সেতার

সেতার (হিন্দি: /সংস্কৃত: सितार, উর্দু: ستار) বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ভারত উপমহাদেশীয় বাদ্যযন্ত্র। এটি অনেকাংশে তানপুরার ন্যায় দেখতে। তুম্বা (লাউ) ও ডান্ডি সমন্বয়ে সেতারে কম-বেশি ১৭টি তার থাকতে পারে। ৩টি থাকে বাজানোর জন্য যেগুলো মা সা পা তে সুর বাঁধা থাকে। এরপর চতুর্থটি থাকে খরজের (বেইজ) সা তে সুর বাঁধা। এরপর থাকে কমপক্ষে ৩টি সঙ্গতকারী তার, যেগুলোকে চিকারীর তার বলে থাকে। এগুলো সা সা গা তে সুর বাঁধা থাকে। এছাড়াও ৯ থেকে ১৩টি তার থাকে মূর্ছনা ধরে রাখার জন্য। এগুলোকে তড়ফের তারও বলা হয়। উভয় শ্রেণীর তারই তুম্বার উপরিস্থিত বায়ার একপ্রান্ত হতে শুরু হয়ে ডান্ডির উপরিভাগে গিয়ে শেষ হয়। অনেকটা চাবির মতো দেখতে কুন্তি দিয়ে এ তারগুলোকে আটকে রাখা হয়।

সেতার
মিরাজ সেতার
তথ্যসমূহ
অন্য নামসিতার
শ্রেণিবিভাগ
  • Necked bowl lutes
  • String instruments
হর্নবোস্টেল-শ্যাস শ্রেণিবিন্যাস321.321-6
(Composite chordophone sounded with a plectrum)
বিকশিত১৩শ শতাব্দী
সম্পর্কিত যন্ত্র
  • Angélique
  • Archlute
  • Balalaika
  • Banjo
  • Barbat (lute)
  • Bağlama
  • Biwa
  • Bouzouki
  • Bulbul tarang
  • Charango
  • Chitarra Italiana
  • Daguangxian
  • Đàn tỳ bà
  • Dombra
  • Domra
  • Dutar
  • Electric pipa
  • Erhu
  • গীটার
  • Irish bouzouki
  • Liuqin
  • Lute
  • Mandocello
  • Mandola
  • Mandolin
  • Oud
  • Pandura
  • Pipa
  • Rubab
  • সেতার

যিনি সেতার বাজাতে জানেন তিনি সেতারি, সেতারী কিংবা সেতারবাদক নামে জনসমক্ষে পরিচিত হয়ে থাকেন।

ইতিহাস

সেতারের উৎপত্তি নিয়ে নানা মত আছে। একমতে প্রাচীনকালের ত্রিতন্ত্র বা কচ্ছপী বীণার আধুনিকতম রূপ হচ্ছে সেতার। আবার অন্যমতে বলা হয় যে বীণা যন্ত্রের অনুকরণে আমির খস্‌রু সেতার উদ্ভাবন করেছিলেন। তবে মোটামুটি গ্রহণযোগ্য ইতিহাস হলো যে, মোগল সাম্রাজ্যের শেষদিকে উপমহাদেশে সেতারের প্রচলন হয়। মোগল সম্রাটদের রাজ দরবারে পারসিয়ান ল্যূট (বীণা জাতীয় বাদ্য) বাজানো হতো। যাই হোক ত্রিতন্ত্রীর পরিবর্তে বর্তমান সাধারণ সেতারে সপ্ততন্ত্রী ব্যবহার করা হয়।

সঙ্গীত সুদশর্ণা গ্রন্থে বলা আছে যে, অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফকির আমীর খসরু (ইনি ১৩০০ শতকের সম্রাট আলাউদ্দীন খিলজীর সভাসদ সঙ্গীতজ্ঞ নন) সেতারের আবিষ্কার করেন।[1][2][3][4] এই ফকির আমীর খসরু তানসেনের বংশধর। এটাই সবর্জনস্বীকৃত যে, পারস্যের সেহতার হতেই সেতারের সৃষ্টি করা হয়েছে। এরপর হতেই সেতারের উন্নয়ন ও পরিবর্তন হয়ে আসছে। ফকির আমীর খসরুর পৌত্র মসিদ খানের হাতেও সেতারের বিকাশ এবং পরিবর্তন ঘটেছে। মূলত বাজানোর ঢঙের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই সেতারের উন্নয়ন ও পরিবর্তন ঘটেছে। পরবর্তীতে তার ছেলে বাহাদুর খানও তা বজায় রাখেন। তানসেনের আরেক বংশধর রাজা খান ১৮০০-১৮৫০ সাল সময়কালে লক্ষ্মৌতে বাস করছিলেন। তিনি সেতারকে দ্রুতগতির গৎ বাজানোর উপযোগী করেছিলেন।

তরফদার সেতার

সপ্ততন্ত্রীর সঙ্গে আরও ১১টি তরফের তার সংযোজিত করা হলে তাকে বলা হয় তরফদার সেতার। তরফদার সেতারের উপরিভাগে একটি অতিরিক্ত ছোট লাউয়ের বস থাকে।

সেতারের বিভিন্ন অংশের পরিচয়

  1. তুম্বা: নিম্নভাগের বড় গোলাকার দ্রব্যটি কে বলা হয় তুম্বা। এটি প্রকৃত পক্ষে বৃহদাকার লাউয়ের খোল।
  2. তবলী: সেগুন বা তুন কাঠের তৈরি কাষ্ঠাংশ যেটি তুম্বার উপরিভাগে লাগানো থাকে

বিখ্যাত সেতারবাদক

  • পূর্ববর্তী প্রজন্ম
    • ওস্তাদ এনায়েত খান
    • ওস্তাদ বিলায়েত খান
    • ওস্তাদ ইমরাত খান
    • পণ্ডিত রবি শংকর
    • ওস্তাদ মুস্তাক আলী খান
    • পণ্ডিত নিখিল ব্যানার্জী
    • ওস্তাদ আব্দুল হালিম জাফর খান
    • ওস্তাদ খুরশিদ খান
    • পার্থ সারথী
    • মণিলাল নাগ
    • ডঃ চন্দ্রকান্ত সরদেশমুখ
  • বর্তমান প্রজন্ম
    • বুধাদিত্য মূখার্জী
    • সুজাত খান
    • নিশাত খান
    • ইরশাদ খান
    • শহীদ পারভেজ
    • সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়
    • অনুশকা শংকর
  • পাশ্চাত্যের সেতারবাদক
    • কলিন ওয়ালকট
    • প্যাট্রিক মন্টাল
    • গিয়ানী রিচ্চিজি
    • মার্ক ডিটাওয়াস্কি
    • ব্রিজিট মেনন
    • এডওয়ার্ড পাওয়েল

তথ্যসূত্র

  1. Kapoor, Subodh (২০০২), The Indian Encyclopaedia, পৃষ্ঠা 2988, আইএসবিএন 9788177552676
  2. Allyn Miner (২০০৪)। Sitar and Sarod in the 18th and 19th Centuries। Motilal Banarsidass Publ। পৃষ্ঠা 17–24।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.