মুরলী বিজয়

মুরলী বিজয় কৃষ্ণ (তামিল: முரளி விஜய்; জন্ম: ১ এপ্রিল, ১৯৮৪) একজন ভারতীয় ক্রিকেটার। তিনি হলেন ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিল নাড়ু এবং চেন্নাই সুপার কিংস এর এবং দলের প্রয়োজনে অফব্রেক বলও করে থাকেন।

মুরলী বিজয়
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমুরলী বিজয় কৃষ্ণ
জন্ম (1984-04-01) ১ এপ্রিল ১৯৮৪
চেন্নাই, তামিলনাড়ু, ভারত
উচ্চতা ফুট ১ ইঞ্চি (১.৮৫ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি ব্যাটসম্যান
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৬০)
৬ নভেম্বর ২০০৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২৬-৩০ ডিসেম্বর ২০১৩ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৮১)
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ ওডিআই৯ জুলাই ২০১৩ বনাম শ্রীলঙ্কা
ওডিআই শার্ট নং২৬
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ২৭)
১ মে ২০১০ বনাম আফগানিস্তান
শেষ টি২০আই৯ জানুয়ারী ২০১১ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৫– বর্তমানতামিল নাড়ু
২০০৯– বর্তমানচেন্নাই সুপার কিংস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ১৯ ১৪ ৭২ ৫৩
রানের সংখ্যা ১১৫৩ ২৫৩ ৫,১৭১ ২,২৫১
ব্যাটিং গড় ৩৭.১৯ ১৯.৪৬ ৪৫.৭৬ ৪৩.২৮
১০০/৫০ ৩/৩ ০/০ ১৩/১৮ ৭/৮
সর্বোচ্চ রান ১৬৭ ৩৩ ২৬৬ ১৫৫
বল করেছে ৩৪২ ২০৯
উইকেট
বোলিং গড় ৭৪.৬৬ ২৬.২৮
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/৮ ৩/১৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৮/– ৬/– ৬১/– ২৮/–
উৎস: ইএসপিএন ক্রিকইনফো, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৩

টেস্ট ক্যারিয়ার

২০০৮ সালে বিজয়ের অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নাগপুরে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়। গৌতম গাম্ভীরের জায়গায় দিল্লীতে তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গৌতম গম্ভীর কনুই দিয়ে শেন ওয়াটসনকে ধাক্কা দেওয়ার কারণে তাকে ১ ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়।[1][2] একই সময়ে বিজয় রঞ্জি ট্রফিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং তার সিরিজের শেষ টেস্টে তার অভিষেক হয়।[3] সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক এলান বর্ডার বিজয়ের ফ্রন্টফুট এবং ব্যাকফুট খেলার প্রশংসা করেন।[4]

তাঁর প্রথম খেলা থেকেই বিজয় প্রমাণ দেওয়া শুরু করেন কেন তিনি ভারতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি বীরেন্দ্র শেওয়াগ এর সাথে উভয় ইনিংসেই ভারতকে শক্তিশালী শুরু করেন। তিনি যথাক্রমে ৩৩ ও ৪১ রান করেছিলেন এবং ৯৮ ও ১১6 রানের উদ্বোধনী রানের অবদান রেখেছিলেন। তিনি তাঁর সক্ষমতা ফিল্ডিংও প্রমাণ দেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের সময় বিজয় প্রথম উইকেটটি পতন ঘটিয়েছিলেন, ম্যাথু হেইডেনকে মিডআউট থেকে সরাসরি নিক্ষেপ করে আউট করেছিলেন। হেডেন দ্রুত রান নেওয়ার চেষ্টা করছিল। তারপরে তিনি সিলি পয়েন্টে ফিল্ডিং করার সময় মাইকেল হাসিকে রান আউট করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি হরভজন সিং এর বোলিং-এ ব্রেট লিকে ব্যাট প্যাডে ক্যাচ ধরে তাঁর জীবনের প্রথম টেস্ট ক্রিকেটের ক্যাচটি ধরেন।[5]

টেস্ট ক্রিকেটের তাঁর ভালো খেলার ফলে, ভারতে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে প্রথম তিনটি ম্যাচের জন্য বিজয় ভারতীয় ওয়ান ডে দলে নির্বাচিত করা হয়েছিল। যদিও তিনি একটিও ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি এবং ভারতের সিনিয়র ব্যাটসম্যান শচীন তেন্ডুলকর দলে ফিরে আসার পর তিনি ভারতীয় ওয়ান ডে দলে থেকে বাদ পড়েছিলেন।[6]

