হেমেন্দ্রকুমার রায়
হেমেন্দ্রকুমার রায় (প্রকৃত নাম: প্রসাদদাস রায়; জন্ম: ১৮ এপ্রিল ১৮৮৮, মৃত্যূ: ১৮ এপ্রিল ১৯৬৩) একজন বাঙালি সাহিত্যিক এবং গীতিকার। তিনি ছোটদের জন্য রহস্য রোমাঞ্চ ও গোয়েন্দা গল্প লেখার জন্য বিখ্যাত। তার কয়েকটি গল্প ও উপন্যাস চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে।
হেমেন্দ্রকুমার রায় | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৮ এপ্রিল ১৯৬৩ ৭৫), | (বয়স
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | লেখক |
হেমেন্দ্রকুমার রায়ের জন্মস্থান কলকাতা। তার পিতার নাম রাধিকাপ্রসাদ রায়।[1]
হেমেন্দ্রকুমার রায় মাত্র চৌদ্দ বছর বয়েসে সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে বসুধা পত্রিকায় তার প্রথম গল্প আমার কাহিনী প্রকাশিত হয়। ১৩২২ বঙ্গাব্দে সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় এবং মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় ভারতী পত্রিকা নতুনরূপে প্রকাশিত হলে হেমেন্দ্রকুমার এর লেখকগোষ্ঠীতে যোগদান করেন। সাপ্তাহিক নাচঘর (১৩৩১ বঙ্গাব্দ) পত্রিকাটি তিনি সম্পাদনা করেছিলেন। এছাড়া মাসিকপত্র রংমশাল প্রভৃতি কয়েকটি পত্রিকার সম্পাদনার সাথেও তিনি যুক্ত ছিলেন।
ছোটদের জন্য তিনি ৮০টিরও বেশি বই লিখেছিলেন। এর মধ্যে কবিতা, নাটক, হাসি ও ভূতের গল্প, অ্যাডভেঞ্চার, ও গোয়েন্দা কাহিনি, ঐতিহাসিক উপন্যাস সবকিছুই ছিল। তার সৃষ্ট দুঃসাহসী জুটি বিমল-কুমার, জয়ন্ত (গোয়েন্দা) ও সহকারী মানিক, পুলিশ ইন্সপেক্টর সুন্দরবাবু, ডিটেকটিভ হেমন্ত, বাংলা কিশোর সাহিত্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য চরিত্র।[1]
হেমেন্দ্রকুমার রায় বড়দের জন্যও বেশ কিছু বই লিখেছিলেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: জলের আলপনা, বেনোজল, পদ্মকাঁটা, ঝড়ের যাত্রী, যাঁদের দেখেছি, বাংলা রঙ্গালয় ও শিশিরকুমার, ওমর খৈয়ামের রুবায়ত প্রভৃতি। তার সিঁদুর চুপড়ি গল্পটি জার্মান ভাষায় অনূদিত হয়ে একটি সংকলন গ্রন্থে স্থান পেয়েছিল।[1] বিমল ও কুমারের অভিযান কাহিনি অবলম্বনে তার বিখ্যাত উপন্যাস যকের ধন দুইবার চলচ্চিত্রায়িত হয়।
তিনি সফল গীতিকারও ছিলেন। সেই সময়ের বাংলা থিয়েটার এবং গ্রামাফোনে গাওয়া গানের প্রচলিত রীতি এবং রুচির মোড় তিনি ফিরিয়েছিলেন। তার রচিত অনেক গান সেই সময়ে জনপ্রিয় ছিল। অন্ধকারের অন্তরেতে গানটি এর মধ্যে অন্যতম।[1]
তিনি শিশিরকুমার ভাদুড়ীর সীতা নাটকের নৃত্য পরিচালক ছিলেন। তিনি ভাল ছবি আঁকতে পারতেন। বাংলায় শিল্প সমালোচনার তিনি অন্যতম পথিকৃৎ।[1]
চলচ্চিত্র
হেমেন্দ্রকুমার রায় রচিত দেড়শো খোকার কাণ্ড চলচ্চিত্রায়িত হয় ১৯৫৯ সালে। তার লেখা নিশীথিনী বিভীষিকা অবলম্বনে ১৯৫১ সালে বাংলা চলচ্চিত্র জিঘাংসা এবং হিন্দিতে বিশ সাল বাদ (১৯৬২) নির্মিত হয়। তার রচনা রাত্রির যাত্রী, যকের ধন টেলিসিরিয়াল আকারে প্রচারিত হয়েছে। ১৯৩৯ সালে হরিচরন ভঞ্জের পরিচালনায় হেমেন্দ্রকুমারের সর্বাধিক জনপ্রিয় কাহিনী 'যকের ধন' প্রথম চলচ্চিত্রায়িত হয়, এই সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন ছায়া দেবী, অহীন্দ্র চৌধুরী, জহর গাঙ্গুলি। ২০১৭ সালে পূনরায় নির্মিত হয় যকের ধন (চলচ্চিত্র)। এই ছবিটিতে অভিনয় করেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী প্রমুখ।[2]
গ্রন্থ তালিকা
|
|
|
|
তথ্যসূত্র
- সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান - প্রথম খণ্ড - সাহিত্য সংসদ আইএসবিএন ৮১-৮৫৬২৬-৬৫-০
- "এবার বড় পর্দা কাঁপাতে আসছে 'যকের ধন'"। সংবাদ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৭।