জন স্মিয়াটন

জন স্মিয়াটন এফআরএস (৮ জুন ১৭২৪ – ১৮ অক্টোবর ১৭৯২) হলো একজন ব্রিটিশ পুরকৌশলী। তিনি বিভিন্ন সেতু, খাল, পোতাশ্রয়বাতিঘরের নকশা করেছিলেন।[1] তিনি একজন বিখ্যাত যন্ত্রকৌশলী এবং একজন প্রভাবশালী পদার্থবিজ্ঞানীও ছিলেন। স্মিয়াটন সর্বপ্রথম নিজেকে “পুরকৌশলী” হিসেবে পরিচয় দেন। তাই তাকে “পুরকৌশলের জনক” বলা হয়।[2] তিনি কংক্রিটে জলীয় চুন এবং যোজকে নুড়ি পাথর ও ভাঙা ইটের ব্যবহার শুরু করেন।[3] স্মিয়াটন বার্মিংহামের লুনার সোসাইটির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।

জন স্মিয়াটন
নিজের নকশা করা এডিস্টোন বাতিঘরের প্রেক্ষাপটে জন স্মিয়াটন
জন্ম(১৭২৪-০৬-০৮)৮ জুন ১৭২৪
অসথর্প, লিডস, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৮ অক্টোবর ১৭৯২(1792-10-28) (বয়স ৬৮)
অসথর্প, লিডস, ইংল্যান্ড
সমাধিসন্ত মেরির গির্জা, হুইটকার্ক
পেশাপুরকৌশলী
পুরস্কারকপলি পদক (১৭৫৯)

আইন ও পদার্থবিজ্ঞান

স্মিয়াটন ইংল্যান্ডের লিডসের অসথর্প শহরে জন্মগ্রহণ করেন। লিডস গ্রামার স্কুলে পড়াশোনা করার পর তিনি তার বাবার আইন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। কিন্তু হেনরি হিন্ডলির সাথে কাজ করার জন্য তিনি সেখান থেকে চলে আসেন। সেখানে তিনি গণিতের যন্ত্রপাতি নির্মাতা হিসেবে অন্যান্য যন্ত্রের সাথে পাইরোমিটারের উন্নতি সাধনে কাজ করেন। ১৭৫০ সালে তিনি হলবর্নের গ্রেট টার্নসটাইলে চলে আসেন।[4]

জন স্মিয়াটন, জর্জ রমনি, ১৭৭৮ (বিস্তৃত), ন্যাশনাল পোর্ট্রেট গ্যালারি, লন্ডন

১৭৫৩ সালে তিনি রয়েল সোসাইটির সদস্য নির্বাচিত হন। জলকলবায়ুকলের কার্যকারিতার ওপর গবেষণার জন্য ১৭৫৯ সালে তিনি কপলি পদক লাভ করেন।[5] ১৭৫৯ সালে তার গবেষণাপত্র “অ্যান এক্সপেরিমেন্টাল এনকোয়ারি কনসার্নিং দ্য ন্যাচারাল পাওয়ার্স অব ওয়াটার অ্যান্ড উইন্ড টু টার্ন মিলস অ্যান্ড আদার মেশিনস ডিপেন্ডিং অন সার্কুলার মোশন”-এ[6] বায়ুপ্রবাহের মধ্যে সচল বস্তুতে চাপ ও গতির মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করেন। স্মিয়াটন উল্লেখ করেন তার কাজ করা ছকের তথ্যসমূহ তার বন্ধু, “লিসেস্টারশায়ারের হারবরোর বুদ্ধিমান ভদ্রলোক” মি. রাউস লিপিবদ্ধ করেছিলেন এবং তিনি রাউসের পর্যবেক্ষণের সাপেক্ষে কাজ করেছেন। স্মিয়াটনের কাজের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে “স্মিয়াটন সহগ” তৈরি করা হয়।[7] স্মিয়াটন জলকলের একটি ছোট আকারের মডেলের ওপর প্রায় সাত বছর যাবৎ বিভিন্ন মাত্রায় গবেষণা করেন।[8] জলশক্তির ক্রমবর্ধমান দক্ষতা উন্নতি শিল্পবিপ্লবে ভূমিকা রাখে।

