হলদিয়া মাল্টি-মোডেল টার্মিনাল
হলদিয়া মাল্টি মোডেল টার্মিনাল হল পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বন্দরনগরী হলদিয়ার একটি বার্জ ও ছোট জাহাজের জন্য নির্নিওমান টার্মিনাল।টার্মিনারটি হলদিয়া বন্দরের কাছেই হুগলি নদীতে নির্মিত হচ্ছে। এই টার্মিনালটি ৬১ একর জমি নিয়ে গড়ে ওঠছে। টার্মিনালটি একটি নদী বন্দর হিসাবে গড়ে তোলা হবে। এই টার্মিনাল নির্মান করছে ভারতীয় অভ্যান্তরিন জলপথ কর্তৃপক্ষ পশ্চিমবঙ্গ ও কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট এর সাহায্যে। এই টার্মিনালটি নির্মিত হলে হলদিয়া থেকে পন্য সহজেই বারানসী পর্যন্ত পাঠানো যাবে জলপথে।[1]
হলদিয়া মাল্টি মোডেল টার্মিনাল | |
---|---|
![]() নির্মানাধীন হলদিয়া মাল্টি মোডেল টার্মিনাল | |
অবস্থান | |
দেশ | ![]() |
অবস্থান | হলদিয়া,পূর্ব মেদিনীপুর জেলা,পশ্চিমবঙ্গ |
বিস্তারিত | |
চালু | ২০২০ (আনুমানিক) |
পরিচালনা করে | আভ্যন্তরীণ জলপথ পরিবহন সংস্থা |
মালিক | ভারত সরকার |
পোতাশ্রয়ের ধরন | অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর |
উপলব্ধ নোঙরের স্থান | ২ টি |
জলের গভীরতা | ৮ মিটার (২৬ ফু) |
প্রধান পণ্য দ্রব্য | ফ্লাই অ্যাস, ভোজ্য তেল,কয়লা |
হলদিয়ায় মাল্টিমোডাল টার্মিনালটি হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সে ৭১.১৬৬ একর জমিতে (মূল টার্মিনালের জন্য ৬১ একর এবং রেল যোগাযোগের জন্য ১০.১৬৬ একর) দুই ধাপে নির্মিত হচ্ছে। প্রথম ধাপে, জলভাগের কাজগুলি, প্রধানত জেটি এবং সম্পর্কিত সুবিধা সরবরাহ করা হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপে, উপকূলীয় নির্মাণ এবং রেল যোগাযোগের সাথে প্রথম পর্যায়ের অবকাঠামো ছাড়িয়ে টার্মিনালের অবকাঠামোটি সম্প্রসারণ করা হবে। সমাপ্তির পরে, টার্মিনালের পণ্য পরিবহনের বার্ষিক ক্ষমতা হবে ৩.০৭ মিলিয়ন টন।[2]
পেক্ষাপট
সড়ক পথ ও রেলপথের তুলনায় জলপথে পনওয পরিবহনের খড়চ কম হওয়ায় ভারত সরকার জলপথে পন্য পরিবহনের সিদ্ধান্ত নেয়। এর জন্য সরকার ঘোষণা করে হলদিয়া থেকে এলাহাবাদ পর্যন্ত জলপথে পন্য পরিবহন করা হবে। এর জন্য সরকার হুগলি ও গঙ্গা নদীতে ছোট জাহাজ বা বার্জ চলাচলের জন্য পরিকাঠাও গড়ে তুলতে শুরু করে। সরকার থেকে বলা হয় জলপথে পন্য পরিবহনের জন্য হলদিয়া সাহেবগঞ্জ ও বারানসীতে টার্মিনাল গড়া হবে। এই লক্ষ্যে হলদিয়াতে মাল্টি মোডেল টার্মিনাল নির্মান শুরু হয়।
ইতিহাস
৬ নভেম্বর ২০১৭ সালে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় হলদিয়া মাল্টি-মোডেল টার্মিনালের নির্মাণের জন্য উপকূলীয় নিয়ন্ত্রণ অঞ্চলের ছাড়পত্র প্রদান করে। ₹৪০.২২ কোটি টাকা ব্যয়ে হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সের ৬১ একর জমিটি কলকাতা বন্দর ট্রাস্টের কাছ থেকে ৩০ বছরের ইজারা নেওয়া হয় এবং ২৩ এপ্রিল ২০১৮ সালে ইজারা নিবন্ধিত হয়।
স্থায়ী অর্থ কমিটি ১৭ অগাস্ট ২০১৬ থেকে ৫ অক্টোবর ২০১৬ সাল প্রকল্পের পর্যন্ত মূল্যায়ন করে। মূল্যায়ন করার পরে আনুমানিক ব্যয় ধরা হয় ₹৪৯৫ কোটি টাকা। ৩০ জুন ২০১৭ সালে, আইটিডি সিমেন্টেশন ইন্ডিয়া লিমিটেড'কে কাজের চুক্তি প্রদান করা হয়। জুলাই ২০১৭ সালে, প্রকল্পটি শুরু হয়। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে প্রকল্পটি সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে, ৩১ জানুয়ারি ২০২০ সালের হিসাবে ₹৩৫১.০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের ৭৮.২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
নির্মাণ ব্যয়
মাল্টিমোডাল টার্মিনালের নির্মাণের আনুমানিক মোট ব্যয় ৫৯৫.৩৬ কোটি টাকা, যার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৫১৭.৩৬ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় পর্যায়- রেল যোগাযোগ সহ: ৭৮.০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
পন্য পরিবহন
পশ্চিমবঙ্গে প্রস্তাবিত হলদিয়া বহু উদ্দেশ্যসাধক টার্মিনালটি পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে পণ্য পরিবহনের একটি প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠবে।আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে ৫.৯২ এমএমটিপিএ মাল পরিবহনের প্রতিশ্রুতি ও সম্ভাবনা রয়েছে এই টার্মিনালটির। যে সমস্ত প্রধান প্রধান পণ্য এই টার্মিনালটির মাধ্যমে পরিবহন করাহবে তার মধ্যে রয়েছে – ফ্লাই অ্যাশ, বনস্পতি তেল, সিমেন্ট ইত্যাদি। [3]
তথ্যসূত্র
- "খরচ-ঝঞ্ঝাট কমিয়ে নদীপথই হিট"। এইসময়। ২৩ জুন ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৭।
- "Status of the Major Projects of Inland Waterways Authority of India PROJECT DESCRIPTION: JAL MARG VIKAS PROJECT FOR CAPACITY AUGMENTATION OF NAVIGATION ON NATIONAL WATERWAY-1"। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০২০।
- "হলদিয়ায় নতুন পরিবহণ টার্মিনাল গড়ে তোলার উদ্যোগ : অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ-সুবিধা প্রসারের বিশেষ সম্ভাবনা"। ২৩ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৭।