হালুয়াঘাট উপজেলা
হালুয়াঘাট উপজেলা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।
হালুয়াঘাট | |
---|---|
উপজেলা | |
হালুয়াঘাট হালুয়াঘাট | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°৭′৩০″ উত্তর ৯০°২১′০″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ময়মনসিংহ বিভাগ |
জেলা | ময়মনসিংহ জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৩৫৭.৮০ বর্গকিমি (১৩৮.১৫ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ২,৯০,০৪৩ |
• জনঘনত্ব | ৮১০/বর্গকিমি (২,১০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৩৪.৭৬% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৬১ ২৪ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
হালুয়াঘাট উপজেলার উত্তরে ভারতের মেঘালয়, দক্ষিণে ফুলপুর উপজেলা, পূর্বে ধোবাউড়া উপজেলা, পশ্চিমে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
হালুয়াঘাট উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম হালুয়াঘাট থানার আওতাধীন।[2]
মুক্তিযুদ্ধে অবদান
হালুয়াঘাট শত্রুমুক্ত হয় ৭ ডিসেম্বর। এই থানার সবচেয়ে ভয়াবহ ও ঐতিহাসিক তেলিখালী যুদ্ধ সংঘটিত হয় ৩ নভেম্বর। পাকবাহিনীর অন্যতম শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল এই তেলিখালী। এখানে মুক্তিবাহিনী এবং মিত্রবাহিনী যৌথভাবে আক্রমণ চালায়। মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার ছিলেন আবুল হাসেম, মিত্রবাহিনীর পক্ষে নেতৃত্ব দেন কর্নেল রঘুবন সিং এবং এই যৌথবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন সন্ত সিং (বাবাজি)। মুক্তিবাহিনীর পাঁচটি কোম্পানি এবং মিত্রবাহিনী তেলিখালী ক্যাম্পে তিন দিক থেকে আক্রমণ চালায়। যুদ্ধ চলে রাত ৩টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত। এতে খতম হয় ১২৪ জন পাকসেনা, ২৫ জন রেঞ্জার এবং ৮৫ জন রাজাকার। আত্মসমর্পণ করেন একজন পাকসেনা ও দুজন রাজাকার। শহিদ হন ৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ২১ জন মিত্রবাহিনীর সদস্য। শহিদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন –
- আক্তার হোসেন সরকার
- হযরত আলী
- আলাউদ্দিন
- শাহজাহান ওরফে বাদশা
- রঞ্জিত গুপ্ত
- শওকত উসমান
- ওয়াজিউল্লাহ ( ইপিআর সদস্য )।
মুক্তিযোদ্ধাদের পাঁচটি কোম্পানি হল –
- আলফা গ্রুপ (কমান্ডার – নুরুল ইসলাম)
- ব্রেভো গ্রুপ (কমান্ডার – আতাউদ্দিন শাহ)
- চারলি গ্রুপ (কমান্ডার – হাফিজউদ্দিন)
- ডেলটা গ্রুপ (কমান্ডার – হাবিলদার মেজবাহ)
- এডম গ্রুপ (কমান্ডার – আবদুর রব)।
এছাড়া ১৪ ডিসেম্বর আহম্মদ আলী মাস্টারের বাড়িতে তাকে ধরার জন্য পাক বাহিনী গেলে তিনি তিন রাত পুকুরে ডুব দিয়ে গা ঢাকা দিয়ে থাকেন। তাছাড়া ৬টি কাট-আপ পার্টিতে বিভিন্ন কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধার যোগ দিয়েছিলেন এই তেলিখালী যুদ্ধে। হালুয়াঘাট থানায় আরও অনেক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হল- নাগলা ব্রিজ ধ্বংস (২৩ জুলাই), বিজয়পুর যুদ্ধ (২৮ জুলাই), আইলাতলী ব্রিজ ধ্বংস (৫ আগস্ট), বান্দরঘাটা যুদ্ধ (৬ আগস্ট), কড়ইতলী যুদ্ধ (৬ সেপ্টেম্বর) এবং ধারা যুদ্ধ (৮ ডিসেম্বর)। ৬ আগস্টের বান্দরঘাটা যুদ্ধে শহিদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক, রিয়াজউদ্দিন এবং আবদুস সালাম।[3]