১৭৫৯–১৭৮২ সালের মধ্যে তিনি জলকলের ওপর অনেক গবেষণা ও হিসাব-নিকাশ করে দেখেন এবং সেগুলোর ফলাফল থেকে তিনি জার্মান বিজ্ঞানী গটফ্রায়েড লিবনিৎসের শক্তির নিত্যতার প্রাথমিক তত্ত্ব ভিস ভিভা তত্ত্বের মিল খুঁজে পান। এ থেকে স্মিয়াটনের সাথে লিবনিৎসের তত্ত্বের প্রত্যাখ্যানকারী রয়েল সোসাইটির সদস্যদের মনোমালিন্য তৈরি হয়। তাদের মতে এই তত্ত্ব স্যার আইজ্যাক নিউটনের ভরবেগের নিত্যতা সূত্রের সাথে সাংঘর্ষিক ছিল।

স্মিয়াটন সহগ

১৭৫৯ সালে স্মিয়াটন “অ্যান এক্সপেরিমেন্টাল এনকোয়ারি কনসার্নিং দ্য ন্যাচারাল পাওয়ার্স অব ওয়াটার অ্যান্ড উইন্ড টু টার্ন মিলস অ্যান্ড আদার মেশিনস ডিপেন্ডিং অন সার্কুলার মোশন” নামক গবেষণাপত্রে কিছু ধারণা ও উপাত্ত উপস্থাপনা করেন, যা “স্মিয়াটন সহগ”[9]রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের ব্যবহৃত উড্ডয়নের সমীকরণ উদ্ভূত হয়। সমীকরণটি হলো:[10]

এখানে,

হলো উড্ডয়ন শক্তি
হলো স্মিয়াটন সহগ (নিচে টীকা দ্রষ্টব্য)
হলো বেগ
হলো বর্গফুটে ক্ষেত্রফল
হলো উড্ডয়ন সহগ (সমান ক্ষেত্রফলের একটি পাতকে উত্থিত করতে আপেক্ষিক উড্ডয়ন শক্তি)

রাইট ভ্রাতৃদ্বয় দেখেন যে বায়ু টানেলের স্মিয়াটন সহগ ০.০০৫ সঠিক নয়,[9] বরং সহগ হবে ০.০০৩৩।[11] আধুনিক বিশ্লেষণে উড্ডয়ন সহগ স্মিয়াটন সহগের পরিবর্তে গতীয় চাপ দিয়ে হিসাব করা হয়।

পুরকৌশল

স্মিয়াটনের বাতিঘর

আধুনিক সিমেন্টের ইতিহাস, পুনরাবিষ্কার ও উন্নয়ন, চুনে “জলীয় বৈশিষ্ট্য” নির্ধারণে প্রয়োজনীয় উপাদানের পরিমাণ নির্ণয় এবং পরিশেষে পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট আবিষ্কারে স্মিয়াটনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের মাধ্যমে আধুনিক স্থাপত্য উপাদান হিসেবে কংক্রিট ব্যবহারের পুনরুত্থানেও স্মিয়াটনের প্রভাব ছিল।

রয়েল সোসাইটির সুপারিশক্রমে স্মিয়াটন ১৭৫৫–৫৯ সালে তৃতীয় এডিস্টোন বাতিঘরের নকশা করেন।[12] তিনি বাতিঘরটির নির্মাণে জলীয় চুন (এক ধরনের গাঁথনির মসলা, যা পানির উপস্থিতিতে থিতু হয়) এবং গ্রানাইটের ডাভটেইল ব্লকের ব্যবহার শুরু করেন। ১৮৭৭ সালে ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর ক্ষয়প্রাপ্ত হতে শুরু করার আগ পর্যন্ত বাতিঘরটি কার্যক্ষম ছিল। এরপর সেটিকে প্লাইমাউথ হোয়ে সরিয়ে এনে আংশিকভাবে নির্মাণ করা হয়, যা এখনও স্মিয়াটনের টাওয়ার নামে পরিচিত।[13]

এডিস্টোন বাতিঘরের প্রস্থচ্ছেদে ডাভটেইল জোড়ার কৌশল
টায় নদীর ওপরে পার্থ সেতু

পুরকৌশল লাভজনক ক্ষেত্রে বাকি সময় ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্মিয়াটন বেশ কিছু বড় বড় স্থাপনা নির্মাণের দায়িত্ব পান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো:

