হাফিজুর রহমান ওয়াসিফ দেহলভি
হাফিজুর রহমান ওয়াসিফ দেহলভি (১০ ফেব্রুয়ারি ১৯১০ - ১২ মার্চ ১৯৮৭) ছিলেন একজন ভারতীয় মুসলিম পণ্ডিত, আইনবিদ, সাহিত্য সমালোচক এবং উর্দু ভাষার কবি, যিনি ১৯৫৫ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত মাদ্রাসা আমিনিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়ার অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন[2][3] এবং আদাবি ভুল ভুলাইয়ান, উর্দু মাসদার নামা এবং তাযকিরাহ-ই-সাইল-এর মতো গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। তিনি তার পিতা কেফায়াতুল্লাহ দেহলভির ধর্মীয় নির্দেশনা হিসেবে কিফায়াত আল-মুফতি নয় খণ্ডে সংকলন করেছিলেন।
মাওলানা, মুফতি হাফিজুর রহমান ওয়াসিফ দেহলভি | |
---|---|
মাদ্রাসা আমিনিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়ার ৪র্থ অধ্যক্ষ | |
কাজের মেয়াদ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫ – ১৯৭৯ | |
পূর্বসূরী | আহমদ সাইদ দেহলভী[1] |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ১২ মার্চ ১৯৮৭ ৭৭) | (বয়স
ধর্ম | ইসলাম |
উল্লেখযোগ্য কাজ | উর্দু মাসদার নামা, জার-ই গুল |
যেখানের শিক্ষার্থী | মাদ্রাসা আমিনিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া |
জীবনী
হাফিজুর রহমান ওয়াসিফ দেহলভি ১৯১০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি শাহজাহানপুরে জন্মগ্রহণ করেন।[4] তিনি ভারতের বড় মুফতি কেফায়াতুল্লাহ দেহলভির ছোট ছেলে।[4][5] তিনি তার বাবা কেফায়াতুল্লাহ দেহলভি স , খুদা বখশ এবং আবদুল গফুর আরিফ দেহলভি মতো পণ্ডিতদের কাছে মাদ্রাসা আমিনিয়ায় পড়াশোনা করেন।।[6] তিনি হামিদ হোসেন ফরিদাবাদি এবং মুন্সী আবদুল গণির কাছে ইসলামী ক্যালিগ্রাফিতে অধ্যয়ন করেন।[7]
ওয়াসিফ ছিলেন একজন ক্যালিগ্রাফার, সাহিত্য সমালোচক, কবি এবং একজন ইসলামী আইনবিদ।[8][9] ১৫ বছর বয়সে তিনি ফার্সি ভাষায় কবিতা লিখতে শুরু করেন। উর্দুতে তাঁর প্রথম দিকের একটি কবিতা ছিল হাকিম আজমল খান সম্পর্কে মার্সিয়া, যা আল-জমিয়াতের ১৯২৮ সালের ২২ জানুয়ারীর সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছিল।[10] তিনি গজল, নাজম, কাসিদা, মুসাদ্দাস এবং উর্দু কবিতার অন্যান্য ধারাগুলিতে লিখেছিলেন।[10] তিনি কবিতায় সাইল দেহলভি এবং নূহ নরভীর ছাত্র ছিলেন।[11][12] জামিল মেহেদি বলেন, "জিগর মোরাদাবাদির পরে ওয়াসিফই একমাত্র কবি, যিনি ক্যালিগ্রাফির উপর সমান অধিকারী। যদি তিনি কবি না হতেন, তাহলে তিনি একজন মহান ক্যালিগ্রাফার হতেন।"[9]
