সূত্রধারী নৃত্য
সূত্রধারী নৃত্য সত্রীয়া পরিবেশন কলার অন্তর্গত একটি নৃত্য শৈলী। সূত্রধার একাধারে গায়ক, নর্তক, ঘোষক এবং পরিস্থিতির ব্যাখ্যাকারী। সূত্রধারী নাচ অংকীয়া ভাওনার একটি অপবিহার্য নৃত্য। (গায়ন-বায়নের অন্তর্গত) সাধারণত বরপেটীয়া ধামালিটিকে আধার হিসাবে নিয়ে গুরুকীর্তন ভাওনা আরম্ভ হয়। সেজন্য অন্য নাচে থাকার মতো সূত্রধারী নাচের আধারিত ধামালিটি হল বরপেটীয়া ধামালি। অবশ্য অন্য উদ্দেশ্যে এই নাচ নাচার সময়ে ধামালির ধরা-বাঁধা নিয়ম থাকে না।
ধরন | শাস্ত্রীয় নৃত্য সত্রীয়া নৃত্য |
---|
পরিচয়
ভারতীয় সভ্যতায় জগতকে রঙ্গমঞ্চ, জীবনকে নাটক, জীবকে অভিনেতা/অভিনেত্রী এবং ঈশ্বরকে সূত্রধার বলা হয়। সূত্রধার সংস্কৃত নাটক, পুতুল নাচ বা ওঝা পালির ওঝার অনুরূপ হলেও শংকরদেব নাটের সূত্রধার সুকীয়া। সূত্রধারকে কুশল অভিনেতা, গীতি-বাদ্য-নাট বিশারদ এবং সুপরিচালক হিসাবে শংকরদেব তাঁর নাটে স্থান দিয়েছেন। ভাওনার শ্লোক, অপিচ এবং সূত্রধারের বচনের ওপর সম্পূর্ণ পরিচালনার ভার সূত্রধারের।[1]নাটক-এর প্রথম নান্দী নান্দী শ্লোক-এর পরে সূত্রধার-এর শ্লোক এবং সূত্র-এর উক্তিগুলি থেকে এই কথা স্পষ্টত বোঝা যায়।[2] গায়ন-বায়ন এবং সূত্রধারদের পিন্ধনত বগা ধুতি বা ঘোরী, হাত গেঞ্জী, পাঞ্জাবী, চেলেং চাদর এবং মাথায় বগা পাগ থাকে।[3]
পরিবেশন
ভাওনা-এর আরম্ভে সূত্রধার আঁড়-কাপড়ের আঁড়ে, অগ্নিগড়-এর নিচে আঁঠুকাঢ়ি সেবা জানানোর ভঙ্গীতে থাকে। আঁড়-কাপড় আঁতর হওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন বাদ্যসমূহ একেসাথে বেজে ওঠে। সঙ্গীরা হরিধ্বনি দিয়ে ওঠেন। বিলম্বিত লয়ে খোল, মৃদঙ্গ, তাল বাজে। সূত্রধার ছোট ভঙ্গীর একটি নাচ শুরু করে। নাচের মধ্যেই সূত্রধার থিয় দেন এবং মধ্যম লয়ের বাজনায় বরভঙ্গীর নাচ একটি আরম্ভ করে। এই দুই অংশ নাচের শেষে সূত্রধার স্বস্তিক হস্তেরে গোটা ভাওনাস্থল চতুস্পর্শ পরিভ্রমণ করে জনতা তথা দর্শকের মঙ্গল কামনা করে। এই নৃত্যের খোলে ১৭টি এবং শ্লোক ৯টি মোট ২৬টি বাজনা থাকা উল্লেখযোগ্য। ৪, ৭, ১০, ১১, ১২, ১৪, ১৫ এবং ১৭ সংখ্যক বাজনায় সূত্রধার খর নাচ প্রদর্শন করার সু রকমা পায়। নবম বাজনাতে বহু পাকের নাচ এবং ষোড়শ বাজনাতে জিধিনাকে হাত সরিয়ে হাত পড়ে। সূত্রধার নৃত্য সমাপ্ত করার সাথে সাথে প্রধান চরিত্র শ্রীকৃষ্ণ বা রাম-এর প্রবেশের পথ ঘোষিত হয়। তারপরে অন্য চরিত্রের প্রবেশ ঘটে।
নৃত্য শৈলী
ভাওনার আরম্ভে সূত্রধার আঁড়-কাপড়ের আঁড়ে, অগ্নিগড়ের নিচে আঁঠুকাঢ়ি সেবা জানাবার ভঙ্গীতে বসে থাকে।[4]
তথ্যসূত্র
- S. Gajrani (১ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। History, Religion & Culture of India। Gyan Publishing House। পৃষ্ঠা 113–। আইএসবিএন 978-81-8205-065-5। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১২।
- ভাওনা: লোহিত চন্দ্র দেবগোস্বামী, রামধনু, দৈনিক আসাম, ২৬ মে' ২০১২
- Projesh Banerji (১৯৮৩)। Indian Ballet Dancing: Album। Abhinav Publications। পৃষ্ঠা 84–86। আইএসবিএন 978-0-391-02716-9। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১২।
- সত্রীয়া নৃত্যর রূপ দর্শন, করুণা বরা