জহির খান

জহির খান (উর্দু: ظہیر خان, মারাঠি: झहीर खान; জন্ম: ৭ অক্টোবর, ১৯৭৮) মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলার শ্রীরামপুর শহরে ৭ অক্টোবর, ১৯৭৮ ইং তারিখে জন্মগ্রহণকারী জহির খান ২০০০ সাল থেকে ভারত জাতীয় ক্রিকেট দল বা টিম ইন্ডিয়ার অন্যতম সদস্য।

জহির খান
২০১১ সালে জহির খান
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম (1978-10-07) ৭ অক্টোবর ১৯৭৮
আহমেদনগর, মহারাষ্ট্র, ভারত
ডাকনামজাক, জিপ্পি এবং জাককি[1]
উচ্চতা ফুট ১ ইঞ্চি (১.৮৫ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি ব্যাটসম্যান
বোলিংয়ের ধরনবাহাতি ফাস্ট মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৩১)
১০ নভেম্বর ২০০০ বনাম বাংলাদেশ
শেষ টেস্ট২৬-৩০ ডিসেম্বর ২০১৩ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৩৩)
৩ অক্টোবর ২০০০ বনাম কেনিয়া
শেষ ওডিআই৪ আগস্ট ২০১২ বনাম শ্রীলঙ্কা
ওডিআই শার্ট নং৩৪
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ )
১ ডিসেম্বর ২০০৬ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টি২০আই২ অক্টোবর ২০১২ বনাম পাকিস্তান
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৯/০০–২০০৫/০৬বারোদা
২০০৪সারে
২০০৬ওয়ার্কচেচটাশ্যায়ার
২০০৬-বর্তমানমুম্বাই
২০০৮, ২০১১–বর্তমানরয়েল চ্যালেঞ্জার ব্যাঙ্গালোর
২০০৯–২০১০মুম্বাই ইন্ডিয়ানস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৮৯ ২০০ ১৬৪ ২৫৩
রানের সংখ্যা ১,১৭৫ ৭৯২ ২,৩৬১ ১০৪৭
ব্যাটিং গড় ১১.৯৮ ১২.০০ ১৩.৪৯ ১২.১৭
১০০/৫০ ০/৩ ০/০ ০/৫ ০/০
সর্বোচ্চ রান ৭৫ ৩৪* ৭৫ ৪৩
বল করেছে ১৭,৯৭৫ ১০,০৯৭ ৩২,৯০২ ১২,৭৪৫
উইকেট ৩০০ ২৮২ ৬৫৩ ৩৫৭
বোলিং গড় ৩২.৫৬ ২৯.৪৩ ২৭.৫৫ ২৯.০৭
ইনিংসে ৫ উইকেট ১০ ৩৪
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৭/৮৭ ৫/৪২ ৯/১৩৮ ৫/৪২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৯/– ৪৩/– ৪৬/– ৫৭/–
উৎস: ইএসপিএন ক্রিকইনফো, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৩

খেলোয়াড়ী জীবন

ভারতীয় বোলিং আক্রমণের পুরোধা হিসেবে জহির খান উইকেটের দু’পাশেই বলকে সুইয়িং করাতে পারেন এবং টেস্ট ক্রিকেটে একাদশ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে সর্বোচ্চ রান গড়ে বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী।

২০০০ আইসিসি নক আউট ট্রফি

২২ বছর বয়সে ২০০০ সালের শুরুতেই ভারতীয় পেস আক্রমণে নেতৃত্ব দেন তিনি। যুবরাজ সিং-এর সাথে নাইরোবীতে কেনিয়ার বিরুদ্ধে আইসিসি নকআউট ট্রফিতে এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন। টুর্নামেন্টের ৩য় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হন।

বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট

২০০০ সালে ঢাকায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটান।

২০০২ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি

এই টুর্নামেন্টে ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ও টুর্নামেন্টের ৪র্থ সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হন।

