আবাকা খান

হালাকু খান মৃত্যুর পর তাঁহার জ্যেষ্ঠ পুত্র আবাকা খান ১২৬৫ খ্রিস্টাব্দে পারস্যের ইলখানি সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি পিতার সুযোগ্য পুত্র ছিলেন। ঐতিহাসিকগণ তাঁহাকে সাহসী ও বিচক্ষণ নরপতি বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন। সিংহাসনে উপবেশন করিবার পর আবাকা খান অভ্যন্তরীণ শান্তি ও শৃঙ্ক্ষলা প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি সাম্রাজ্যের রাজধানী মারাঘা হইতে তাবরিজে স্থানান্তরিত করেন। আবাকা খান কে নানা প্রকার বহিঃশত্রুর মোকাবেলা করতে হয়। তাঁহার রাজত্বকালে কিপচাক সাম্রাজ্যের মোঙ্গলরা তাঁহার রাজ্য আক্রমণ করিলে তিনি উপর্যপুরি দুইবার তাহাদিগকে পরাজিত করেন। হালাকু খানের সময় গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়কে চরম আঘাত হানা হইলেও তাহাদের শক্তি সম্পূর্ণরুপে বিলুপ্ত হয় নাই। ১২৭১ খ্রিস্টাব্দে এই গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়ের সর্বশেষ ঘাঁটি গিরদ-কুহ আবাকা খানের নিকট আত্মসমর্পণ করেন। দীর্ঘ আঠারো বৎসর অবরোধের পর মোঙ্গল বাহিনীর হস্তে এই ঘাঁটির পতন হয়। যার ফলে এই সম্প্রদায় চিরতরে নিশ্চিহ্ন হইয়া যায়।

আবাকা খান গ্রিসসহ পূর্ব-ইউরোপীয় শক্তিগুলোর সহিত বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। কিন্ত মিশর ও সিরিয়া অভিযানে তিনি চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেন। মিশরের মামলুক সুলতান বাইবার্স আবাকা খানের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। সীমান্ত লইয়া বিরোধ দেখা দিলে ১২৭৭ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গলদের সহিত মামলুক বাহিনীর এক প্রচন্ড সংঘর্স হয়। এই সংঘর্সে আবাকা খান পরাজিত হন এবং এই পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য তিনি পরবর্তী বৎসর আবার সিরিয়া আক্রমণ করেন। কিন্তু এইবারও তিনি শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হন। সম্ভবত বারবার পরাজয়ের গ্লানি সহ্য করিতে না পারিয়া আবাকা খান ভগ্নোৎসাহ হইয়া পড়েন এবং ১২৮২ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুমুখে পতিত হন।

তথ্যসূত্র

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.