সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম স্বনামধন্য বিদ্যালয় ও উচ্চবিদ্যালয়। ১৯৫৪ সালে মার্কিন খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারকরা এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। তখন এর নাম ছিল "সেন্ট যোসেফ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল"। এর প্রথম ক্যাম্পাস ছিলো পুরান ঢাকার নারিন্দায়, পরে এটি ১৯৬৫ সালে ঢাকার আসাদ এভিনিউতে স্থানান্তরিত করা হয়। ২০০৪ সালে বিদ্যালয়ের ৫০ বছরপূর্তি উৎযাপিত হয়।
সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় | |
---|---|
অবস্থান | |
তথ্য | |
বিদ্যালয়ের ধরন | ক্যাথলিক মিশনারি বিদ্যালয় মাধ্যমিক |
নীতিবাক্য | প্রজ্ঞা ও পুণ্যের সাথে হও আগুয়ান (Advancing in wisdom and virtue) |
ধর্মীয় অন্তর্ভুক্তি | খ্রিস্টান |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯ মার্চ ১৯৫৪ |
অবস্থা | সক্রিয় |
বিদ্যালয় বোর্ড | ঢাকা শিক্ষা বোর্ড |
ইআইআইএন | ১০৩৫৬৪ |
ক্যাম্পাস | ৯৭ আসাদ এভিনিউ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা |
ক্রীড়া | |
ওয়েবসাইট | sjs.edu.bd |
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে এটিকে ইংরেজি থেকে বাংলা মাধ্যমে রূপান্তর করা হয়। বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায়ে ইংরেজি, বাংলা উভয় মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হয়। "সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়" নামকরণের পর থেকে এখানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাদান করা হচ্ছে। প্রতি বছর এর কলেজ শাখা থেকে ৬৫০-৭৫০ জন এবং স্কুল শাখা থেকে ১৬৫ জন শিক্ষার্থী বের হয়। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা "যোসেফাইট" নামে পরিচিত।
বিদ্যালয়ের নিজস্ব সুবিশাল খেলার মাঠ, বাস্কেটবল কোর্ট ও ভলিবল কোর্ট এবং টেবিল টেনিস কোর্ট রয়েছে।
ইতিহাস
ঢাকার ক্যাথলিক আর্চডিওসেসের অধীনে হলিক্রস-এর ধর্মসভার মার্কিন মিশনারি ব্রাদার জুড কর্তৃক পুরান ঢাকার নারিন্দার ১৬ মনির হোসেন সড়কে ১৯৫৪ সালে সেন্ট জোসেফ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্কুলটি ১৯৬৫ সালে বর্তমান স্থান মোহাম্মদপুরে স্থানান্তরিত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে সরকার সকল ইংরেজি মাধ্যম স্কুলকে বাংলা মাধ্যমে পরিবর্তনের আদেশ জারি করে। এ সময় এটি ঢাকা বোর্ডের অধীনে নিবন্ধিত হয়। এর আগে স্কুলটি ক্যাম্ব্রিজ স্কুল হিসেবে চালু ছিল। যদিও এখন পর্যন্ত ইংরেজি শিক্ষার স্কুল হিসেবে এটি পরিচিত আছে। ১৯৯৯ সালে এ স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক (বিজ্ঞান) শাখা খোলা হয়। পর্যায়ক্রমে বাণিজ্য ও কলা শাখাও খোলা হয়।[1]
স্থপতি
আমেরিকার বিখ্যাত স্থপতি, 'রবার্ট বুগি বিদ্যালয়টির স্থাপনাকার্য পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও তিনি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ও নটরডেম কলেজ-এর ডিজাইনার।[2]
প্রাতিষ্ঠানিক পরিচিতি