  • কেলডার ও হেবল জলপথ (১৭৫৮–৭০)
  • টুইড নদীর ওপরে কোল্ডস্ট্রিম সেতু (১৭৬৩–৬৬)
  • লি জলপথ উন্নয়ন (১৭৬৫–৭০)
  • স্মিয়াটনের ঘাট, সেন্ট আইভিস, কর্নওয়াল (১৭৬৭–৭০)
  • টায় নদীর ওপর পার্থ দেতু, পার্থ (১৭৬৬–৭১)
  • রিপন খাল (১৭৬৬–৭৩)
  • স্মিয়াটনের বহুখিলানবিশিষ্ট সেতু (১৭৬৮–৭০), যা ট্রেন্ট নদীর ওপর দিয়ে নটিংহামশায়ারের নেওয়ার্কদক্ষিণ মাস্কহ্যাম শহরকে সংযোগকারী এ৬১৬ সড়কে (গ্রেট নর্থ সড়কের অংশ) নির্মিত[14][15]
  • গ্রেঞ্জমাউথ থেকে গ্লাসগো পর্যন্ত ফোর্থ ও ক্লাইড খাল (১৭৬৮–৭৭)
  • ল্যাংলি অন টাইনের বিগালক কারখানা (নিকোলাস ওয়াল্টনের সাথে যৌথভাবে), গ্রিনিচ হাসপাতাল, লন্ডন (১৭৬৮)[16]
  • বানফ পোতাশ্রয় (১৭৭০–৭৫)
  • লোয়ার নর্থ ওয়াটার সেতু (১৭৭০–৭৫)
  • অ্যাবারডিন সেতু (১৭৭৫–৮০)
  • পিটারহেড পোতাশ্রয় (১৭৭৫–১৮৮১)
  • নেন্ট ফোর্স লেভেল (১৭৭৬–৭৭)
  • কার্ডিংটন সেতু (১৭৭৮)[17]
  • র‍্যামসগেট পোতাশ্রয়ের নির্মাণকাজ (ধারক খাত ১৭৭৬–৮৩, জেটি ১৭৮৮–৯২)
  • হেক্সহ্যাম সেতু (১৭৭৭–৯০); ১৭৯৩ সালে রবার্ট মিলনি এটি সম্পূর্ণ করেন।
  • বার্মিংহাম ও ফেইজলি খাল (১৭৮২–৮৯)
  • চার্লসটাউন পোতাশ্রয়, সেন্ট অস্টেল, কর্নওয়াল (১৭৯২)
চার্লসটন, কর্নওয়ালের আবদ্ধ ডক

স্মিয়াটন ব্রিটেনের আদালতে উপস্থিত হওয়া প্রথম বিশেষজ্ঞ সাক্ষী। প্রকৌশলের ক্ষেত্রে তার দক্ষতার সুবাদে তাকে ১৭৮২ সালে নরফোকের ওয়েলস-নেক্সট-দ্য-সি শহরের পোতাশ্রয়ে পলি পড়ার জন্য একটি মামলায় সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তলব করা হয়েছিল।[18] তিনি উইনচেলসি বন্দরে পলি জমার থেকে রক্ষার জন্য রাইয়ে ঢেউযুক্ত সাগরে ৬৩ বছর ব্যাপী নতুন পোতাশ্রয়ের নির্মাণকাজে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। এই স্থানটি লোকমুখে তাই “স্মিয়াটনের পোতাশ্রয়” নামে পরিচিতি পায়। তবে এইরূপ নাম সত্ত্বেও পোতাশ্রয়ের কাজে স্মিয়াটনের সম্পৃক্ততা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। প্রকল্পটি চালু হওয়ার ত্রিশ বছর পর তিনি এর কাজে যুক্ত হন।[19] ১৮৩৯ সালে এটি বন্ধ হয়ে যায়।[20]

যন্ত্রকৌশল

যন্ত্রকৌশলের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে জন স্মিয়াটন ১৭৬১ খ্রিষ্টাব্দে কিউয়ের রয়েল বোটানিক্যাল গার্ডেনসে একটি জলকল এবং ১৭৬৭ খ্রিষ্টাব্দে কাম্ব্রিয়ার অ্যালস্টনে একটি জলচক্রের নকশা করেন। কেউ কেউ জলচক্রের অক্ষীয় বাটের নকশাকার হিসেবে জন স্মিয়াটনকে কৃতিত্ব দিতে চান। ১৭৮২ খ্রিষ্টাব্দে জন স্মিয়াটন টাইন নদীর তীরের নিউক্যাসলের স্পিটাল টাংসে চুঙ্গি কল তৈরি করেন, যা ছিল ব্রিটেনের প্রথম পাঁচ-পাখার স্মক কল। তিনি থমাস নিউকামেনের বায়ুমণ্ডলীয় ইঞ্জিনকে রূপান্তর করেন এবং ১৭৭৫ খ্রিষ্টাব্দে কর্নওয়ালের হুইল বিজির চেইজওয়াটার খনিতে একটি ইঞ্জিন স্থাপন করেন।

