলকন, চর জাঙ্গালিয়া,চর কাদিরা কে ভেঙ্গে নতুন ৯টি ইউনিয়ন সৃষ্টি করে কমলনগর নামে লক্ষ্মীপুর জেলায় আরেকটি নতুন প্রশাসনিক উপজেলা গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নতুন ৯টি ইউনিয়ন গুলো হচ্ছে চর কালকিনি, সাহেবের হাট, চর লরেঞ্চ, চর মাটিন, চরফলকন, পাটারীর হাট, হাজিরহাট, চর কাদিরা ও তোরাবগঞ্জ।

কমলনগর উপজেলার নাম কমলনগর হলেও এ উপজেলায় কমলনগর নামে কোন স্থানের নাম পূর্বে ছিল না। কমলনগর উপজেলাটি (চর মার্টিন) উপজেলা নাম হওয়ার কথা ছিলো, যেহেতু প্রেসিডেন্ট জিয়ার সময়কালে সর্বপ্রথম রামগতির উত্তরাঞ্চল নিয়ে পৃথক উপজেলা গঠনের চিন্তা করা হয় সেহেতু পরে বেগম খালেদা জিয়ার সময়কালে (২০০৬) এ নতুন উপজেলাটির নাম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছোটবেলার ডাক নাম “কমল” অনুসারে এ উপজেলার নাম করন করা হয় কমলনগর।[3]

প্রশাসনিক এলাকা

কমলনগর উপজেলায় বর্তমানে ৯টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম কমলনগর থানার আওতাধীন।

ইউনিয়নসমূহ:

[1]

জনসংখ্যার উপাত্ত

২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এখানকার লোকসংখ্যা ২,৬৫,০০০ জন ও প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ঘনত্ব ১,১৫০ জন।[4] শতকরা ৯৮.৮% মুসলিম,হিন্দু ০১.১% অন্যান্য ০০.১%

স্বাস্থ্য

  • সরকারী হাসপাতাল-০১টি
  • স্বাস্থ্য কেন্দ্র/ক্লিনিক-১৫টি

শিক্ষা

কলেজ (০৪) কলেজঃ-

  • হাজির হাট উপকূল সরকারি ডিগ্রী কলেজ।
 প্রতিষ্ঠাকালঃ- ১৯৯০
 প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষঃ জনাব আব্দুল 
 মোতালেব।
  • কমলনগর কলেজ।
  • ফজুমিয়ার হাট কলেজ।
  • তোরাবগজ্ঞ কলেজ।

মাদ্রাসাঃ- হাজির হাট হামেদিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৪৭ প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষঃ আল্লামা সায়েদ আহমেদ

প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ-

  • হাজির হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
  • চর পাগলা পাটোয়ারী পাড়া সরকারি প্রাথমিক
 বিদ্যালয়।
  • চর জাঙ্গালিয়া কে.হাট সরকারি প্রাথমিক
 বিদ্যালয।
  • তোরাবগজ্ঞ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

উচ্চ বিদ্যালয়ঃ-

  • জগবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়

(প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষকঃ মোঃ জসিম উদ্দিন ) স্থানঃ দেওয়ান মার্কেট , জাজিরা , চর জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন , কমলনগর , লক্ষ্মীপুর ।

  • চর লরেন্স উচ্চ বিদ্যালয়।
  • চর কালকিনি আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়
 প্রতিষ্ঠাকাল ২০০৫,
 প্রতিষ্ঠাতাঃ- মোঃ হাজী সেলিম।
 প্রতিষ্ঠা কালিন প্রধান শিক্ষক:- জনাব 
 মাহামুদুর রহমান বেলায়েত।
  • তোরাবগজ্ঞ উচ্চ বিদ্যালয়।
  • চর শামছুদ্দীন জাহেরিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা কমপ্লেক্স। প্রতিষ্ঠাতারিখ ১৯৭৫,

(প্রতিষ্ঠাতা: আবু সালেহ মুহাম্মদ নূর)

  • ৪নং মার্টিন আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

(স্থাপিত ২০১২) (প্রতিষ্ঠাতা:"৪নং মার্টিন ইউনিয়ন ছাত্রকল্যাণ সংগঠন)

  • উত্তর চর মার্টিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়(স্থাপিত ১৯৭০)

কৃষি

  • প্রধান শস্যঃ ধান,ডাল,সয়াবিন,মরিচ,আখ, কাঠবাদাম।
  • প্রধান ফলঃ আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, তাল, লেবু, নারিকেল, সুপারি, সারিফা, আমড়া, জাম।

অর্থনীতি

কমলনগরে প্রধান অর্থনীতি হলো কৃষি, এই অঞ্চলের শতকরা ৫১.৩৬% মানুষ কৃষিকাজে জীবিকা নির্বাহ করেন। এছাড়াও এই অঞ্চল নদীমাতৃক তাই মতিরহাট মেঘনা নদীতে মাছ ধরে কিছুকিছু জেলেরা তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন করেন।