শিক্ষা
- শহিদ স্মৃতি কলেজ
- হালুয়াঘাট ডিএস আলিম মাদ্রাসা
- পাবিয়াজুরী স্কুল এন্ড কলেজ
- স্বদেশী এ.এইচ.এস উচ্চ বিদ্যালয়
- ধারা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
- ঘাশী গাও দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়
- শাকুয়াই স্কুল এন্ড কলেজ
- বাউসা সর: প্রাথমিক বিদ্যদলয়
- বি কে কে উচ্চ বিদ্যালয়
- বাহির শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়
- হালুয়াঘাট আদর্শ মহাবিদ্যালয়
- বিড়ই ডাকুনী উচ্চ বিদ্যালয়
- ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়
- আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়
- কুতিকুড়া করুয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়
- সেন্ট এন্ড্রজ উচ্চ বিদ্যালয়
- সেন্ট মেরিস নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়
- হালুয়াঘাট মিশন স্কুল
- ধুরাইল আলীম মাদ্রাসা
অর্থনীতি
এই অঞ্চল কৃষিনির্ভর। প্রধান কৃষি ফসল হলো ধান। ধান ছাড়াও আরও নানা ধরনের ফসল এর চাষ হয়। গম,ভুট্টার চাষাবাদ ধান এর পরেই। তরকারি তথা শাকসবজি উৎপাদনে এই অঞ্চল অন্যতম। প্রায় সব ধরনের আবাদি ফসল এর চাষাবাদ হয়ে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন ফল যেমন আম,জাম,কলা,লিচু তাল, নারকেল, খেজুর ইত্যাদি পাওয়া যায় ৷
নদীসমূহ
হালুয়াঘাট উপজেলায় তিনটি নদী আছে। সেগুলো হচ্ছে ভোগাই নদী, কংস নদ এবং মালিজি নদী।[4][5]
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
- প্রমোদ মানকিন -রাজনীতিবিদ, সাবেক সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী।
- আফজাল এইচ খান -রাজনীতিবিদ রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, সাংবাদিক,সাবেক সংসদ সদস্য
- টি এইচ খান -আইনজীবী, সাবেকমন্ত্রী ও সাবেক বিচারপতি। (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান।
- মাসুদ করিম-সাবেক অধিনায়ক, বাংলাদেশ জাতীয় কাবাডি দল।
- জুয়েল আরেং- বর্তমান সংসদ সদস্য, ময়মনসিংহ-১
- নাসরীন জাহান:কথা শিল্পী।
- সালমা আক্তার - কন্ঠ শিল্পী।
- এ এস এম আলী কবীর: সাবেক সচিব।
- আহাম্মদ আলী মাস্টার': শিক্ষক, সমাজসংস্কারক, , রাজনীতি বিদ
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে হালুয়াঘাট উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫।
- "ইউনিয়নসমূহ - হালুয়াঘাট উপজেলা"। haluaghat.mymensingh.gov.bd। জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২৭ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০২০।
- বাংলাদেশ ব্যাংক ময়মনসিংহ অফিস উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক গ্রন্থ, হাওর জঙ্গল মোষের শিং (১৬ জানুয়ারি ২০১৩)। যুদ্ধদিনে ময়মনসিংহ - সাযযাদ কাদির। বাংলাদেশ: ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স বাংলাদেশ ব্যাংক। একের অধিক
|লেখক1=
এবং|শেষাংশ1=
উল্লেখ করা হয়েছে (সাহায্য); - ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৪০০, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯।
- মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৬০৭। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।