১৭৮৯ সালে স্মিয়াটন ডাইভিং বেলের ভেতরে বিশুদ্ধ বাতাস ও সঠিক বায়ুচাপ ধরে রাখতে ডেনি পাপেঁইয়ের বলীয় পাম্পের ধারণা কাজে লাগান।[21][22] হেক্সহাম সেতুর জন্য নির্মিত এই বেলটি পানির নিচে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়নি। তবে ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দে রামসগেট পোতাশ্রয়ের কাজে পানির নিচে ব্যবহারের জন্য এই বেলের নকশায় পরিবর্তন আনা হয়।[22] ওভারশট ও আন্ডারশট জলচক্রের মৌলিক পার্থক্য ব্যাখ্যার জন্যও জন স্মিয়াটনকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়। স্মিয়াটন জেমস ওয়াটের বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কারের সময় (আনু. ১৭৭০-এর দশকের শেষভাগে) নিউকামেনের বাষ্পীয় ইঞ্জিন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যথেষ্ট অগ্রগতি লাভ করেছিলেন।[23]

উত্তরাধিকার

জন স্মিয়াটন অসথর্পে নিজের পারিবারিক বাসভবনের বাগানে হাঁটার সময় মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের মৃত্যুবরণ করেন। তাকে পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের হুইটকার্ক প্যারিশ গির্জায় সমাহিত করা হয়। তার কন্যারা তার ও তার স্ত্রীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি স্মারক নির্মাণ করান, যা গির্জার চ্যান্সেলের দেয়ালে অবস্থিত।[24][25]

এডিস্টোন বাতিঘরের নিচের পাথরটি ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ায় পুরো স্থাপনাটি স্থানান্তরিত করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। স্মিয়াটনের বাতিঘরের উপরের অংশ (বাতি, ভাড়ার ঘর, থাকার ঘর ও পাহারা ঘর) স্থানান্তরের সময় এর কিছু অংশ হুইটকার্কে নিয়ে আসা এবং তার স্মৃতি রক্ষার্থে স্মারক হিসেবে সংরক্ষণ করার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যয় দাঁড়ায় ১৮০০ পাউন্ড, অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি ছিল।[26]

লুনার সোসাইটিতে তার অবদান এবং সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স প্রতিষ্ঠার জন্য প্রকৌশলীরা তাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি উলউইচের রয়েল মিলিটারি একাডেমি থেকে পাশ করে বের হওয়া সামরিক প্রকৌশলীদের থেকে পৃথক করার জন্য সর্বপ্রথম সিভিল ইঞ্জিনিয়ার শব্দটি ব্যবহার করেন।[2] এই সোসাইটি ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ইনস্টিটিউট অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্সের পথিকৃত ছিল। ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে সোসাইটির নাম পরিবর্তন করে “স্মিয়াটনিয়ান সোসাইটি অব্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স” রাখা হয়। জন স্মিয়াটনের উল্লেখযোগ্য ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন পানি প্রকৌশলী উইলিয়াম জেসপ এবং স্থপতি ও প্রকৌশলী বেঞ্জামিন লেট্রোব

বাতাসে অবস্থিত কোনো বস্তুর ওপর বেগের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক হারে আরোপ হওয়া চাপের সমানুপাতিক ধ্রুবকের নাম স্মিয়াটনের সম্মানার্থে রাখা হয়েছে “স্মিয়াটনের সহগ”।[9] স্মিয়াটনের ধারণা ও পরীক্ষালব্ধ উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে রাইট ভাতৃদ্বয় বায়ু অপেক্ষা ভারী বিমান উড্ডয়নে সক্ষম হন।

১৮৬০ থেকে ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে পুরনো ব্রিটিশ পেনির উল্টো পিঠে (ব্রিটানিয়ার পেছনে) স্মিয়াটনের এডিস্টোন বাতিঘরের একটি চিত্র দেখা যায়।[25]

