হিমু (উপন্যাস)
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মধ্যে হিমু অন্যতম।[2] [3] হিমু সিরিজের বইগুলোর মধ্যে এটি তৃতীয়[1]। হিমু সিরিজের প্রথম বই হলো ময়ূরাক্ষী (১৯৯০)।[4] ময়ূরাক্ষীর পরে হিমু সংক্রান্ত উপন্যাস হলো দরজার ওপাশে (১৯৯২)।
লেখক | হুমায়ুন আহমেদ |
---|---|
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
ধারাবাহিক | হিমু |
ধরন | উপন্যাস |
প্রকাশিত | ১৯৯৩[1] |
প্রকাশক | প্রতীক প্রকাশনী[1] |
প্রকাশনার তারিখ | ফেব্রুযারি ১৯৯৩ |
মিডিয়া ধরন | ছাপা (শক্তমলাট) |
পূর্ববর্তী বই | দরজার ওপাশে |
পরবর্তী বই | পারাপার |
চরিত্রসমূহ
- হিমু
- রূপা
- এষা
- মোরশেদ - এষার স্বামী
- ইয়াদ - হিমুর বন্ধু
- নীতু - ইয়াদের স্ত্রী
- মজনু মিয়া - ভাতের হোটেলের মালিক
- ইরতাজুল করিম - মনোবিজ্ঞানী
- বাদল - হিমুর ফুফাতো ভাই
কাহিনীসংক্ষেপ
উপন্যাসকে আমরা কয়েকটি দৃশ্য বা প্রেক্ষাপটে আালোচনা করতে পারি।
এষা ও মোরশেদের মধ্যকার প্রেক্ষাপট। মূলত মোরশেদ সাহেব অসুস্থ থাকায় এষা তাকে ডিভোর্স দিয়েছিল যার জন্য মোরশেদ সাহেব আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এষার সাথে হিমুর পরিচয় ঘটে এষার দাদী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সাহায্য করার মাধ্যমে এবং সেই সূত্রে তাদের বাসায় যাওয়া। মোরশেদের সাথে ঠিক সেদিনেই হিমুর পরিচয়।মোরশেদ কর্তৃক মামা সম্বোধন পাওয়াও সেইদিন । এক পর্যায়ে হিমু মোরশেদ সাহেবকে সাহায্যে করার মনোভাব পোষণ করেন এবং বিভিন্নভাবে সাহায্য করতে থাকেন।
হিমুর বন্ধু ইয়াদ ও তার স্ত্রী নীতুর দৃশ্যপট। এখানে দেখা যায় প্রথম পর্যায়ে হিমুর বন্ধু ইয়াদ হিমুকে তার রিসার্চের জন্য ব্যাগ বহনকারী সহকারী হিসেবে রাখে কিন্তু কিছুদিন পর হিমু আর এ কাজ করেনি। ইয়াদের রিসার্চের বিষয় ছিল ভিক্ষুকদের জীবনযাপন। হিমু ইয়াদকে বলেছিলো ভিক্ষুকদের জানতে হলে ভিক্ষুক হতে হবে এবং ইয়াদ একসময় তাই হয়েছিলো। ইয়াদের স্ত্রীর ধারণা ছিলো হিমুই মূলত ইয়াদকে এ কাজে উদ্বুদ্ধ করছে। হিমু তার ভবিষ্যদ্বানী করার মাধ্যমে নীতুকে সবকিছু বলে দিত। তাই নীতু হিমুকে মহাপুরুষ নাকি এই হিসেবে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা ও অকুণ্ঠ করত। একসময় হিমুর ভবিষ্যদ্বানী সত্যি হয়। ইয়াদ ভিক্ষুকদের সাথে মিশে যায় যার জন্য নীতু হিমুকে আক্রমণ করার জন্য কুকুর লেলিয়ে দেয়।
