সূরা ত্বীন

সূরা আত-ত্বীন (আরবি: التين) মুসলিম ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনের ৯৫ তম সূরা। এর মোট আটটি আয়াত বা বাক্য রয়েছে। ত্বীন শব্দের অর্থ আঞ্জির বা ডুমুর। এই সূরাতে আল্লাহর উপর ঈমান (বিশ্বাস) এবং সৎকর্মশীলতার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এই সূরাতে আল্লাহ প্রদত্ত কয়েকটি নিয়ামত বা অনুগ্রহের দোহাই দিয়ে ঈমান ও সৎকাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যেহেতু মানবজাতি অনেক অনুগ্রহ দ্বারা ধন্য হয়েছে, সেহেতু তাদের উচিত আল্লাহর উপর ঈমান রাখা এবং সৎকাজ করা; নচেৎ তারা নীচ ও শাস্তিযোগ্যরূপে গণ্য হবে। [1]

আত-ত্বীন
التين
সূরা আত-ত্বীন
শ্রেণীমক্কী সূরা
নামের অর্থডুমুর, আঞ্জির
অবতীর্ণ হওয়ার সময়হযরত মোহাম্মদ এর নবুওত প্রাপ্তির শুরুর দিকে
পরিসংখ্যান
সূরার ক্রম৯৫
আয়াতের সংখ্যা
পারার ক্রম৩০
রুকুর সংখ্যা
সিজদাহ্‌র সংখ্যানেই
শব্দের সংখ্যা৩৪
অক্ষরের সংখ্যা১৫৬
← পূর্ববর্তী সূরাসূরা ইনশিরাহ
পরবর্তী সূরা →সূরা আলাক্ব
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ

নামকরণ

সূরাটির প্রথম শব্দ 'ত্বীন' শব্দটিকেই এর নাম হিসেবে নেয়া হয়েছে।[2]

নাযিল হবার সময়

এই সূরাটি মক্কা নগরীতে নাযিল (অবতীর্ণ) হয়েছে।

অনুবাদ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।[3]

০০১. শপথ আঞ্জির ও যয়তুনের,
০০২. এবং সিনাই পর্বতের,
০০৩. এবং এই নিরাপদ (মক্কা) নগরীর।
০০৪. আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে।
০০৫. অতঃপর তাকে নামিয়ে দিয়েছি নীচ থেকে নিচে।
০০৬. কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে এমন পুরস্কার যা কোনোদিন শেষ হবেনা।
০০৭. কাজেই (হে নবী!) এরপর পুরস্কার ও শাস্তির ব্যাপারে কে তোমাকে মিথ্যাবাদী বলতে পারে?
০০৮. আল্লাহ কি সকল বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বিচারক নন?

মূল বক্তব্য

এই সূরার শুরুতে আঞ্জির (ডুমুর), যয়তুন (জলপাই), সিনাই পর্বত এবং মক্কা শহরের কসম বা দোহাই দেয়া হয়েছে। আরবে সেই যুগে আঞ্জির ও জলপাই অত্যন্ত গুরুত্ববাহী দুটি ফল ছিল; খাদ্য ও অর্থকরী ফসল হিসেবে এর গুরুত্ব ছিল অসীম। সিনাই পর্বত হলো নবী হযরত মুসা এর স্মৃতিবিজড়িত স্থান। আর মক্কা ছিল নবী হযরত ইব্রাহিম এবং ইসমাইল -এর স্মৃতিবিজড়িত জায়গা। তদুপরি পবিত্র কাবা ঘরের মর্যাদার কারণে এই শহরটি নিরাপদ শহর হিসেবে তৎকালে গণ্য হত; সেখানকার অধিবাসীরা যুদ্ধ ও লুন্ঠনের আশঙ্কামুক্ত ছিল। এসকল বিষয়ের দোহাই দেওয়ার পর বলা হয়েছে, মানুষ অত্যন্ত সুন্দর গড়নে সৃষ্ট হয়েছে কিন্তু এদেরকেই আবার অত্যন্ত নিচে নামিয়ে দেয়া হবে যদি এরা স্রষ্টা ও প্রতিপালকের উপর বিশ্বাস না রাখে এবং ভাল কার্যকলাপ না করে। তদুপরি শেষ বিচারের দিন এদেরকে কঠিন বিচারের মুখোমুখিও হতে হবে। সমাপ্তিতে এও মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে যে, মহান প্রভু কখনো কারো উপর অবিচার করবেন না; শুধুমাত্র সুবিচারই করবেন। [4]

ছবি গ্যালারি

তথ্যসূত্র

  1. "সূরা ত্বীনের ব্যাখ্যা"। ২০ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১৪
  2. Surah At-Tin
  3. "at tin 95"। ১৭ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১৪
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.