সূরা যারিয়াত

সূরা আয-যারিয়াত (আরবি ভাষায়: الذّاريات‎) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৫১ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ৬০ এবং এর রূকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ৩। সূরা আয-যারিয়াত মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।

আয-যারিয়াত
الذّاريات
শ্রেণীমক্কী সূরা
নামের অর্থবিক্ষেপকারী বাতাস
পরিসংখ্যান
সূরার ক্রম৫১
আয়াতের সংখ্যা৬০
পারার ক্রম২৫
২৬
রুকুর সংখ্যা
সিজদাহ্‌র সংখ্যানেই
শব্দের সংখ্যা৩৬০
অক্ষরের সংখ্যা১৫৪৬
← পূর্ববর্তী সূরাসূরা ক্বাফ
পরবর্তী সূরা →সূরা তূর
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ

নামকরণ

এই সূরাটির প্রথম শব্দ وَالذَّارِيَاتِ থেকে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, এটি সেই সূরা যা الحجرات (‘আয-যারিয়াত’) শব্দটি দ্বারা শুরু হয়েছে।[1]

নাযিল হওয়ার সময় ও স্থান

বিষয়বস্তু ও বর্ণনাভঙ্গী থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়, যে সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইসলামী আন্দোলনের মোকাবিলা অস্বীকৃতি, ঠাট্রা-বিদ্রুপ ও মিথ্যা অভিযোগ আরোপের মাধ্যমে অত্যন্ত জোরে শোরেই করা হচ্ছিলো ঠিকই কিন্তু তখনো জুলুম ও নিষ্ঠুরতার যাঁতাকালে নিষ্পেষণ শুরু হয়নি, ঠিক সেই যুগে এ সূরাটি নাযিল হয়েছিলো। এ কারণে যে যুগে সূরা ক্বাফ নাযিল হয়েছিলে এটিও সে যুগের নাযিল হওয়া সূরা বলে প্রতীয়মান হয়।

বিষয়বস্তুর বিবরণ

এর অধিকাংশটাই জুড়ে আছে আখেরাত সম্পর্কিত আলোচনা এবং শেষভাগে তাওহীদের দাওয়াত পেশ করা হয়েছে। সাথে সাথে মানুষকে এ বিষয়েও হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়েছে যে, নবী-রসূলদের (আ) কথা না মানা এবং নিজেদের জাহেলী ধ্যান-ধারণা আঁকড়ে ধরে একগুঁয়েমী করা সেসব জাতির নিজেদের জন্যই ধ্বংসাত্মক প্রমাণিত হয়েছে যারা এ নীতি অবলম্বন করেছিলো। এ সূরার ছোট ছোট কিন্তু অত্যন্ত অর্থপূর্ণ আয়াতসমূহে আখেরাত সম্পর্কে যে কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে, মানব জীবনের পরিণাম ও পরিণতি সম্পর্কে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন ও পরস্পর বিরোধী আকীদা-বিশ্বাস পোষণ করে। এটাই প্রমাণ করে যে, এসব আকীদা-বিশ্বাসের কোনটিই জ্ঞানগত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়। প্রত্যেকেই নিজের অনুমান ও ধারণার ভিত্তিতে নিজ নিজ অবস্থানে যে মতবাদ গড়ে নিয়েছে সেটাকেই সে তার আকীদা-বিশ্বাস বানিয়ে আঁকড়ে ধরেছে। কেউ মনে করে নিয়েছে, মৃত্যুর পরে কোন জীবন হবে না। কেউ আখেরাত মানলেও জন্মান্তর বাদের ধারণাসহ মেনেছে। কেউ আখেরাতের জীবন এবং পুরস্কার ও শাস্তির কথা বিশ্বাস করলেও কর্মের প্রতিফল থেকে বাঁচার জন্য নানা রকমের সহায় ও অবলম্বন কল্পনা করে নিয়েছে। যে বিষয়ে ব্যক্তির সিদ্ধান্ত ভুল হলে তার গোটা জীবনকেই ব্যর্থ এবং চিরদিনের জন্য তার ভবিষ্যতকে ধ্বংস করে দেয় এমন একটি বড় ও সর্বাধিক গুরুত্ববহ মৌলিক বিষয়ে জ্ঞান ছাড়া শুধু অনুমান ও ধারণার ভিত্তিতে কোন আকীদা-বিশ্বাস গড়ে নেয়া একটি সর্বনাশা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়।

এরপর অতি সংক্ষিপ্তভাবে তাওহীদের দাওয়াত পেশ করে বলা হয়েছে,,, তোমাদের স্রষ্টা তোমাদেরকে অন্যদের বন্দেগী ও দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করেননি, বরং নিজের ইবাদতের ও দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি তোমাদের মিথ্যা উপাস্যদের মত নন। তোমাদের মিথ্যা উপাস্যরা তোমাদের থেকে রিযিক গ্রহণ করে এবং তোমাদের সাহায্য ছাড়া তাদের প্রভুত্ব অচল। তিনি এমন উপাস্য যিনি সবার রিযিকদাতা। তিনি কারো নিকট থেকে রিযক গ্রহণের মুখাপেক্ষী নন এবং নিজ ক্ষমতাবলেই তাঁর প্রভুত্ব চলছে।

তথ্যসূত্র

  1. "সূরার নামকরণ"www.banglatafheem.comতাফহীমুল কোরআন, ২০ অক্টোবর ২০১০। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৫

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.