সুইডেন
সুইডেন (সুয়েডীয়: Sverige স্ভেরিয়ে) ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম স্টকহোম৷ সুয়েডীয় সুইডেনের রাষ্ট্রভাষা৷ রাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বদিকে রয়েছে ফিনল্যান্ড, পশ্চিমদিকে নরওয়ে ও দক্ষিণ-পশ্চিমদিকে ওরেসুন্দ সেতু (Øresundsbron ও্যরেসুন্দ্স্ব্রুন্), যেটা দিয়ে ডেনমার্ক যাওয়া যায়। সুইডেন স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশেগুলোর বৃহত্তম রাষ্ট্র।
সুইডীয় রাজতন্ত্র | |
---|---|
পতাকা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
| |
রাজকীয় সঙ্গীত: কুংসসোঙ্গেন রাজার সঙ্গীত | |
রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি | স্টকহোম |
সরকারি ভাষা | সুয়েডীয় ভাষা |
নৃগোষ্ঠী | কোনও তথ্যপঞ্জি নেই[d] |
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | সুয়েডিয়, সুইডিশ |
সরকার | সাংবিধানিক রাজতন্ত্র |
কার্ল XVI গুস্তাফ | |
উলফ ক্রিস্টারসন | |
• রিকসডাগের অধ্যক্ষ | আন্দ্রেয়াস নরলেন (মডারেট পার্টি) |
আইন-সভা | রিকসডাগ |
প্রতিষ্ঠিত | |
• সুইডেন রাজ্য গঠন
(ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্য একত্রিত হয় এক রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়) | ৯৭০ সাল |
• কলমনার ইউনিয়ন গঠন | ২৯ জুলাই ১৩৮০ |
• কলমনার ইউনিয়ন ভাঙ্গন।
ফিংলান্ড-ক্যারোলিন রাজ্য দখল করে সুইডেন সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা। কলমনার ইউনিয়নের বাকি অংশ আইসল্যান্ড রাজ্য দখল করে ডেনমার্ক-নরওয়ে রাষ্ট্র গঠন করা। | ২৩ আগস্ট ১৫২১ |
• গ্রেট নর্দান যুদ্ধে সুইডেন সম্রাজ্যের ফিনল্যান্ড ক্যারোলিন রুশ সম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হওয়া।
ডেনমার্ক নরওয়ে ভাঙ্গন এবং ডেনমার্কের স্বাধীনতা লাভ। ডেনমার্ক-নরওয়ের বাকি অংশ এবং সুইডেন সম্রাজ্যের বাকি অংশ নিয়ে সুইডেন-নরওয়ে রাষ্ট্র গঠন করা। | ১০ অক্টোবর ১৮১৪ |
• সুইডেন-নরওয়ে রাষ্ট্র ভাঙ্গন এবং সুইডেন ও নরওয়ে এর স্বাধীনতা | ২৬ অক্টোবর ১৯০৫ |
আয়তন | |
• মোট | ৪,৪৯,৯৬৪ কিমি২ (১,৭৩,৭৩২ মা২) (৫৭তম) |
• পানি/জল (%) | ৮.৭ |
জনসংখ্যা | |
• ২০১২ আদমশুমারি | ৯৫,৫৫,৮৯৩[1] |
• ঘনত্ব | ২০.৬ /কিমি২ (৫৩.৪ /বর্গমাইল) (১৯৫তম) |
জিডিপি (পিপিপি) | ২০১৩ আনুমানিক |
• মোট | $৩৯৩.৭৭৪ বিলিয়ন[2] (৩৪তম) |
• মাথাপিছু | $৪০,৮৭০[2] (১৪তম) |
জিডিপি (মনোনীত) | ২০১৩ আনুমানিক |
• মোট | ৫৫২.০৪২ বিলিয়ন [2] (২১তম) |
• মাথাপিছু | $৫৭,২৯৭[2] (৭তম) |
জিনি (২০১১) | ২৪.৪[3] নিম্ন |
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৩) | ০.৯১৬[4] অতি উচ্চ · ৮তম |
মুদ্রা | সুইডিশ ক্রোনা (SEK) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+১ (সিইটি) |
ইউটিসি+২ (মধ্য ইউরোপীয় গ্রীষ্মকালীন সময়) | |
তারিখ বিন্যাস | বছর-মাস-দিন |
গাড়ী চালনার দিক | ডান[e] |
কলিং কোড | ৪৬ |
ইন্টারনেট টিএলডি | .se[f] |
|