২০০৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ

বিশ্বকাপে ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ও টুর্নামেন্টের ৪র্থ সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হন।

ঘরোয়া টি২০ অভিষেক

২০০৬ সালে ইংল্যান্ডে ওরচেস্টারসায়ার এর হয়ে গ্লামারগানের বিরুদ্ধে ঘরোয়া টি২০ অভিষেক হয়। ওরচেস্টারসায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবে বাইরের দেশের ২য় খেলোয়াড় হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার নাথান ব্রাকানের স্থলাভিষিক্ত হন। ঐ ক্লাবের খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেক ম্যাচেই সমারসেটের বিরুদ্ধে ১০ উইকেট নিয়ে কৃতিত্বের দাবীদার হন। ২০০৬ সালের জুন ‍মাসে তিনি ১ম ইনিংসে এসেক্সের বিরুদ্ধে ১ম ৯ ব্যাটস্‌ম্যানকেই আউট (৯/১৩৮) করেন।

আন্তর্জাতিক টি২০ অভিষেক

২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক টি২০ অভিষেক হয়। এটি ভারতের টি২০ অভিষেক ম্যাচ।

অভ্যন্তরীণ ক্রিকেটে বারোদা’র পক্ষে নাম লেখালেও জহির খান ২০০৬-০৭ মৌসুমে মুম্বাইয়ের পক্ষে খেলেন। রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে তিনি বাংলা’র বিরুদ্ধে ৯ উইকেট লাভ করেন।

ভালো খেলার দরুন বোর্ড ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে অন্তর্ভুক্তি করে। তিনি ওয়াসিম আকরাম এবং চামিন্দা ভাসকে অনুসরণ করলেও তাদের মতো ততোটা সফলকাম হতে পারেননি। ২০০৮-০৯ মৌসুমে ব্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠিত ১ম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন। ঐ সিরিজে জহির খানের অল রাউণ্ড নৈপুণ্য পরিলক্ষিত হয়। তিনি ৩য় ভারতীয় খেলোয়াড় হিসেবে (রুসি সুরতী এবং কপিল দেবের পর) ইনিংসে অর্ধ-শতক ও ৫ উইকেট নেন। এরপর থেকেই তিনি ভারতীয় দলের নিয়মিত ও অপরিহার্য্ বোলার হিসেবে খেলে চলছেন। এছাড়াও, তিনি টি-২০ বিশ্বকাপ, ২০০৯-এ আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট লাভ করেন ও ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার লাভ করেন।

২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ

বিশ্বকাপে টুর্নামেন্টের যুগ্ম সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হন।

অন্তিম আন্তর্জাতিক

৩৬ বছর বয়সে ২০১২ থেকে ২০১৪ সালে ফর্মের দ্রুত পতন ঘটে। ২০১৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ক্রিস্টচার্চ এ অন্তিম টেস্ট তথা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন।

টেস্ট ক্রিকেটে

জহির খান উইকেট পিছু ৩৩ রান দিয়ে ২৫০টি টেস্ট উইকেট নেন। ২০০২-২০০৩ মৌসুমের নিজের স্বর্ণালী সময়ে তিনি ১৬ খেলায় ৩০ রান গড়ে ৫৪ উইকেট দখল করেন। ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত ১ম টেস্টের ১ম ইনিংসে তিনি ১ম ৭ অস্ট্রেলীয় ব্যাটস্‌ম্যানের ৫ জনকেই আউট করেন (৫/৯৫)। ২য় ইনিংসের শুরুতেই আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় খেলা থেকে বিরত থাকেন। এডিলেডে ২য় টেস্টে খেলতে না পারলেও মেলবোর্ণে অনুষ্ঠিত ৩য় টেস্টে পুনরায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হন। ফলে ২০০৪ সালে পাকিস্তান সফরে ভারতের ১ম সিরিজ বিজয়ে অংশ নিতে পারেননি তিনি।

আইসিসি রাংকিংয়ে অবস্থান

দু’দিকেই সুইয়িংয়ের মাধ্যমে উইকেট লাভে দক্ষ জহির খান জানুয়ারি ৪, ২০১১ পর্যন্ত ৪র্থ স্থানে অবস্থান করছেন।[2]

৭৫ রান করে বিশ্বরেকর্ড(!)