ওয়াসিফ দিল্লি সরকারের শিক্ষা বিভাগে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।[1] ১৯৩৬ সালে, তার বাবা তাকে কুতুব খানা রহিমিয়ার ম্যানেজার বানিয়েছিলেন।[1] তিনি ১৯৫৩ সালে মাদ্রাসা আমিনিয়ার উপাধ্যক্ষ নিযুক্ত হন।[1] তিনি ১৯৫৫ সালের সেপ্টেম্বরে অধ্যক্ষ হন এবং ১৯৭৯ সালে পদত্যাগ করেন।[13] ১৯৮৭ সালের ১২ মার্চ দিল্লিতে তিনি মারা যান।[5]
সাহিত্য কার্ম
ওয়াসিফ তার পিতা কেফায়াতুল্লাহ দেহলভি কর্তৃক প্রদত্ত ধর্মীয় নির্দেশনা হিসেবে কিফায়াত আল-মুফতি নয় খণ্ডে সংকলিত করেছেন।[14] পাকিস্তানি ইতিহাসবিদ আবু সালমান শাহজাহানপুরী এটিকে তাঁর প্রধান একাডেমিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং জীবনযাপনের কাজ হিসেবে গণ্য করেছেন। তার অন্যান্য কাজগুলো হলো:[15]
- আদাবা ভুল ভুলাইয়ান: জাবান-ও-কাওয়াইদ ওর উর্দু ইমলা পার তানকিদ
- জামিয়াত-ই-উলামা পার এক তারিখি তাসবিরাহ (জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ-এর ইতিহাস এবং এর প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা করা একটি বই)
- সিহ লিসানি মাসদার নামা (উর্দু ক্রিয়াগুলির অভিধান তাদের আরবি এবং ফার্সি সমতুল্য)
- তাজকিরাহ-ই সাইল (সাইল দেহলভির জীবনী)
- উর্দু মাসদার নামা
- জার-ই গুল (কাব্য সংগ্রহ)
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- Muḥammad Qāsim Dehlavi, Mawlānā Ḥafīẓurraḥmān Wāsif Dehlavī, পৃষ্ঠা 24
- Muḥammad Qāsim Dehlavi, Mawlānā Ḥafīẓurraḥmān Wāsif Dehlavī, পৃষ্ঠা 28
- Noor Alam Khalil Amini, Pas-e-Marg-e-Zindah, পৃষ্ঠা 185
- Abu Salman Shahjahanpuri (২০০৫)। Mufti-e-Azam Hind (উর্দু ভাষায়)। Patna: Khuda Bakhsh Oriental Library। পৃষ্ঠা 105–106।
- Asir Adrawi (এপ্রিল ২০১৬)। Tazkirah Mashāhīr-e-Hind: Karwān-e-Rafta (উর্দু ভাষায়) (2 সংস্করণ)। দেওবন্দ: Darul Moallifeen। পৃষ্ঠা 82।
- Muḥammad Qāsim Dehlavi, Mawlānā Ḥafīẓurraḥmān Wāsif Dehlavī, পৃষ্ঠা 19
- Muḥammad Qāsim Dehlavi, Mawlānā Ḥafīẓurraḥmān Wāsif Dehlavī, পৃষ্ঠা 20
- Noor Alam Khalil Amini, Pas-e-Marg-e-Zindah, পৃষ্ঠা 177
- Muḥammad Qāsim Dehlavi, Mawlānā Ḥafīẓurraḥmān Wāsif Dehlavī, পৃষ্ঠা 22
- Muḥammad Qāsim Dehlavi, Mawlānā Ḥafīẓurraḥmān Wāsif Dehlavī, পৃষ্ঠা 44
- Noor Alam Khalil Amini, Pas-e-Marg-e-Zindah, পৃষ্ঠা 188
- Muḥammad Qāsim Dehlavi, Mawlānā Ḥafīẓurraḥmān Wāsif Dehlavī, পৃষ্ঠা 45
- Muḥammad Qāsim Dehlavi, Mawlānā Ḥafīẓurraḥmān Wāsif Dehlavī, পৃষ্ঠা 25–26
- Noor Alam Khalil Amini, Pas-e-Marg-e-Zindah, পৃষ্ঠা 210
- Noor Alam Khalil Amini, Pas-e-Marg-e-Zindah, পৃষ্ঠা 210–211