২০০৯ সালের ডিসেম্বরে, বিজয়কে টেস্ট দলে আরও একটি সুযোগ গৌতম গম্ভীরের হাত ধরে এসেছিল, গৌতম গম্ভীরর তাঁর বোনের বিয়েতে যোগ দেওয়ার জন্য মুম্বাইয়ের ব্র্যাবর্ন স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয় এবং শেষ টেস্ট থেকে অংশগ্রহণ না করায় বিজয় ভারতীয় টেস্ট দলে খেলেছিলেন।[7] শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসে হরভজন সিং এর বোলিং-এ ব্যাট প্যাডে দু-দুটি ক্যাচ নিয়েছিলেন। ভারত যখন জবাব দেয়, বীরেন্দ্র শেওয়াগ এর সাথে প্রথম উইকেটে তাঁরা ২২১ রান যোগ দেন, তবে বিজয় তাঁর প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির থেকে মাত্র ১৩ রান কম করে থেমে যান, তিনি ৮৭ রানে আউট হয়ে যান। ভারত এক ইনিংসে জয়লাভ করে এবং বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দলের শিরোপা অর্জন করেছিল।[8][9]

২০১০ সালের জানুয়ারিতে, বিজয় আর একটি সুযোগ পান, প্রথম টেস্টে ভি ভি এস লক্ষ্মণ আঙুলের আঘাতের পরে তিনি রিজার্ভ ব্যাটসম্যান হিসাবে বাংলাদেশ সফরে ডাক পেয়েছিলেন। মিরপুরে, দ্বিতীয় টেস্টে তিনি লক্ষ্মণের ৫ নম্বরে স্থানে ব্যাট করে ৩০ রান করেছিলেন। হঠাৎ সেই ম্যাচে রাহুল দ্রাবিড় একটি বাউন্সার বলে আঘাত পান এবং ভারতের হোম সিরিজ, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের জন্য বিজয়কে সুযোগ দেওয়া হয় রাহুল দ্রাবিড় ৩ নম্বরে স্থানে ব্যাট করার জন্য।[10][11][12]

২০১০ সালের অগাস্টে, বিজয়ের কাছে আসে আরও দুটি সুযোগ, শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজ এবং অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোম সিরিজের রিজার্ভ ওপেনার হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। গৌতম গম্ভীর গুরুতর আহত হওয়ার পরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় টেস্টে তিনি খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। আবার যখন গৌতম গম্ভীর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে চোট পেয়েছিলেন এবং দ্বিতীয় টেস্টের বাইরে ছিলেন, বিজয় আরও একটি সুযোগ পান। প্রথম ইনিংসে শচীন তেন্ডুলকররের সাথে ট্রিপল সেঞ্চুরির অংশীদারী করে, বিজয় ১৩৯ রান করেন এবং তিনি তাঁর প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেন। বিজয় এবং প্রথম টেস্টে ম্যাচে খেলতে আসা চেতেশ্বর পুজারা গুরুত্বপূর্ণ জুটি ৭২ রানের অবদান ভারতকে ২-০ সিরিজ জয় করতে সহায়তা করেছিল।

একদিনের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার

বিজয় একদিনের আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটে ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজের শেষ ম্যাচে। তিনি ১৬ বলে ২৫ রান করেন।[13]

আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্যারিয়ার

বিজয়কে ২০১০ সালে আইসিসি বিশ্বকাপ টি-২০ দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্ত তার সবগুলো ম্যাচ চরম ব্যাটিং ব্যর্থতার পরিচয় দেন যাতে তার এভারেজ ১৫ এর নিচে ছিল।

আইপিএল ক্যারিয়ার

মুরলী বিজয় আইপিএল চেন্নাই সুপার কিংস এর হয়ে খেলে থাকেন এবং তিনি হলেন দলের অন্যতম একজন খেলোয়াড়। আইপিএলের চতুর্থ আসরে তিনি সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিতন হন।[14] তিনি মাত্র ৫২ বলে ৯৫ রান করেন ৪টি চার এবং ৬টি ছক্কা মারেন যাতে ১৮৩ স্টাইক রেট।[15] ২০১২ সালের আসরে বিজয় ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগছিলেন এবং প্রথম দিকের খেলায় তাকে দলে রাখা হয়নি। কিন্তু তার ভাগ্যে খুলে যায় এবং তাকে পুনরায় দলে ফিরে ৫৯ ১১৯ রান করেন। বিজয় হলেন আইপিএল এর একমাত্র খেলোয়াড় যিনি দুইটি শতক করেন।[16]