সুইডেনের আয়তন ৪,৫০,২৯৫ বর্গকিলোমিটার (১৭৩,৮৬০ বর্গ মাইল)। এটি ইউরোপের তৃতীয় সর্ববৃহৎ দেশ। মাত্র ৯৫ লক্ষ জনসংখ্যা নিয়ে সুইডেন ইউরোপের অন্যতম কম জনসংখ্যার ঘনত্বপূর্ণ অঞ্চল।[1] প্রতি বর্গ কিলোমিটারে মাত্র ২১ জন মানুষ বসবাস করে। সুইডেনের জনসংখ্যার প্রায় ৮৫% শহরকেন্দ্রিক এবং দেশের দক্ষিণপ্রান্তে অবস্থিত শহরসমূহে বসবাস করে। সুইডেনের সর্ববৃহৎ শহর এবং রাজধানী হল স্টকহোম। ঊনবিংশ শতক থেকেই সুইডেন একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে নিজের অবস্থান বজায় রেখেছে এবং কোন প্রকার যুদ্ধে জড়ানো থেকে বিরত থেকেছে।
রাজনীতি
সুইডেন একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফ রাষ্ট্রপ্রধান। তবে বহুদিন ধরেই রাজার ক্ষমতা কেবল আনুষ্ঠানিক কাজ-কর্মেই সীমাবদ্ধ।[10] ইকনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট তাদের গণতন্ত্র সূচকে সুইডেনকে ১৬৭টি দেশের মধ্যে সবার উপরে রেখেছে।[11] সুইডেনের আইনসভার নাম রিক্সদাগ, যার সদস্যসংখ্যা ৩৪৯। আইনসভার সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করেন। প্রতি চার বছর অন্তর সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় রবিবারে আইনসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স ২০০৭ সালে প্রকাশিত বিশ্ব সাংবাদিক স্বাধীনতা সূচকে সুইডেনকে ১৬৯টি দেশের মধ্যে ৫ম স্থান দেয়।
ভূগোল
'ভেনিস অব দ্য নর্থ' বলা হয় সুইডেনের স্টকহোমকে। ইউরোপের স'মিল বলা হয় সুইডেনকে। পৃথিবীর প্রথম কল্যাণমূলক রাষ্ট্র সুইডেন।
জনসংখ্যা
সুইডেনের মোট জনসংখ্যা ৯,৪১৫,২৯৫ (২০১১ জনগণণা অনুসারে) এবং জনঘনত্ব ২০.৬ জন প্রতি বর্গকিলোমিটারে (অর্থাৎ ৫৩.৮ জন প্রতি বর্গমাইলে)।
বৃহত্তম শহরগুলি
- স্টকহোম
- গোথেনবার্গ
- মালমো
সংস্কৃতি
ছবি: জাতীয় জাদুঘর,সুইডেন
সুইডেনে অগাস্ট স্ট্রিন্ডবার্গ, অ্যাস্ট্রিড লিন্ডগ্রেন এবং নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সেলমা লেগারলফ এবং হ্যারি মার্টিনসন সহ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতির অনেক লেখক রয়েছে। সাহিত্যে মোট সাতটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছে সুইডিশরা। দেশের সবচেয়ে সুপরিচিত শিল্পী হলেন চিত্রশিল্পী যেমন কার্ল লারসন এবং অ্যান্ডার্স জর্ন এবং ভাস্কর টোবিয়াস সার্গেল এবং কার্ল মিলস।
সুইডিশ ২০ শতকের সংস্কৃতি সিনেমার প্রথম দিকের অগ্রণী কাজের দ্বারা উল্লেখ করা হয়েছে, মরিটজ স্টিলার এবং ভিক্টর সজোস্ট্রোম। ১৯২০-১৯৮০-এর দশকে, চলচ্চিত্র নির্মাতা ইংমার বার্গম্যান এবং অভিনেতা গ্রেটা গার্বো এবং ইনগ্রিড বার্গম্যান সিনেমার মধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে বিখ্যাত ব্যক্তি হয়ে ওঠেন।
অতি সম্প্রতি, লুকাস মুডিসন, ল্যাসে হলস্ট্রোম এবং রুবেন ওস্টলন্ডের চলচ্চিত্রগুলি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।
১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশক জুড়ে, সুইডেনকে একটি আন্তর্জাতিক নেতা হিসাবে দেখা হয়েছিল যা এখন "যৌন বিপ্লব" হিসাবে পরিচিত, বর্তমানে লিঙ্গ সমতা বিশেষভাবে উন্নীত হয়েছে।
প্রথম দিকের সুইডিশ ফিল্ম আই অ্যাম কিউরিয়াস (ইয়েলো) (১৯৬৭) যৌনতার একটি উদার দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করেছিল, যার মধ্যে প্রেম তৈরির দৃশ্যগুলি আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল এবং "সুইডিশ পাপ" ধারণাটি চালু করেছিল যা ইংমারের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আগে চালু হয়েছিল। মনিকার সাথে বার্গম্যানের সামার।
