সিলেট গীতিকা
সিলেটের লোক-মানুষের রচিত মৌখিক কেচ্ছা, কাহিনী, যাত্রা-পালা ইত্যাদি লোক-ভাণ্ডারকে এক সাথে সিলেট গীতিকা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সিলেট অঞ্চলের প্রাচীন লোক-মানুষের দৈনন্দিন জীবনধারা, আদিবাসী মানুষের জীবন-জীবিকা, সামন্ততান্ত্রিক শাসন প্রণালী, গ্রামীণ লোকাঁচার, আবেগ অনুভূতি, প্রেম-বিরহ, যুদ্ধ-বিগ্রহ এবং মানবিকতা সম্মেলিত গাঁথাকেই সিলেট গীতিকার উৎস বলে ধরা হয়। অধ্যাপক আসাদ্দর আলীর প্রদত্ত তালিকা অনুসারে ১২০টি লোকগাথাকে সিলেট গীতিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে [1]ডঃ দীনেশচন্দ্র সেনের প্রচেষ্টায় চন্দ্রকুমার দে পূর্ব ময়মন সিংহ ও সিলেট অঞ্চল থেকে যে সব গীতিকা সংগ্রহ করেছিলেন, সেগুলোই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে পর্যায়ক্রম পুর্ব্বঙ্গ গীতিকা ও ময়মনসিংহ গীতিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।[2] এছাড়া চৌধুরী গোলাম আকবর ১৯৬৮ সালে বাংলা একাডেমী থেকে ১০ টি গীতিকা নির্বাচন করে একত্রে সিলেট গীতিকা নাম দিয়ে প্রকাশ করেন।[3]
সিলেট গীতিকায় অন্তর্ভুক্ত অন্যতম গাঁথা সমূহ
- চন্দরাজা (১৯৬৪ সালে আজিদ আলীর নিকট থেকে সংগ্রহ)
- তিলাইরাজা (১৯৬৫ সালে রমিজ উল্লার নিকট থেকে সংগ্রহ)
- কালুদুলাই (আলম উল্লার কাছে থেকে সংগ্রহ)
- মনিবিবি (১৯৬৫ সালে আব্দুল মন্নানের কাছ থেকে সংগ্রহ)
- রংগমালা (১৯৬৭ সালে আজেফর আলীর নিকট থেকে সংগ্রহ)
- চুরতজান বিবি (১৯৬৬ সালে লাছুমিয়ার কাছ থেকে সংগ্রহ)
- আলিফজান সুন্দরী (১৯৬৫ সালে আব্দুল মালিকের কাছ থেকে সংগ্রহ)
- দেওয়ানা মদিনা
- আলাল দুলাল
- আধুয়া সুন্দরী চুরত জামাল
- দেওয়ান কটুমিয়া
- ধনাই সাধু (সংগ্রাহক আশরাফ হোসেন)
- পলোক জালুয়া (সংগ্রাহক আশরাফ হোসেন)
- মধু মালা (সংগ্রাহক আশরাফ হোসেন) । [4][5]
তথ্যসূত্র
- সিলেট গীতিকাঃ সমাজ ও সংস্কৃতি, ডঃ আবুল ফতেহ ফাত্তাহ; প্রস্তাবনা ২, প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০০৫।
- ময়মন সিংহ গীতিকা বনাম সিলেট গীতিকা অধ্যাপক আসদ্দর আলী প্রকাশনায় জালালাবাদ লোকসাহিত্য পরিষদ সিলেট, প্রকাশকাল ১৯৯৭, পৃষ্ঠা ১২ -১৫।
- সিলেট বিভাগের ইতিবৃত্ত: প্রাচীন লোকসাহিত্য, মোহাম্মদ মমিনুল হক, গ্রন্থ প্রকাশকাল: সেপ্টেম্বর ২০০১; পৃষ্ঠা ৩৫৪।
- বাংলাদেশের লোকসাহিত্য ও লোক-ঐতিহ্য 'ডঃ আশরাফ সিদ্দিকী', প্রকাশক - সাঈদ বারী প্রধান নির্বাহী, সূচিপত্র ঢাকা, প্রকাশকাল ২০০৫ ইংরেজি।
- সিলেট গীতিকাঃ সমাজ ও সংস্কৃতি, ডঃ আবুল ফতেহ ফাত্তাহ; পৃষ্ঠা ৩৩- ৫৬; প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০০৫।