মারভান আতাপাত্তু

মারভান স্যামসন আতাপাত্তু (সিংহলি: මාවන් අතපත්තු; জন্ম: ২২ নভেম্বর, ১৯৭০) কালুতারায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক শ্রীলঙ্কান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলে খেলেছেন। ডানহাতি ব্যাটিং ও লেগ স্পিন বোলিংয়ে দক্ষ আতাপাত্তু শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়কেরও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।[1]

মারভান আতাপাত্তু
২০১৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে মারভান আতাপাত্তু
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমারভান স্যামসন আতাপাত্তু
জন্ম (1970-11-22) ২২ নভেম্বর ১৯৭০
কালুতারা, সিলন
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি লেগ স্পিন
ভূমিকাউদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৬)
২৩ নভেম্বর ১৯৯০ বনাম ভারত
শেষ টেস্ট১৬ নভেম্বর ২০০৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৫৯)
১ ডিসেম্বর ১৯৯০ বনাম ভারত
শেষ ওডিআই১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ বনাম ভারত
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯০/৯১-২০০৬/০৭সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব
২০০৭-২০০৮দিল্লি জায়ান্টস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৯০ ২৬৮ ২২৮ ৩২৯
রানের সংখ্যা ৫,৫০২ ৮,৫২৯ ১৪,৫৯১ ১০,৮০২
ব্যাটিং গড় ৩৯.০২ ৩৭.৫৭ ৪৮.৭৯ ৩৯.৪২
১০০/৫০ ১৬/১৭ ১১/৫৯ ৪৭/৫৩ ১৮/৭১
সর্বোচ্চ রান ২৪৯ ১৩২* ২৫৩* ১৩২*
বল করেছে ৪৮ ৫১ ১,৩০২ ৮১
উইকেট ১৯
বোলিং গড় ২৪.০০ ৩৬.৪২ ৬৪.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ১/৯ ০/৪ ৩/১৯ ১/১২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫৮/– ৭০/– ১৫০/– ৯১/–

খেলোয়াড়ী জীবন শেষে মারভান আতাপাত্তু ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লীগে অংশগ্রহণ করেন ও দিল্লি জায়ান্টসের অধিনায়ক ছিলেন। কানাডাসিঙ্গাপুর জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন।[2] শ্রীলঙ্কা দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে এপ্রিল, ২০১৪ সাল থেকে দায়িত্ব পালনের পর[3] পরবর্তীতে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সালে তাকে জাতীয় দলের প্রধান কোচের মর্যাদা দেয়া হয়। সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মারভান আতাপাত্তুকে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সঠিকমানের ব্যাটসম্যানরূপে গণ্য করা হয়ে থাকে। গলের মাহিন্দ কলেজে অধ্যয়ণকালীন সময়ে ক্রিকেটের সাথে জড়িয়ে পড়েন। সেখানে তার ক্রিকেট কোচ ছিলেন মেজর জি. ডব্লিউ. এস. ডি সিলভা।[4] তারপর তিনি কলম্বোর আনন্দ কলেজে অধ্যয়ন করেন ও পি. ডব্লিউ. পেরেরা’র পরিচালনায় ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যান।[4] পেশাজীবি অ্যাকাউন্টেন্ট নেলুনি আতাপাত্তুকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দুই কন্যা রয়েছে।

খেলোয়াড়ী জীবন

নভেম্বর, ১৯৯০ সালে বিংশতিতম জন্মদিনের পরপরই টেস্টে অভিষেক ঘটে আতাপাত্তুর। তার প্রথম ছয় ইনিংসেই তিনি শূন্য রানে আউট হন ও একটিতে মাত্র ১ রান সংগ্রহ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে মাইক অ্যাথারটন, গ্রাহাম গুচ, লেন হাটন, সাঈদ আনোয়ার, ওয়াসিম আকরামের ন্যায় প্রমূখ ক্রিকেট প্রতিভাদের সাথে নিজেকেও সামিল করেন যারা টেস্ট অভিষেকেই শূন্য রান করেছিলেন। পরবর্তী ১১ ইনিংসে তার সর্বোচ্চ রান উঠে মাত্র ২৯। কিন্তু টেস্ট অভিষেকের ৭ বছর পর ১০ম টেস্টে ভারতের বিপক্ষে তিনি তার প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২২ টেস্টে শূন্য রান ও ৪ বার জোড়া শূন্য পান। ২০০১ সালে কলম্বোতে অনুষ্ঠিত ২য় টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে মারভান আতাপাত্তু ও মাহেলা জয়াবর্ধনে এ দুইজন ব্যাটসম্যান টেস্ট ক্রিকেট থেকে রিটায়ার্ড আউট হয়ে উদাহরণের সূচনা করেন।[5] ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্টে নিজস্ব সর্বোচ্চ ২৪৯ করেন। এসময় কুমার সাঙ্গাকারা’র সাথে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৩৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন।

