স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশের একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এটি পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। এর পূর্ব নাম মিটফোর্ড হাসপাতাল। ১৮৫৫ সালের পূর্বে এটি ওলন্দাজ কুঠি ছিল যা ব্যবসার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হত।[1] ১৮৫৮ সালে এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকার কালেক্টর এবং পরবর্তীতে ঢাকার তৎকালীন সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি রবার্ট মিটফোর্ড এর রেখে যাওয়া টাকা হতে তার ট্রাস্টীগণ এই হাসপাতাল নির্মাণ করেন।
মিটফোর্ড হাসপাতাল | |
![]() | |
ধরন | সরকারি মেডিকেল কলেজ |
---|---|
স্থাপিত | ১৮৭৫ |
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ | ২০০ |
শিক্ষার্থী | ১,৫০০ |
অবস্থান | , , |
শিক্ষাঙ্গন | শহুরে, ২.৮ একর (১১,০০০ মি২) |
ওয়েবসাইট | www |
![]() |
ইতিহাস

মিটফোর্ড হাসপাতাল তৈরি উদ্যোগ নেয়া হয় প্রথম ১৮২০ সালে। ঢাকার সেসময়ের কালেক্টর রবার্ট মিটফোর্ড এই উদ্যোগ নেন। ১৮৩৬ সালে তার মৃত্যুর সময়ে তিনি তার সম্পত্তি এই হাসপাতালের জন্য দান করে যান। পরে লর্ড ডালহৌসি এই সম্পত্তির উপর হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। তার দানকৃত সম্পত্তির মূল্য ছিল তখনকার ১,৬০,০০০ টাকা। আরও পরে ১৮৫৮ সালের পহেলা মে মিটফোর্ড হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। আরো অনেকে তখন এই হাসপাতালের জন্য অর্থ সাহায্য প্রদান করেন। চার বছর ধরে এর নির্মাণ কাজ চলেছিল। একটি মহিলা এবং দুইটি পুরুষ ওয়ার্ড নিয়ে এর শুরু। হাসপাতালটিতে প্রথমে বেড ছিল ৯২ টি।
১৯৩০ সালের ২৯ শে আগস্ট এই হাসপাতালে ভর্তি জল পুলিশ মি. বার্ট কে দেখতে আসেন ঢাকার তৎকালীন আইজি মি. লোম্যান । তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশ অফিসার মি. হডসন। দেখা করে যখন তাঁরা বেরোতে যাবেন, সেই সময় হাসপাতাল চত্বরেই তাদের দুজনকে গুলিবিদ্ধ করেন এই কলেজের ছাত্র তথা বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের একজন সদস্য, বিপ্লবী বিনয় বসু। বিনয়ের গুলিতে মারা যান লোম্যান ও চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান হডসন।
কলেজ প্রতিষ্ঠা
১৮৭৫ সালের পহেলা জুলাই ঢাকা মেডিকেল স্কুল-এর যাত্রা শুরু শুরু হয়। ১৮৮৭ সালের ২ এপ্রিল মেডিকেল স্কুলের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। দুই বছর পর ১৮৮৯ সালের ২২ অক্টোবর এর উদ্বোধন করা হয়। ১৯০৩ সালে ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ এখানে প্রসূতি ও মহিলা বিভাগ স্থাপনের জন্য অনুদান দেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা মেডিকেল স্কুল মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত হয় এবং কলেজটির মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ নামে এর নামকরণ করা হয়। পরের বছর ১৯৬৩ সালে কলেজের নাম পরিবর্তন করে নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নামে নবাবদের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ করা হয়।
১৯৭২ সালে কলেজটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত হয় এবং ১৯৭৩ সালে এমবিবিএস কোর্সের প্রথম ব্যাচ ভর্তি হয়।
ক্যাম্পাস

কলেজটি মিটফোর্ড রোড, বাবুবাজার, ঢাকায় অবস্থিত।
এই মেডিকেল কলেজে আটটি ছাত্রাবাস রয়েছে। প্রধান ছাত্রাবাস এবং এর সম্প্রসারণ (পুরুষ), বিডিএস ছাত্রাবাস (পুরুষ), আলাউদ্দিন ছাত্রাবাস (পুরুষ), তিনটি মহিলা ছাত্রীনিবাস, ইন্টার্নি ছাত্রাবাস (পুরুষ) এবং ইন্টারটি ছাত্রীনিবাস (মহিলা)।
কোর্সসমূহ
স্নাতকোত্তর
- এমডি (অভ্যন্তরীণ ঔষধ);
- এমডি (নিউরো মেডিসিন);
- এমডি (শিশুচিকিত্সা);
- এমডি (নেফ্রোলজি)
- এমডি (হৃদদ্বিজ্ঞান);
- এমডি (রেডিওলজি এবং ইমেজিং);
- এমডি (প্যাথোলজি);
- এমডি (প্রাণরসায়ন);
- এমএস (সাধারণ অস্ত্রোপচার);
- এমএস (ওফথমোলজি);
- এমএস (অতর্হিনোল্যারিঙ্গলজি);
- এমএস (ইউরোলজি);
- এমএস (গাইনী এবং ওবিএস);
- এম-ফিল (অ্যানাটমি);
- এম-ফিল (শরীরবিদ্যা);
- এম-ফিল (ফার্মাকোলজি);
- এম-ফিল (অণুজীববিজ্ঞান);
- এমপিএইচ- কমিউনিটি মেডিসিন;
- ডিপ্লোমা কার্ডিওলজি;
- গাইনী এবং ওবিএসে ডিপ্লোমা;
- অর্থোপেডিক সার্জারিতে ডিপ্লোমা;
- শিশু স্বাস্থ্যে ডিপ্লোমা;
- এনেস্থেসিওলজিতে ডিপ্লোমা;
- স্নায়ুবিজ্ঞানে ডিপ্লোমা;
- ডিডিভি;
- ফরেনসিক মেডিসিনে ডিপ্লোমা।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৭ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১।
বহিঃসংযোগ
- প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
- বাংলাপিডিয়ায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ
- ঐতিহাসিক ওলন্দাজ কুঠিতে হাসপাতাল বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৭ জুন ২০১৮, পেছনের পাতা, কলাম ৮।