হরিশংকর জলদাস

হরিশংকর জলদাস (জন্ম: ০৩মে, ১৯৫৩) বাংলাদেশের একজন ঔপন্যাসিক। লিখেছেন অনেক উপন্যাস। জেলেদের জীবনের উপর তিনি উচ্চতর গবেষণা করেছেন এবং লিখেছেন একাধিক বই। ২০১১ সালে তিনি সৃজনশীল শাখায় প্রথম আলো বর্ষসেরা বই পুরস্কার পেয়েছেন।[1] ২০১৯ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।[2]

হরিশংকর জলদাস
২০১১ সালে প্রথম আলো বর্ষসেরা বই অনুষ্ঠানে জলদাস
জন্ম
হরিশংকর জলদাস

(1953-05-03) মে ৩, ১৯৫৩
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ববাংলাদেশী
শিক্ষাপিএইচডি
মাতৃশিক্ষায়তনচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
পেশা
  • ঔপন্যাসিক
  • ছোটগল্পকার
কর্মজীবন২০০১বর্তমান

প্রাথমিক জীবন

হরিশংকর জলদাস ১৯৫৩ সালের ৩ মে চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গা গ্রামের এক জেলে পল্লিতে জন্ম গ্রহণ করেন। তার শৈশব এবং কৈশোরের পুরোটা কেটেছে পতেঙ্গার কৈবর্তপাড়ায়। গ্রামের পাঠশালায় তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তিনি সেই জেলেপাড়ার প্রথম হাইস্কুল পড়ুয়া ছাত্র। তার বাবা যুধিষ্ঠির জলদাস পেশায় ছিলেন জেলে। বংশের প্রথম শিক্ষিত বানাবার স্বপ্ন দেখে যুধিষ্ঠির তাকে স্কুলে পাঠান। শৈশবে পরিবারের অভাব মেটাতে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন বর্তমানে বাংলার অধ্যাপক ড. হরিশংকর জলদাস।

শিক্ষাজীবন

গ্রাম থেকে দুই মাইল দূরে আদাবস্যার নামে পরিচিত দেবেন্দ্রলাল দে'র পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে শিক্ষাজীবনের শুরু। তিনি পতেঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়ে ১৯৬৬ সালে ভর্তি হয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করে ১৯৭১ (পরীক্ষা হয় ১৯৭২ সালে) সালে এসএসসি পাশ করেন। এরপর চট্টগ্রাম কলেজচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে তিনি ‘নদীভিত্তিক বাংলা উপন্যাস ও কৈবর্ত জনজীবন’ বিষয়ে গবেষণা করে ১৯৮২ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

ব্যক্তিগত ও কর্মজীবন

হরিশংকর জলদাস পেশাগত জীবনে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান।

সাহিত্যকর্ম

কসবি

'কসবি বাঙালি লেখক হরিশংকর জলদাস রচিত একটি বাংলা উপন্যাস। ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সালে বাংলাদেশের অবসর প্রকাশনা সংস্থা, ঢাকা থেকে এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়,[3] পরবর্তীতে শুদ্ধস্বর থেকে এর একটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। উপন্যাসের মূল উপজীব্য বিষয় চট্টগ্রাম অঞ্চলের স্ট্র্যান্ড রোডের সাহেবপাড়া নামক স্থানকে কেন্দ্র করে আবর্তিত, যেখানে গণিকালয়ে গড়ে ওঠেছে দেহজীবীদের জীবন-চরিত। উপন্যাসের মূল চরিত্র দেবযানী, সাহেবপাড়ার একজন নামি দেহজীবী। আপাতভাবে উপন্যাসটি সতেরটি অধ্যায়ে বিভক্ত।

গ্রন্থতালিকা

উপন্যাস

  • দহনকাল (২০১০)
  • কসবি (২০১১)
  • জলপুত্র (২০১২)
  • মহীথর
  • রামগোলাম (২০১২)
  • মোহনা (২০১৩)
  • হৃদয়নদী (২০১৩)
  • আমি মৃণালিনী নই (২০১৪)
  • হরকিশোরবাবু (২০১৪)
  • প্রতিদ্বন্দ্বী (২০১৪)
  • এখন তুমি কেমন আছ (২০১৫)
  • কোনো এক চন্দ্রাবতী (২০১৫)
  • সেই আমি নই আমি (২০১৬)
  • অর্ক (২০১৭)
  • ইরাবতী (২০১৭)
  • রঙ্গশালা (২০১৭)
  • প্রস্থানের আগে (২০১৯)
  • সুখলতার ঘর নেই (২০১৯)
  • মৎস্যগন্ধা (২০২০)

গল্প

  • প্রান্তজনের গল্প (২০২১)
  • মনোজবাবুদের বাড়ি (২০২০)
  • আহব ইদানীং (২০২০)
  • আছে তো দেহখানি (২০২০)
  • অনার্য অর্জুন (২০১৯)
  • সপ্তর্ষি (২০১৭)
  • ক্ষরণ (২০১৭)
  • কাঙাল (২০১৬)
  • চিত্তরঞ্জন অথবা যযাতির বৃত্তান্ত (২০১৬)
  • মাকাল লতা (২০১৫)
  • লুচ্চা (২০১২)
  • জলদাসীর গল্প (২০১১)

প্রবন্ধ

  • বাংলা সাহিত্যের নানা অনুষঙ্গ (২০১২)
  • জীবনানন্দ ও তাঁর কাল (২০১০)
  • লোকবাদক বিনয়বাঁশি (২০০৪)
  • কবি অদ্বৈত মল্লবর্মণ এবং (২০০২)
  • ছোটগল্পে নিম্নবর্গ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (২০০২)
  • ধীবরজীবনকথা (২০০১)

আত্মজীবনী

  • নোনাজলে ডুবসাঁতার (২০১৮)
  • নিজের সঙ্গে দেখা (২০১২)
  • কৈবর্তকথা (২০১১)

ভ্রমণকাহিনী

  • নতুন জুতোয় পুরনো পা (২০১৯)

সন্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৬ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০২০-০৬-১০ তারিখে। পুরস্কার পেল দহনকালবাংলাদেশের গণসংগীত। তারিখ ০৮-০১-২০১১
  2. "একুশে পদক ২০১৯ পাচ্ছেন ২১ বিশিষ্ট নাগরিক"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
  3. মহি মুহাম্মদ (এপ্রিল ১, ২০১১)। "'কসবি' গণিকাদের জীবনকাব্য"দৈনিক জনকণ্ঠঢাকা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৯, ২০১৭
  4. "প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৬"। ২০২০-০৬-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-১২
  5. "বাংলা একাডেমির বিভিন্ন পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা"। ১১ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১৯

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.