সিরমৌরী ভাষা
সিরমৌরী ভাষা (টাকরী: 𑚨𑚮𑚤𑚢𑚵𑚤𑚯) পশ্চিমা পাহাড়ী ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একটি ভাষা, যা মূলত উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের সিরমৌর জেলায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর ভাষা৷ ইউনেস্কো এই ভাষাটিকে ভারতের বিপন্ন ভাষাগুলির তালিকাভুক্ত করেছে৷[3] এটির দুটি মূল উপভাষা, একটি হলো ধর্থি, অপরটি গিরিপারী বা গিরিওয়াড়ি৷
সিরমৌরী | |
---|---|
𑚨𑚮𑚤𑚢𑚵𑚤𑚯, सिरमौरी | |
দেশোদ্ভব | ভারত |
অঞ্চল | হিমাচল প্রদেশ |
জাতিতত্ত্ব | সিরমৌরী জাতি |
মাতৃভাষী | ১,০৭,৪০১ (২০১১ জনগণনা)[1] বহু সংখ্যক সিরমৌরীভাষী নিজেদের হিন্দি ও পাহাড়ীভাষী বলে উল্লেখ করেছেন৷ |
উপভাষাসমূহ |
|
টাকরী, দেবনাগরী লিপি | |
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-৩ | srx |
গ্লোটোলগ | sirm1239 [2] |
ব্যাকরণ
বিভক্তি
লিঙ্গ | পুং | স্ত্রী | ক্লীব |
---|---|---|---|
সম্বন্ধ | /রা/ | /রী/ | /রূ/ |
অধিকরণ | /দা/ | /দী/ | /দূ/ |
অপাদান | /সা/ | /সী/ | /সূ/ |
লিপি
সিরমৌরী ভাষার জন্য ব্যবহৃত মূল লিপি হলো টাকরী লিপির একটি বিশেষ স্থানীয় প্রকার, যা সিরমৌরী লিপি নামে পরিচিত৷ এই লিপিটি ইউনিকোডের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ [5]
এই লিপিটি যাজকীয়ভাবে ধনকরী লিপি নামেও পরিচিত৷ স্থানীয় জ্যোতির্বিদরা জ্যোতির্বিজ্ঞানের কাজে পাবূচী নামে অপর একটি বিশেষ লিপি ব্যবহার করতেন৷ তবে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর দেবনাগরী লিপি এই লিপিটিকে প্রতিস্থাপিত করে৷
জনসংখ্যা
সিরমৌরী ভাষাভাষী লোক মূলত নালাগড় অঞ্চলে থাকেন৷ ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ী ভারতে সিরমৌরী ভাষাভাষীর সংখ্যা ১,০৭,৪০১ জন, যেখানে ২০০১ খ্রিস্টাব্দে এই জনসংখ্যা ছিলো ৩১,১৪৪ জন৷[6] জন সচেতনতার অভাবে যথেষ্ট সংখ্যক লোক নিজেদের হিন্দি এবং পাহাড়ী ভাষা (পাহাড়ি মূলত হিমাচলের ভাষাগুলিকে একত্রিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার প্রবর্তিত নাম) বলে উল্লেখ করেছেন৷ তবে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের রিপোর্টে বহু লোক সিরমৌরীকে মাতৃভাষা বেছে নিয়েছেন৷
- ভারত - ১,০৭,৪০১
- হিমাচল প্রদেশ - ১,০৭,৩২২ (১.৫৬%)
- সিরমৌর জেলা - ১,০৫,৫১৬ (১৯.৯১%)
- রাজগড় ব্লক - ২৬,৫৮৮ (৫৪.৮৮%)
- নোহরা ব্লক - ২২,৪১৮ (৯৭.৩৮%)
- পাছাড় ব্লক - ২১,৭১০ (৪০.৩৫%)
- দাদহু ব্লক - ১৩,২৪০ (৭৬.০৮%)
- নাহন ব্লক - ১,২৬৫ (১.৫০%)
- পাওঁটা সাহেব ব্লক - ৫,৭৮৮ (৩.৬৭%)
- কামরউ ব্লক - ৪,৪৪৭ (১২.০০%)
- শালাই ব্লক - ৯,৬৯২ (২৬.২৬%)
- সিরমৌর জেলা - ১,০৫,৫১৬ (১৯.৯১%)
বর্তমান অবস্থা
সিরমৌরী ভাষাটি সাধারণভাবে পাহাড়ি অথবা হিমাচলি ভাষা নামে পরিচিত। তবে কারো কারো মতে বৃহত্তর পাঞ্জাবির ডোগরি ভাষার একটি উপভাষা। এই ভাষাটি কোন সরকারি পদমর্যাদা নেই এবং এটি বর্তমানে হিন্দি ভাষার একটি উপভাষা হিসেবে পরিগণিত হয়। ভাষাটির কোনো সরকারি মর্যাদা নেই৷ ইউনেস্কোর তথ্য অনুসারে এই ভাষাটি বিপন্ন ভাষার তালিকাভুক্ত, অর্থ অধিকাংশ সিরমৌরী ভাষাভাষী শিশুরা নিজের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষালাভে অক্ষম।[7]
ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফসিলে পাহাড়ী হিমাচলি ভাষাগুলির অন্তর্ভুক্তির জন্য ২০১০ খ্রিস্টাব্দে সিংহভাগ সম্মতিতে বিষয়টি রাজ্য বিধানসভায় উপস্থাপিত হয়৷[8] ছোটো ছোট সংস্থাগুলির দাবীকে বাদ দিতে সরকারীভাবে বিশেষ ঐই ভাষাগুলি সংরক্ষণ ও মান্যতা দানের কোনো বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি৷[9] রাজনৈতিক প্রভাবে ভাষাগুলির অধিকাংশের সাথেই হিন্দি ভাষাগোষ্ঠীর কোনরূপ পারস্পরিক সম্পর্ক না থাকলেও পাহাড়ি এই ভাষাগুলি হিন্দি ভাষার অন্তর্গত একেকটি উপভাষা হয়ে রয়েছে৷[10]
তথ্যসূত্র
- "Statement 1: Abstract of speakers' strength of languages and mother tongues - 2011"। www.censusindia.gov.in। Office of the Registrar General & Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-০৭।
- হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "সিরমৌরী"। গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট।
- "UNESCO Atlas of the World's Languages in danger"। Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১২।
- "Language in India"। www.languageinindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-৩০।
- "Jaunsari Unicode" (পিডিএফ)।
- "Endangered Language"।
- "Pahari Inclusion"। Zee News।
- "Pahari Inclusion"। The Statesman। ১৭ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০২০।
- "Indian Language Census" (পিডিএফ)।