আইপিএল মৌসুম

বিজয়ের আইপিএল ব্যাটিং পরিসংখ্যান
বছরদলম্যাচরানসর্ব্বোচ্চএভারেজস্ট্রাইক১০০৫০৪ (চার)৬ (ছক্কা)
২০০৯চেন্নাই সুপার কিংস[17][18][19][20]৬০৩১১৫.০০৮৯.৫৫
২০১০১৫৪৫৮১২৭৩৫.২৩১৫৬.৮৪৩৬২৬
২০১১১৬৪৩৪৯৫২৭.১২১২৮.০২৩৪২০
২০১২১৪৩৩৬১১৩২৫.৮৪১২৫.৮৪৩৯১০
২০০৯–২০১২ সর্বমোট[21]৪৯১২৮৮১২৭২৮.০০১৩৩.৪৭১১৩৫৮
২০১২ সালে বিজয় তামিল নাড়ুর হয়ে খেলছেন
২০১২ সালে বিজয় তামিল নাড়ুর হয়ে খেলছেন

আন্তর্জাতিক শতক

টেস্ট শতক
মুরলী বিজয়ের টেস্ট শতক
নংস্কোরম্যাচবলচারছয়বিরুদ্ধেমাঠবছরফলাফল
১৩৯৩১০১৪ অস্ট্রেলিয়াএম. চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম, ব্যাঙ্গালোর, ভারত২০১০ভারত ৭ উইকেটে জয়ী[22]
১৬৭১৪৩৬১২৩ অস্ট্রেলিয়ারাজীব গান্ধি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, হায়দ্রাবাদ, ভারত২০১৩ভারত জয়ী এক ইনিংস এবং ১৩৫ রান।[23]
১৫৩১৫৩১৭১৯ অস্ট্রেলিয়াপাঞ্জাব ক্রিকেট এসোসিয়েশন স্টেডিয়াম, মোহালি, ভারত২০১৩ভারত ৬ উইকেটে জয়ী।[23]

বহিঃসংযোগ

তথ্যসূত্র

  1. "Top marks for the openers | Cricket Features | India v Australia 2008–09 | ESPN Cricinfo"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  2. "Sutherland urges India to use power wisely | Cricket News | India v Australia 2008–09 | ESPN Cricinfo"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  3. "Ranji Trophy Super League, 2008/09"www.ESPNCricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১২
  4. "4th Test: India v Australia at Nagpur, Nov 6–10, 2008 | Cricket Commentary | ESPN Cricinfo"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  5. "4th Test: India v Australia at Nagpur, Nov 6–10, 2008 | Cricket Scorecard | ESPN Cricinfo"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  6. "Tendulkar, Irfan return to ODI squad : Cricketnext"। Cricketnext.in.com। ২১ নভেম্বর ২০০৮। ২০১২-০৩-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  7. "Gautam Gambhir's absence the talking point | Cricket News | India v Sri Lanka 2009/10 | ESPN Cricinfo"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  8. "India go top with thumping victory | India v Sri Lanka, 3rd Test, Mumbai, 5th day Report | Cricket News | ESPN Cricinfo"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  9. 3rd Test: India v Sri Lanka at Mumbai (BS), Dec 2-6, 2009 | Cricket Scorecard | ESPN Cricinfo. Cricinfo.com. Retrieved on 2013-12-23.
  10. "Batting records | Test matches | Cricinfo Statsguru | ESPN Cricinfo"। Stats.cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  11. "Batting the key for Bangladesh revival in Dhaka Test | Cricket News | Bangladesh v India 2009/10 | ESPN Cricinfo"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  12. "India v South Africa: The battle for No. 1 begins | Cricket News | India v South Africa 2009/10 | ESPN Cricinfo"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  13. Batting records | One-Day Internationals | Cricinfo Statsguru | ESPN Cricinfo. Stats.cricinfo.com. Retrieved on 2013-12-23.
  14. "IPL 2011: Who wins what | News | NDTVSports.com"। Sports.ndtv.com। ২৯ মে ২০১১। ২০১১-০৫-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  15. "Cricket - Scorecard | NDTVSports.com"। Sports.ndtv.com। ২০১২-০৩-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬
  16. "Second Qualifier M Vijay hits fastest ton of IPL5"। Hindustan times। ২৮ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৪
  17. "Indian Premier League, 2009 / Records / Most runs"। সংগ্রহের তারিখ ২০ মে ২০১২
  18. "Indian Premier League, 2009/10 / Records / Most runs"। সংগ্রহের তারিখ ২০ মে ২০১২
  19. "Indian Premier League, 2011 / Records / Most runs"। সংগ্রহের তারিখ ২০ মে ২০১২
  20. "Indian Premier League, 2012 / Records / Most runs"। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১২
  21. "Indian Premier League / Records / Most runs"। সংগ্রহের তারিখ ২০ মে ২০১২
  22. 2nd Test: India v Australia at Bangalore, 9-13 October 2010 | Cricket Scorecard. ESPN Cricinfo. Retrieved on 2013-03-03.
  23. 2nd Test: India v Australia at Hyderabad, 2-6 March 2013 | Cricket Scorecard. ESPN Cricinfo. Retrieved on 2013-03-03.
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.