আরেকটি প্রেক্ষাপট ছিলো হিমুর নিকট রুপার চিঠি। চিঠিতে রুপা একাসময় হিমুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায় এবং হিমুকে নিয়ে তার যশোরের বাড়িতে আবকাশ যাপনের অনুভূতিও প্রকাশ করে। এও উল্লেখ করে যে সে ইদানীং আজেবাজে স্বপ্ন দেখছে। দ্বিতীয় চিঠিতে রুপা জানতে চায় হিমু কেমন আছে। কিন্তু এই উপন্যাসে হিমু অনেকটা রুপার প্রতি খামখেয়ালি ছিলো বলা যায়।
অপর একটি প্রেক্ষাপটে ডা.ইরতাজুল করিমের সাথে হিমুর আলাপচারিতা প্রকাশ পায়। এখানে দেখা যায় হিমুর পিতা কীভাবে তাকে মহাপুরুষ বানাতে চেয়েছিলেন তার চিত্র। ডা.এর ছোট মেয়েকে নিয়ে যে ভবিষ্যদ্বানী করেছিলো তাও মিলে গিয়েছিলো এবং যার ফলে ডাক্তার বুঝে গিয়েছিলো হিমু সাধারণ দেখতে হলেও সাধারণ মানুষ নন। তাই তিনি আর হিমুর সাথে বেশি দূর এগোননি।
মজনু মিয়ার ভাতের হোটেলে হিমুর একটা ভালো কদর ছিলো। তাই সে একদম শেষে গিয়ে কর্মচারীর সাথে খেতে বসতো এবং তাতে কর্মচারীরাও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতো। মজনুকে নিয়ে একদিন ভবিষ্যদ্বানী করলে তা একদম মিলে যায় যার জন্য মজনু তাকে পীর -ফকির কামেল মানুষ ভাবতেন এবং কদর করতেন। তাই হিমুও মজনুর হোটেলে তার বন্ধু ইয়াদ ও মোরশেদকে হোটেলটি চিনিয়ে দিয়ে যায় কিন্তু ইয়াদের পাগলামি আর মোরশেদের মৃগীরোগ মজনু মিয়ার পছন্দ ছিলো না তাই তিনি হিমুর কাছে বিচার দেন এবং তারা যাতে আর তার হোটেলে না আসে তা সাফ জানিয়ে দেন। কিন্তু হিমুর জন্য তার হোটেলের দুয়ার সবসময় খোলা তা জানিয়ে দেন। তার ফুফাতো ভাই বাদল তার কথা শুনতেন।হিমুর কথা শুনলে বাদল গোল্লায় যাবে এই ভেবে বাদলের বাবা হিমুকে টাকা দিত যাতে সে বাদলের কাছে না যায়। তবুও শেষদিকে আমরা দেখেছি বাদল হিমুকে উপকার করেছিলো।
শেষে দেখতে পাই মোরশেদকে এষার সাথে মিলিয়ে দেওয়ার যে চেষ্টা তা সফল হয়। এষাকে তিনি যে ভবিষ্যদ্বানী করেছিলেন তা সত্যি হয় এবং এখানেই হিমু সিরিজের হিমু(১৯৯৩)উপন্যাসটির সমাপ্তি ঘটে।
আরো দেখুন
তথ্যসূত্র
- হুমায়ূন আহমেদ। "হিমু"। goodreads.com। প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৭, ২০১৫।
- প্রশান্ত ত্রপিুরা (জুলাই ২১, ২০১৩)। "Humayun Ahmed, Himu and identity conflicts in Bangladesh"। bdnews24.com। ঢাকা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৭, ২০১৫।
- "হিমু ধারাবাহিক"। goodreads.com (ইংরেজি ভাষায়)। গুডরিড্স। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৭, ২০১৫।
- হুমায়ূন আহমেদ (১৯৯০)। ময়ূরাক্ষী। অনন্যা পাবলিকেশন। পৃষ্ঠা ইনার পেজ। আইএসবিএন 984 412 522 7।