নাগপুরে ভারতের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষিক্ত হন। এপ্রিল, ২০০৩ সালে শ্রীলঙ্কার একদিনের আন্তর্জাতিক দলের অধিনায়ক মনোনীত হন।

কোচিং

শ্রীলঙ্কার ফিঙ্গারা ক্রিকেট একাডেমিতে ২০০৯ সালে কোচিংয়ের দায়িত্ব পান। ঐ বছরেরই শুরুতে কানাডার ব্যাটিং কোচ মনোনীত হন ও দলকে ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে উত্তরণ ঘটাতে প্রভূতঃ সহায়তা করেন। ২০১০ সালে সিঙ্গাপুর দলে এক বছর মেয়াদের জন্য প্রধান কোচরূপে মনোনীত হন যা জাতীয় পর্যায়ে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গকালীন কোচিংয়ে অংশ নেন। নেপালে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ক্রিকেট লীগের পঞ্চম বিভাগে দলটি তৃতীয় স্থান দখল করে ও ২০১২ সালের বিশ্ব লীগে একই অবস্থানে থাকে।

এপ্রিল, ২০১১ সালে বিশ্বকাপ শেষে আতাপাত্তু শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং কোচ মনোনীত হন। অন্তর্বর্তীকালীন কোচ স্টুয়ার্ট ল, চম্পকা রামানায়েকেরুয়ান কালপেগের সাথে ইংল্যান্ড সফর করেন। দলের প্রধান কোচের দাবীদার থাকা স্বত্ত্বেও ২০১৩ সালে পল ফারব্রেসকে এ দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়। এ সময় তিনি দলের সহকারী কোচের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৪ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে ফারব্রেস চলে যান। ফলশ্রুতিতে দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ নিযুক্ত হন তিনি। এ সময়ে ১৬ বছরের মধ্যে ২০১৪ সালে ইংল্যান্ড সফরে প্রথমবারের মতো ১-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জয় পায়। সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের প্রধান কোচ হন যা স্থানীয় কোচ হিসেবে ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম ছিল। সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫-২ ব্যবধানে ওডিআই সিরিজ জয় একমাত্র স্বার্থকতা ছিল। কিন্তু পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে উপর্যুপরি টেস্ট সিরিজে পরাজয়ের পর সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সালে পদত্যাগ করেন।

তথ্যসূত্র

  1. "Marvan Atapattu"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১০
  2. "Atapattu to coach Singapore for 2010"। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১০
  3. "Marvan Atapattu appointed head coach of Sri Lankan Cricket Team"IANS। news.biharprabha.com। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৪
  4. Obeysekere, Sriyan (২৭ এপ্রিল ২০০৩)। "Marvan's bag of new one-day strategies, a marvel !"। Sunday Observer। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০১২
  5. Cricinfo scorecard 2nd Test Sri Lanka vs Bangaladesh at Colombo 6-10 September 2001

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

পূর্বসূরী
হাসান তিলকরত্নে
শ্রীলঙ্কান টেস্ট অধিনায়ক
২০০৩-২০০৬
উত্তরসূরী
মাহেলা জয়াবর্ধনে
পূর্বসূরী
সনাথ জয়াসুরিয়া
শ্রীলঙ্কান ওডিআই অধিনায়ক
২০০৩-২০০৬
পূর্বসূরী
পল ফারব্রেস
শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ
২০১৪-২০১৫
উত্তরসূরী
গ্রাহাম ফোর্ড
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.