১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে উদ্বোধন হওয়া স্টিফেনসন রঙিন কাচের জানালায় স্থান পাওয়া ছয়জন পুরকৌশলীদের মধ্যে জন স্মিয়াটন ছিলেন অন্যতম। এটির নকশা করেছিলেন উইলিয়াম ওয়েইলিস[27] ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ৭ নভেম্বর স্মিয়াটনিয়ান সোসাইটি অব্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি নোয়িল অর্ডম্যান ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে স্মিয়াটনের নামে একটি স্মৃতিফলক উন্মোচন করেন।[28][29]

জন স্মিয়াটন ভায়াডাক্টের ফলক

লিডসের শহরতলীতে অসথর্পের নিকটবর্তী পেন্ডাস ফিল্ডস এস্টেটের মাধ্যমিক বিদ্যালয় জন স্মিয়াটন একাডেমি স্মিয়াটনের নামে নামকৃত হয়েছে। প্লাইমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ও প্রযুক্তি বিভাগ জন স্মিয়াটনের নামে নামকৃত একটি ভবনে অবস্থিত। লিডস ইনার রিং রোডের শেষ ধাপে অবস্থিত একটি ভায়াডাক্ট তার নামে নামকরণ করা হয়, যা ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে খুলে দেওয়া হয়।

২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে [[হিউম্যান অ্যাকমপ্লিশমেন্ট: দ্য পারস্যুট অব এক্সিলেন্স ইন দি আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস, ৮০০ বি.সি. টু ১৯৫০]]-এর তালিকায় শীর্ষ ১০ প্রযুক্তিগত উদ্ভাবকদের তালিকায় জন স্মিয়াটন স্থান করে নেন। এছাড়া লিডসভিত্তিক ইন্ডি রক ব্যান্ড কায়সার চিফসেরআই প্রেডিক্ট অ্যা রায়ট” গানে স্মিয়াটনের উল্লেখ পাওয়া যায়, যেখানে তার মাধ্যমে লিডসের গৌরব ও শান্তিময় যুগ এবং প্রধান গায়ক রিকি উইলসনের ছোটবেলার বিদ্যালয় লিডস গ্রামার স্কুলের জুনিয়র স্কুল হাউজের প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে।

কর্ম

আরও দেখুন

  • যুক্তরাজ্যের খাল
  • ব্রিটিশ খাল ব্যবস্থার ইতিহাস

আরও পড়ুন

  • স্কেম্পটন (এড.), এ.ডব্লিউ. (১৯৯১)। জন স্মিয়াটন এফআরএস। লন্ডন: আইসিই পাবলিশিং। আইএসবিএন 978-0727700889।

