সুভাষ গুপ্তে
সুভাষচন্দ্র পণ্ঢহরিনাথ ফার্গি গুপ্তে (জন্ম: ১১ ডিসেম্বর, ১৯২৯ - মৃত্যু: ৩১ মে, ২০০২) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বোম্বে (বর্তমানে - মুম্বই) এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ১৯৫১ থেকে ১৯৬১ সময়কালে ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | সুভাষচন্দ্র পণ্ঢহরিনাথ গুপ্তে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | বোম্বে (বর্তমানে মুম্বই), মহারাষ্ট্র, ব্রিটিশ ভারত | ১১ ডিসেম্বর ১৯২৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৩১ মে ২০০২ ৭২) পোর্ট অব স্পেন, ত্রিনিদাদ | (বয়স|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | লেগ ব্রেক গুগলি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | বালু গুপ্তে (ভ্রাতা) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৫৮) | ৩০ ডিসেম্বর ১৯৫১ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৩ ডিসেম্বর ১৯৬১ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বোম্বে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিং করতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন সুভাষ গুপ্তে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
৩০ ডিসেম্বর, ১৯৫১ তারিখে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। পরবর্তী মৌসুম থেকেই তিনি ভারতের শীর্ষস্থানীয় স্পিনার বিনু মানকড়ের কাছ থেকে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করার দায়িত্বভার গ্রহণ করে ফেলেন। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ২৭ উইকেট পান। এরপর ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে নিজ দেশে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৪ উইকেট লাভ করেন। ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে কর্পোরেশন স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় রিচি বেনো’র প্রথমবারের মতো পাঁচ-উইকেট লাভে তার অবস্থান ছিল সপ্তম।[1]
১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ভারতে আগমন করে। এ সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা লক্ষ্য করে যে, সুভাষ গুপ্তে কাঁচের মধ্যেও বলকে ঘুরাতে পারতেন। কিন্তু, ব্যাটসম্যানেরা তার বোলিংয়ে মারমূখী হলে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলতেন। কানপুরে অনুষ্ঠিত টেস্টের এক ইনিংসেই ৯/১০২ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। কেবলমাত্র ল্যান্স গিবস তার শিকারের বাইরে ছিলেন। তবে, গিবস উইকেট-রক্ষক নরেন তামানে’র বদান্যতায় রক্ষা পান ও ক্যাচটি হাত ফসকে বেরিয়ে যায়।
বিতর্ক
দূর্ভাগ্যবশতঃ ১৯৬১-৬২ মৌসুমে তার খেলোয়াড়ী জীবন অপ্রত্যাশিতভাবে শেষ হয়ে যায়। সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার জন্য দিল্লির ইম্পেরিয়াল হোটেলে অবস্থান করে ভারত দল। কক্ষে অবস্থানকারী এ. জি. কৃপাল সিং অভ্যর্থনাকারী এক রমণীর সাথে ডেটিংয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হবার চেষ্টা চালান। কিন্তু ঐ রমণী ভারতীয় ব্যবস্থাপকের বরাবরে ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
এরপর বিসিসিআই উভয় খেলোয়াড়কে শাস্তি দেবার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। গুগলি বোর্ডের এক সদস্যকে শান্ত করলেও কৃপাল সিং হোটেলের ফোন ব্যবহার করে ঘটনা ফাঁস করে দেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন যে, তিনি একজন বড় মাপের খেলোয়াড়। আমি কীভাবে তাকে থামতে বলি? গুপ্তে জানান যে, কিছুই ঘটেনি। কৃপাল ঐ নারীকে ধর্ষণ কিংবা নিগৃহীত করেনি। তিনি শুধুমাত্র তাকে পানীয় গ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোন খেলোয়াড়কে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রেরণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সময় তার বয়স ছিল ৩২ বছর। ৩৬ টেস্টে ২৯.৫৫ গড়ে ১৪৯ উইকেট পেয়েছিলেন। এরপর তাকে আর ভারত দলের পক্ষে খেলতে দেখা যায়নি।
মূল্যায়ন
মিহির বসু তার জনপ্রিয় গ্রন্থ 'হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়ান' ক্রিকেটে সুভাষ গুপ্তের খেলোয়াড়ী জীবন নিয়ে সারমর্ম লিখেন। ভারতের প্রথমসারির সেরা স্পিনার সুভাষ গুপ্তের খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে অকালে। কেননা, তিনি এক লোকের সাথে কক্ষ ভাগাভাগি করে অবস্থান করেছেন যিনি এক রমণীর সাথে পানীয় গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন।
দুই ধরনের গুগলি বল ছুঁড়তে পারতেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিখ্যাত লেগ স্পিনার উইলফ্রেড ফার্গুসনের আদলে তিনি 'ফার্গি' ডাকনামে আখ্যায়িত হন। বোম্বের সদস্য থাকা অবস্থায় বাহাওয়ালপুর সিসি’র বিপক্ষে ইনিংসের সবগুলো উইকেট লাভ করেন। এছাড়াও ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে রিশটনের বিপক্ষেও এ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন সুভাষ গুপ্ত।
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা স্পিন বোলার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। স্যার গ্যারি সোবার্স তাকে সেরা লেগ স্পিনার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন; যার খেলা দেখে নির্মল আনন্দ পেতেন।
ব্যক্তিগত জীবন
দল থেকে বিতাড়িত হবার পর ত্রিনিদাদে চলে যান ও সেখানে তার তুলনায় দুই বছরের বড় এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এছাড়াও, কয়েকটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন সুভাষ গুপ্তে। ১৯৮১-৮২ মৌসুমে শারজায় সুভাষ গুপ্তের সাহায্যার্থে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। তার ভাই বালু গুপ্তে লেগ স্পিনার ছিলেন ও ভারতের পক্ষে খেলেছেন।
৩১ মে, ২০০২ তারিখে ৭২ বছর বয়সে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর পোর্ট অব স্পেনে তার দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
- "Australia tour of India, 1956/57: Test series – 1st Test"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০১৩।
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে সুভাষ গুপ্তে (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে সুভাষ গুপ্তে (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)