১১নং ব্যাটস্‌ম্যান হিসেবে জহির খান ৭৫ রান করে বিশ্বরেকর্ড করেন। ২০০৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিনি এ রেকর্ড গড়েন। এছাড়াও, শচীন তেণ্ডুলকারের সাথে ১৩৩ রানের পার্টনারশীপ গড়ে ১০ম উইকেট জুটিতে ভারতীয় রেকর্ড গড়েন। ১০নং অবস্থানে থেকে ১৯.৪৬ রানের গড়ও একদিবসীয় ক্রিকেটে সর্বোচ্চ গড়।[3]

উইকেট শিকারে মাইলফলক

জহির খান ৩ জানুয়ারী, ২০১১ পর্যন্ত দ. আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ৩য় টেস্টের ১ম ইনিংসে জ্যাক ক্যালিসকে কট আউটের মাধ্যমে ২৭০টি উইকেট লাভ করেন। তন্মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বেন হিলেফেনাসকে ইয়র্কারের সাহায্যে বোল্ড করে ২৫০তম টেস্ট উইকেট অর্জন করেন। এতগুলো উইকেট শিকার করে তিনি ৫ম ভারতীয় বোলারের খাতায় নাম লেখান।

উইকেট আউট করার বিবরণ তারিখ টেস্ট ম্যাচ নং
১ম মেহরাব হোসেন, বাংলাদেশকে কটআউটের মাধ্যমে ১০ নভেম্বর, ২০০০ ১৫১২
৫০তম কী, ইংল্যান্ড কটআউটের মাধ্যমে ২২ আগস্ট, ২০০২ ১৬১৩
১০০তম মঞ্জুরুল ইসলাম রানা, বাংলাদেশকে এলবিডব্লিউ করে ১৭ ডিসেম্বর, ২০০৪ ১৭২৭
১৫০তম মাইকেল ভন, ইংল্যান্ডকে কটআউটের মাধ্যমে ২৭ জুলাই, ২০০৭ ১৮৪১
২০০তম ম্যাকিন্টোস, নিউজিল্যান্ডকে কটআউটের মাধ্যমে ১৮ মার্চ, ২০০৯ ১৯১৫
২৫০তম বেন হিলফেনহস, অস্ট্রেলিয়াকে বোল্ড করে ১ অক্টোবর, ২০১০ ১৯৭২

একদিনের ক্রিকেটে

জহির খান ২৯ রান গড়ে ৩১৮টি উইকেট দখল করেন। জাভাগাল শ্রীনাথ এবং আশীষ নেহরা’র সাথে তিনিও বিশ্বকাপ ক্রিকেট, ২০০৩-এ ভারত ক্রিকেট দলকে ফাইনালে উঠাতে সাহায্য করেন। ১১ খেলায় ২০ রান গড়ে ১৮ উইকেট নিয়ে তিনি ৪র্থ সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেন।[4]

তথ্যসূত্র

  1. Cricinfo Magazine
  2. http://www.espncricinfo.com/rankings/content/page/211270.html
  3. "http://content-aus.cricinfo.com/ci/content/story/221606.html". Content-aus.cricinfo.com. http://content-aus.cricinfo.com/ci/content/story/221606.html. Retrieved 2010-12-20.
  4. ICC Cricket World Cup, 2002/03 Bowling - Most Wickets". Cricinfo.com. 2008-06-17. http://www.cricinfo.com/link_to_database/ARCHIVE/WORLD_CUPS/WC2003/STATS/WC2003_ODI_BOWL_MOST_WKTS.html. Retrieved 2010-12-20.

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.