সুলতান আহমেদ (বীর বিক্রম)

সুলতান আহমেদ (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৭৯) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে।[1]

সুলতান আহমেদ
মৃত্যু১৯৭৯
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

সুলতান আহমেদের জন্ম চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ফতেয়াবাদ গ্রামে। তার বাবার নাম মোখলেসুর রহমান সরকার এবং মায়ের নাম আজব খাতুন। তার স্ত্রীর নাম জরিনা খাতুন। তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। [2]

কর্মজীবন

ইপিআরে চাকরি করতেন সুলতান আহমেদ। ঢাকার পিলখানা সদর দপ্তরে কর্মরত ছিলেন। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২২ বালুচ রেজিমেন্ট তাদের আক্রমণ করে। ঘুমন্ত অবস্থায় ইপিআরের অনেক সদস্য শহীদ হন। অনেকে আটক হন। সুলতান আহমেদসহ কয়েকজন বেঁচে যান। তারা পিলখানা থেকে বেরিয়ে বুড়িগঙ্গা নদী পার হয়ে নিরাপদ স্থানে সমবেত হন। এরপর নরসিংদীর পাঁচদোনায় যান। সেখানে অবস্থানকালে মতিউর রহমানের নেতৃত্বাধীন প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে ৩ নম্বর সেক্টর ও নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর এস ফোর্সের অধীনে যুদ্ধ করেন। মাধবপুর, আখাউড়া, আশুগঞ্জসহ আরও কয়েকটি যুদ্ধে সুলতান আহমেদ নৈপুণ্য ও বীরত্ব প্রদর্শন করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ কে এম সফিউল্লাহ (বীর উত্তম) বিদ্রোহ করে জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহে পৌঁছে সিদ্ধান্ত নেন ঢাকায় আক্রমণের। এই আক্রমণ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মতিউর রহমানের নেতৃত্বে ময়মনসিংহের ২ নম্বর ইপিআর উইংয়ের দুই কোম্পানি সেনা নরসিংদীর পাঁচদোনায় প্রতিরক্ষা অবস্থান নেন। সুলতান আহমেদ তার দল নিয়ে সেখানে ১ এপ্রিল যোগ দেন। তারা অবস্থান নেন পাঁচদোনার চার মাইল পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বপারে ডাঙ্গা নামের স্থানে। পরদিন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি দল ঢাকা থেকে নরসিংদী যাচ্ছিল। সুলতান আহমেদ তার ক্ষুদ্র দল নিয়ে দুঃসাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ করেন। এতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরে তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওই দলকে চারদিক থেকে ঘেরাও করে ফেলেন। ফলে, পাকিস্তানিরা পশ্চাদপসরণ করতে পারছিল না। এরপর পাকিস্তানিদের নতুন দল এসে ব্যাপক আর্টিলারি গোলাবর্ষণ করতে থাকে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানিদের ঘেরাও করে রাখেন। যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। পরদিন পাকিস্তানি বিমান আকাশ থেকে গোলাবর্ষণ করে। মুক্তিযোদ্ধারা মাটি কামড়ে কয়েক দিন তাদের অবস্থান ধরে রাখেন। ১১ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নতুন দল বিমানবাহিনীর সহায়তা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ করে। কয়েক দিনের যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের গোলাবারুদ কমে এসেছিল। কয়েকটি প্রতিরক্ষা অবস্থান একদম গুলিশূন্য হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তারা পশ্চাদপসরণ করে মাধবপুরে সমবেত হন। [3]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ:০৫-১১-২০১১
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449।
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৭১। আইএসবিএন 9789843338884।

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.