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় পর্যায়ের জন্য প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০১ সাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করেছে। মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান ও বাণিজ্য উভয় বিভাগ চালু রয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে মানবিক বিভাগও রয়েছে। সমস্ত স্তরে বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভার্সন রয়েছে, প্রতিটি শ্রেণির জন্যই বাংলা এবং ইংরেজি ভার্সন রয়েছে। এছাড়াও, ২০১৭ সাল থেকে, এটি কেমব্রিজ পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে সেন্ট যোসেফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল নামে বিদ্যালয়ের ইংরেজি মাধ্যমে পাঠদান পুনরায় চালু করেছে।
স্কুল পর্যায়
এ প্রতিষ্ঠানটি কেবল ছেলেদের জন্য। প্রতিবছর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে শুধু তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করানো যায়।তিনটি শাখায় মোট ১৮০ জন ছাত্র প্রতিবছর ভর্তি হয়
কলেজ পর্যায়
মহামান্য আদালতের রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে ২০১৫ সাল থেকে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে এই কলেজে ভর্তি হতে হয়। লিখিত ও মৌখিক- দুই ধাপে এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।[3]
ড্রেস কোড
কলেজের মনোগ্রামযুক্ত সাদা শার্ট, অ্যাশ প্যান্ট, কালো কেডস/সুজ, মনোগ্রামযুক্ত ব্লু সোয়েটার (শীতকাল)।
কৃতি শিক্ষার্থী
- মোহাম্মদ ওমর এজাজ রহমান — (জন্ম: ১০ অক্টোবর ১৯৫৭) একজন বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ, সাইকিয়াট্রিস্ট এবং এপিডেমিওলজিস্ট / ডেমোগ্রাফার।
- ওমর এস. ইশরাক — একজন বাংলাদেশী-আমেরিকান ব্যবসায়িক নির্বাহী এবং জানুয়ারি ২০২০ অনুযায়ী ইন্টেলের বর্তমান চেয়ারম্যান।
- মির্জা আলী বেহরুজ ইস্পাহানি — ইস্পাহানি পরিবারের সদস্য এবং এম. এম. ইস্পাহানি লিমিটেডের (যা ইস্পাহানি গ্রুপ নামে পরিচিত) চেয়ারম্যান ছিলেন।
- নিয়াজ মোরশেদ — বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার সর্বপ্রথম দাবার গ্র্যান্ডমাস্টার।
- জিয়াউর রহমান — বাংলাদেশের দ্বিতীয় দাবার গ্র্যান্ডমাস্টার।
- রিফাত বিন সাত্তার - বাংলাদেশের তৃতীয় দাবার গ্র্যান্ডমাস্টার।
- তাহসান রহমান খান — গায়ক, গীতিকার, সুরকার, গিটারবাদক এবং কী-বোর্ড বাদক।
- শাহরিয়ার নাফীস — বাংলাদেশী ক্রিকেট খেলোয়াড়, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে ২০০৫ সালে অভিষেক ঘটে।
- আন্দালিব রহমান — বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য এবং ঢাকায় ব্রিটিশ স্কুল অব বিজনেসের অধ্যক্ষ।
- অরুণ সাহা - অভিনেতা ও সঙ্গীতশিল্পী
- তারেক রহমান- রাজনীতিবিদ
- লিঙ্কন- সঙ্গীতশিল্পী
- হিমেল আশরাফ
- আনিসুল হক- আইনমন্ত্রী এবং রাজনীতিবিদ
- নাভিদ মাহবুব- অভিনেতা ও কমেডিয়ান।
- জিতু আহসান-অভিনেতা
- শহীদুল জহির (১১ সেপ্টেম্বর ১৯৫৩ - ২৩ মার্চ ২০০৮) - বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, গল্পকার এবং সরকারি আমলা।
বহিঃসংযোগ
তথ্যসূত্র
- http://bn.banglapedia.org/index.php?title=%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%9F_%E0%A6%9C%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%AB_%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%87_%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B2_%E0%A6%93_%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%9C
- https://peoplepill.com/people/robert-boughey/
- "ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারবে নটর ডেম, সেন্ট যোসেফ, হলিক্রস কলেজ"। দৈনিক প্রথম আলো। ৯ জুন ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-০১।