অকৃষি শ্রমিক ৩.৯৫%, শিল্প ০.৪০% ব্যবসা ১১.০১%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৭.১৪%, চাকরি ৪.৬৯%, নির্মাণ ৪.২৮%, ধর্মীয় সেবা ১.৪৭%, রেন্ট এন্ড রেমিটেন্স ৬.৭১% এবং অন্যান্য ৮.৯৯%।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

  • বাস, সিএনজি, মোটরসাইকেল, লেগুনা, ব্যাটারি চলিত অটোরিকশা, রিকশা,সাইকেল ইত্যাদি।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি

  • মরহুম সিরাজুল ইসলাম সাবেক সংসদ সদস্য (নোয়াখালীর রাজনীতিবিদ)
  • মরহুম কমরেড তোয়াহা - ভাষা সৈনিক, রাজনীতিবিদ, সাবেক এমএলএ;
  • মরহুম সানা উল্লাহ নূরী - ভাষা সৈনিক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক;
  • মরহুম আবুল খায়ের -তৎকালীন রামগতি হাতিয়ার সংসদ সদস্য
  • জনাব মেজর (অবঃ) আবদুল মান্নান (সাবেক বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী
  • রাজনীতিবিদ শফিউলবারী বাবু)

সেচ্চাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি।

দর্শনীয় স্থান

  • মেঘনার পাড় মাতাব্বর হাটঃ মেঘনা নদীর পাড়। ঢাকা থেকে সানফ্লা্ওয়ারে করে এসে সরাসরি হাজির হাট নামতে হবে। বাজারের পশ্চিম পাশ থেকে সি এন জি বা রিকশা যোগে নদীর পাড়
  • মেঘনার পাড় মতিরহাট,মতিরহাট মাছঘাট :কমলনগর উপজেলা থেকে বাস যোগে তোরাবগঞ্জ বাজার নেমে সেখান থেকে সিএনজি যোগে মতির হাট মাছ বাজার যাওয়া যায়। কমলনগর উপজেলার মতির হাট বাজারের মাছ ঘাট। এখানে প্রতিদিন জেলেরা নদী থেকে নানা প্রজাতির মাছ ধরে এই ঘাটে এনে উন্মুক্ত ভাবে বিক্রি করে। প্রতিদিন হাজারো জেলের মিলন মেলা হয় এই মতির হাট মাছ ঘাটে বিরল প্রজাতীর মাছ পাওয়া এই ঘাটে। লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত হতে মানুষ এখানে মাছ ক্রয় করতে আসে। মতির হাট মাছ ঘাটের সুনাম শুধু লক্ষ্মীপুর জেলায় নায় বৃহত্তম নোয়াখালীতে রয়েছে। যাদের বেশি মাছের প্রয়োজন হয় তারাই চলে আসে স্বনাম ধণ্য এই মতির হাট মাছ ঘাটে। যে যার মতো করে চাহিদা অনুযায়ী নিয়ে যায় বিভিন্ন প্রকারের মাছ ক্রয় করে নিয়ে যায়
  • ভাষা সৈনিক কমরেড মোহাম্মদ তোয়াহার স্মৃতিসৌধ: ঢাকা থেকে সানফ্লা্ওয়ারে করে এসে সরাসরি হাজির হাট নামতে হবে। নামার পরে হাজির হাট বাজারের উত্তর পাশে তোয়াহা সাহেবের নামে একটি স্কুল আছে যার নাম তোয়াহা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। তার গেইট দিয়ে ঢুকলে হাতের ডান পাশে এটি অবস্থিত।উপজেলা কমপ্লেক্স থেকে রিক্সা/ মিনি বাস / সিএনজি হাজির হাট বাজারে অবস্থিত তোয়াহা স্মৃতি সৌধে যাওয়া যায়। কমরেড মোহাম্মদ তোয়াহা একজন ভাষা সৈনিক ছিলেন। তৎকালীন সময়ে তিনি রামগতি ও কমলনগরের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি রামগতি ওকমলনগরের মানুষের জন্য সব সময়ে নিববেদিত প্রাণ ছিলেন। তখনকার রামগতির দকGষি্ন অঞ্চল হলো বর্তমান কমলনগর তার নামে নাম করন করা হয় রামগতি টু লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক।

জনপ্রতিনিধি

সংসদীয় আসন জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[5] সংসদ সদস্য[6][7][8][9][10] রাজনৈতিক দল
২৭৭ লক্ষ্মীপুর-৪ কমলনগর উপজেলা এবং রামগতি উপজেলা আবদুল মান্নান বিকল্পধারা বাংলাদেশ

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে কমলনগর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৫
  2. "লক্ষ্মীপুর জেলার ইতিহাস"। ১৯৯০।
  3. "কমলনগর উপজেলার পটভূমি"। জেলা প্রশাসক লক্ষ্মীপুর। ২৭ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৪
  4. [আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ - বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।]
  5. "Election Commission Bangladesh - Home page"www.ecs.org.bd
  6. "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)ecs.gov.bdবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯
  7. "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮
  8. "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮
  9. "জয় পেলেন যারা"দৈনিক আমাদের সময়। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮
  10. "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.