তথ্যসূত্র

  1. নোলেস, ইলিয়ানর। "Engineer Biography: John Smeaton"ইঞ্জিনিয়ারিং টাইমলাইনস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৭
  2. ডেনি, মার্ক (২০০৭)। ইঞ্জিনিয়াম: ফাইভ মেশিনস দ্যাট চ্যাঞ্জড দ্য ওয়ার্ল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। জেএইচইউ প্রেস। পৃষ্ঠা ৩৪।
  3. গ্রোমিকো, নিক; শেফার্ড, কেনটন। "the History of Concrete" (ইংরেজি ভাষায়)। দি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব সার্টিফায়েড হোম ইনস্পেকটর্স (ইন্টারনাচি)। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৩
  4. এলিহু রিচ, সম্পাদক (১৮৬৬), Great Men of Great Britain (ইংরেজি ভাষায়), ডি. অ্যাপলটন, পৃষ্ঠা ২৭৬
  5. নোলেস, ইলিয়ানর। "Engineer Biography: John Smeaton, water wheels and mill works"ইঞ্জিনিয়ারিং টাইমলাইনস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৭
  6. স্মিয়াটন, জে (১৭৫৯)। "An Experimental Enquiry concerning the Natural Powers of Water and Wind to Turn Mills, and Other Machines, Depending on a Circular Motion"। ফিলসফিক্যাল ট্রানসেকশন অব দ্য রয়েল সোসাইটি (ইংরেজি ভাষায়)। ৫১: ১০০–১৭৪। ডিওআই:10.1098/rstl.1759.0019অবাধে প্রবেশযোগ্য
  7. "Centennial of flight: Smeaton's Coefficient" (ইংরেজি ভাষায়)। সেন্টেনিয়াল অব ফ্লাইট। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১০
  8. রোজেন, উইলিয়াম (২০১২)। দ্য মোস্ট পাওয়ারফুল আইডিয়া ইন দ্য ওয়ার্ল্ড: অ্যা স্টোরি অব স্টিম, ইনডাস্ট্রি অ্যান্ড ইনভেনশন। ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস। পৃষ্ঠা ১২৭। আইএসবিএন 978-0226726342।
  9. "Smeaton's Coefficient"সেন্টেনিয়াল অব ফ্লাইট (ইংরেজি ভাষায়)।
  10. "Lift equation of the early 1900s" (ইংরেজি ভাষায়)। রাইট.নাসা.জিওভি। ২৫ মার্চ ২০১০। ২৭ মে ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১০
  11. ডডসন, এমজি (২০০৫)। "An Historical and Applied Aerodynamic Study of the Wright Brothers' Wind Tunnel Test Program and Application to Successful Manned Flight"ইউএস নেভাল একাডেমি টেকনিক্যাল রিপোর্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ইউএসএনএ-৩৩৪। Archived from the original on ১৪ মে ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০০৯
  12. "Eddystone Lighthouse, Smeaton Tower substructure"ইঞ্জিনিয়ারিং টাইমলাইনস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৭
  13. "Eddystone Lighthouse, Smeaton Tower (relocated)"ইঞ্জিনিয়ারিং টাইমলাইনস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৭
  14. "Biff Vernon: "Smeaton's viaduct"" (ইংরেজি ভাষায়)। বিফভার্নন.ফ্রিসার্ভ.কো.ইউকে। ২১ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১০
  15. "Geograph Photo" (ইংরেজি ভাষায়)। জিয়োগ্রাফ.অর্গ.ইউকে। ১০ মার্চ ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১০
  16. "The Greenwich Hospital Smelt Mill at Langley, Northumberland 1768–1780" by F. J. Monkhouse, Transactions of the Institution of Mining and Metallurgy vol. 49, 1940. It is a Scheduled Ancient Monument ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে.
  17. "Bedfordshire Archives" (ইংরেজি ভাষায়)।
  18. "Smeaton's Harbour - Rye Castle Museum"রাইমিউজিয়াম (ইংরেজি ভাষায়)। ২ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  19. "স্মিয়াটন'স হার্বার"রাই জাদুঘর (ইংরেজি ভাষায়)। ২৬ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
  20. "স্মিয়াটন'স হার্বার"রাই'স ওউন। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  21. ডেভিস, আর. এইচ. (১৯৫৫)। ডিপ ডাইভিং অ্যান্ড সাবমেরিন অপারেশনস (ইংরেজি ভাষায়) (৬ষ্ঠ সংস্করণ)। টলওর্থ, সার্বিটন, সারে: সিবে গরম্যান অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড। পৃষ্ঠা ৬৯৩।
  22. অ্যাকট, সি. (১৯৯৯)। "অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি অব ডাইভিং অ্যান্ড ডিকম্প্রেশন ইলনেস"সাউথ প্যাসিফিক আন্ডারওয়াটার মেডিসিন সোসাইটি জার্নাল (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ (২)। আইএসএসএন 0813-1988ওসিএলসি 16986801। Archived from the original on ২৭ জুন ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০০৯
  23. "জন স্মিয়াটন"ইঞ্জিনিয়ারিং টাইমলাইন (ইংরেজি ভাষায়)। ৭ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
  24. "Smeaton Memorial" (ইংরেজি ভাষায়)। ৩০ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০২০
  25. "John Smeaton - St Mary's Church" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০২০
  26. কার্ক, জর্জ ই. (১৯৩৫)। অ্যা হিস্ট্রি অব দ্য প্যারিশ চার্চ অব সেন্ট ম্যারি, হুইটকার্ক, লিডস (ইংরেজি ভাষায়)। জন হোয়াইটহেড অ্যান্ড সন। পৃষ্ঠা ১২৬।
  27. "Westminster Abbey – Robert Stephenson" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৫
  28. "Westminster Abbey – John Smeaton" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৫
  29. "Civil Honour"। দ্য টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ৭ নভেম্বর ১৯৯৪। পৃষ্ঠা ১৬। আইএসএসএন 0140-0460
  30. "A Narrative Of The Building And A Description Of The Construction Of The Edystone Lighthouse With Stone: | বুকস | আরএ কালেকশন | রয়েল একাডেমি অব আর্টস"রয়েল একাডেমি অব আর্টস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০২২

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.