স্নায়ুতন্ত্র

স্নায়ুতন্ত্র প্রাণীদেহের ঐচ্ছিক ও অনৈচ্ছিক কাজের সমন্বয় সাধন করে এবং দেহের বিভিন্ন অংশে সংকেত প্রদান করে। স্নায়ু টিস্যু অতি ক্ষুদ্র অর্গানিজম রূপে প্রায় ৫৫০-৬০০ মিলিয়ন বছর পূর্বে আবির্ভূত হয়। অধিকাংশ প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান দুটি অংশ আছে -কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্রপ্রান্তীয় স্নায়ু তন্ত্র। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নাকাণ্ড নিয়ে গঠিত। প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র স্নায়ু দিয়ে গঠিত, যা দীর্ঘ, সরু, নলাকার স্নায়ুগুচ্ছ, অ্যাক্সন দ্বারা আবৃত। এটি কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্রকে শরীরের প্রতিটি অংশে সংযোগ করে।

Nervous system
মানব স্নায়ু তন্ত্র
বিস্তারিত
শনাক্তকারী
লাতিনsystema nervosum
মে-এসএইচD009420
টিএ৯৮A14.0.00.000
এফএমএFMA:7157
শারীরস্থান পরিভাষা

যে তন্ত্রের সাহায্যে প্রাণী উত্তেজনায় সাড়া দিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে, দৈহিক মানসিক ও শারীরবৃত্তীয় কাজের সমন্বয় ঘটায়, দেহের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ সাধন করে এবং তাদের কাজের মধ্যে সংবাদ আনয়ন ও নিয়ন্ত্রণ করে তাকে স্নায়ুতন্ত্র বলে।

স্নায়ুতন্ত্রের বিন্যাস
  1. কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র
    1. মস্তিষ্ক
    2. সুষুম্না কাণ্ড
  2. প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র
    1. করোটিন-সুষুম্ন্যা স্নায়ু
    2. স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র।

গঠন

নিউরন নামক কোষ দ্বারা গঠিত।

নিউরন

নিউরন স্নায়ুতন্ত্র গঠনকারি একক। মানুষের মস্তিষ্কে ১০০ বিলিয়ন নিউরন থাকে। মানুষের সুষুম্নাকান্ডে ১৩.৫ মিলিয়ন নিউরন থাকে। নিউরনের তিনটি অংশ আছে। যেমন- কোষদেহ , অ্যাক্সন এবং ডেনন্ড্রন

  • কোষদেহ

কোষদেহ নিউরনের প্রধান অংশ।কোষদেহ বিভিন্ন আকৃতির হয়।যেমন- গোলাকার,ডিম্বাকার বা নক্ষত্রাকার।কোষদেহ কোষ-আবরণী,সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াস দ্বারা গঠিত।এই কোষে সেন্ট্রিওল থাকে না।তাই এরা অন্যান্য কোষের মত বিভাজিত হয়না।

  • অ্যাক্সন

কোষদেহ থেকে সৃষ্ট লম্বা সুতার মত অংশকে অ্যাক্সন বলে। অ্যাক্সনের যে প্রান্তে কোষদেহ থাকে তার বিপরীত প্রান্ত থেকে শাখা বের হয়। সাধারনত একটি নিউরনে একটি মাত্র অ্যাক্সন থাকে।

  • ডেনন্ড্রন

কোষদেহের চারদিক থেকে সৃষ্ট শাখাগুলোকে ডেনড্রন বলে। এগুলো বেশি লম্বা হয়না। ডেনড্রন থেকে সৃষ্ট শাখাগুলোকে ডেনড্রাইট বলে। এদের দ্বারা স্নায়ুতাড়না নিউরনের দেহের দিকে পরিবাহিত হয়।

গ্লিয়াল কোষ

গ্লিয়া (অথবা Glia) কোষ শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ "Glue" থেকে। এগুলি কাঠামো দান করতে এবং নিউরন কে সাহায্য করতে বিশেষভাবে তৈরি।স্নায়ুতন্ত্রের গঠনে নিউরনের পাশাপাশি গ্লিয়াল কোষ অবস্থান করে। গ্লিয়াল কোষ নিউরন নয়। এগুলো নিউরনের পাশাপাশি অবস্থান করে ইনসুলেটর(বিদ্যুত অপরিবাহি অন্তরক) হিসেবে কাজ করে।নিউরনগুলোকে একসাথে আঠারো মত লাগিয়ে রাখে।বিভিন্ন ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া,ভাইরাস এবং বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ থেকে রক্ষা করে। গ্লিয়াল কোষ স্নায়ুতন্তু তৈরি করেও সাহায্য করে।

কাজ

নিউরন এবং সিন্যাপ্স

স্নায়ুকোষগুলো দেহে জালের মত ছড়িয়ে থাকে। একটি স্নায়ুকোষের এক্সনের সাথে অন্য একটি স্নায়ুকোষের ডেনড্রাইট মিলিত হয়। মিলিত হওয়ারে স্থানকে সিন্যাপ্স বলে। সিন্যাপ্সের মাধ্যমেই স্নায়ুতাড়না এক স্নায়ুকোষ থেকে অন্য স্নায়ুকোষে পরিবাহিত হয়।

উৎপত্তি

ভ্রূণের এক্টোডার্মে।

তথ্যসূত্র

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.