"গরম প্রেম এবং ঠান্ডা মানুষ" এর চিত্র ফুটে উঠেছে। যৌন উদারতাবাদকে আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে দেখা হয়েছিল যে ঐতিহ্যগত সীমানা ভেঙ্গে প্রাকৃতিক শক্তি এবং আকাঙ্ক্ষার মুক্তির দিকে পরিচালিত করবে।
সুইডেনও সমকামিতার প্রতি খুব উদার হয়ে উঠেছে, যেমনটি শো মি লাভের মতো চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় গ্রহণযোগ্যতায় প্রতিফলিত হয়, যেটি ছোট সুইডিশ শহরে আমালের দুই তরুণ লেসবিয়ানের। ১মে ২০০৯ সাল থেকে, সুইডেন তার "নিবন্ধিত অংশীদারিত্ব" আইন বাতিল করে এবং সম্পূর্ণরূপে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ বিবাহের সাথে প্রতিস্থাপিত করে। সুইডেন সমকামী এবং বিপরীত লিঙ্গের দম্পতি উভয়ের জন্য ঘরোয়া অংশীদারিত্বও অফার করে।
কিশোর ও বয়স্ক দম্পতি সহ সকল বয়সের দম্পতিদের সহবাস (সম্মানবোন্ডে) ব্যাপক। ২০০৯ সাল পর্যন্ত, সুইডেন একটি শিশু বুম সম্মুখীন হয়।
তথ্যসূত্র
- "Population Statistics"। Statistics Sweden। ২৩ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৩।
- "Sweden"। International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৩।
- "Gini coefficient of equivalised disposable income (source: SILC)"। Eurostat Data Explorer। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১৩।
- "Human Development Report 2013" (পিডিএফ)। United Nations। ২০১৩। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১৩।
- "Är svenskan också officiellt språk i Sverige?" (Swedish ভাষায়)। Språkrådet (Language Council of Sweden)। ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০০৮।
- "Summary of Population Statistics 1960–2012"। Statistics Sweden। ১২ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩।
- Note that Swedish-speaking Finns or other Swedish-speakers born outside Sweden might identify as Swedish despite being born abroad. Moreover, people born in Sweden may not be ethnic Swedes. As the Swedish government does not base any statistics on ethnicity, there are no exact numbers on the ethnic background of migrants and their descendants in Sweden. This is not, however, to be confused with migrants' national backgrounds, which are recorded.
- "Sweden in Brief/A Political Society"। Sweden.se। ২০০৭-০৩-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০২-১৪।
- "Economist Intelligence Unit democracy index 2006" (PDF) (English ভাষায়)। Economist Intelligence Unit। ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১০-০৯।
বহিঃসংযোগ
সুইডেনের প্রদেশসমূহ | |
---|---|
প্রদেশ | লাপলান্দ • নরবত্তেন • ইয়েম্ৎলান্দ • ভেস্তেরবত্তেন • অঙেরমানলান্দ • হ্যারিয়েদালেন • মেদেলপাদ • হেল্সিংলান্দ • দালারনা • ইয়েস্ত্রিকলান্দ • ভ্যার্মলান্দ • ভেস্তমানলান্দ • উপলান্দ • দাল্সলান্দ • ন্যার্কে • সোদারমানলান্দ • বুহুসল্যান • ভেস্তেরিয়োৎলান্দ • ওস্তেরিয়োৎলান্দ • হাল্লান্দ • স্মলান্দ • ওলান্দ • স্কনে • ব্লেকিঙে • গৎলান্দ |