সিমেওঁ দ্যনি পোয়াসোঁ

সিমেওঁ দ্যনি পোয়াসোঁ[টীকা 1] (ফরাসি ভাষায়: Siméon Denis Poisson) (২১ জুন ১৭৮১, পিতিভিয়ে, ফ্রান্স - ২৫শে এপ্রিল, ১৮৪০, সো, ফ্রান্স) একজন ফরাসি গণিতবিদ, জ্যামিতিবিদ, এবং পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি নির্দিষ্ট সমাকল, তড়িৎ-চুম্বকীয় তত্ত্ব ও সম্ভাবনার উপরে গবেষণার জন্য বিখ্যাত।

সিমেওঁ দ্যনি পোয়াসোঁ
সিমেওঁ দ্যনি পোয়াসোঁ (১৭৮১–১৮৪০)
জন্ম(১৭৮১-০৬-২১)২১ জুন ১৭৮১
পিতিভিয়ে, অর্লেয়ানে, ফ্রান্স রাজ্য
(বর্তমান লোয়ারে, ফ্রান্স)
মৃত্যু২৫ এপ্রিল ১৮৪০(1840-04-25) (বয়স ৫৮)
সো, ও-দ্য-সেন, জুলাই রাজতন্ত্র
জাতীয়তাফরাসি
মাতৃশিক্ষায়তনএকোল পোলিতেকনিক
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রগণিত
প্রতিষ্ঠানসমূহএকোল পোলিতেকনিক
ব্যুরো দে লোঁজিত্যুদ
ফাক্যুলতে দে সিয়ঁস দ্য পারি
একোল স্পেসিয়াল মিলিত্যার দ্য সাঁ-সির

তিনি প্যারিসের বিখ্যাত একোল পোলিতেকনিক প্রতিষ্ঠানে গণিত বিষয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন, যেখানে পিয়ের-সিমোঁ লাপ্লাস ও জোযেফ-লুই লাগ্রঁজ ছিলেন তাঁর দুই শিক্ষক। তিনি কর্মজীবনে একোল পোলিতেকনিকের অধ্যাপক, দ্রাঘিমা কার্যালয়ের (ব্যুরো দে লোঁজিত্যুদ) জ্যোতির্বিজ্ঞানী, প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের (ফাক্যুলতে দে সিয়ঁস দ্য পারি) বিশুদ্ধ গণিতের অধ্যাপক পদে কাজ করেন।

পোয়াসোঁ বিশুদ্ধ ও ফলিত উভয় প্রকারের গণিতশাস্ত্রে ব্যাপক অবদান রাখেন ও সব মিলিয়ে ৩০০টিরও বেশি গবেষণাপত্র রচনা করেন। বিশুদ্ধ গণিতশাস্ত্রে নির্দিষ্ট সমাকলসমূহের উপরে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত কিছু গবেষণাপত্র ও ফুরিয়ে বিশ্লেষণের উন্নতি সাধন তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু অবদান। শেষোক্তটি জার্মান গণিতবিদ পেটার ডিরিখলেট ও বের্নহার্ড রিমানের গবেষণার পথ দেখিয়ে দেয়। অন্যদিকে ফলিত গণিতের দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি স্থিরবিদ্যুৎ, চুম্বকত্ব, বলবিজ্ঞান (বিশেষত খ-বলবিজ্ঞান) ও পদার্থবিজ্ঞানের অন্যান্য ক্ষেত্রে গণিতের প্রয়োগ নিয়ে কাজ করেন। তিনি বলবিজ্ঞানের ত্রেতে দ্য মেকানিক (১৮১১) নামের যে গ্রন্থটি রচনা করেন, তা বহু বছর ধরে বিষয়টির একটি প্রমিত পাঠ্যপুস্তক হিসেবে প্রচলিত ছিল। তিনি গ্রহসমূহের গতি সংক্রান্ত লাপ্লাসের পদ্ধতিগুলির উপর ভিত্তি করে স্থিরতড়িৎবিজ্ঞানে বৈদ্যুতিক আকর্ষণ-বিকর্ষণ বলের দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক সূত্রটি প্রদান করেন। তিনি লাগ্রঁজ ও লাপ্লাসের কাজের উপর ভিত্তি করে গ্রহসমূহের আকৃতি ও তাদের কক্ষপথের স্থিতিশীলতার মধ্যে সম্পর্কের উপর গবেষণাকর্ম সম্পাদন করেন; তাঁর দেয়া সূত্রগুলি ব্যবহার করে ২০শ শতকের শেষে এসে পৃথিবীকে প্রদক্ষণকারী কৃত্রিম উপগ্রহগুলির পথ পরিমাপ ও বিশ্লেষণ করে পৃথিবীর আকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞানলাভ করা সম্ভব হয়। পোয়াসোঁ কৈশিক ক্রিয়া ও তাপশক্তির উপরেও গবেষণাকর্ম প্রকাশ করেন। ব্যবকলনীয় সমীকরণের পোয়াসোঁ বন্ধনী, বিদ্যুৎ বিষয়ে পোয়াসোঁ-র ধ্রবক, বিভব তত্ত্বে পোয়াসোঁ-র সমীকরণসমূহ, পোয়াসোঁ-র সমাকল ও স্থিতিস্থাপকতার আলোচনায় পোয়াসঁ-র অনুপাত, ইত্যাদিতে তাঁর নাম চিরজীবী হয়ে আছে। ১৮৩৭ সালে দেওয়ানি ও ফৌজদারি রায়ের সম্ভাবনা সম্পর্কিত গবেষণাতে তিনি সম্ভাবনা ও বৃহৎ সংখ্যাসমূহের সূত্র নিয়ে লেখেন এবং পোয়াসোঁর বিতরণ নামক ধারণাটির অবতারণা করেন, যা বর্তমানে পরিসংখ্যানশাস্ত্রের একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ তাত্ত্বিক অবদান হিসেবে স্বীকৃত। স্থানকালের যেকোনও দৈব ঘটনাবলীর বিশ্লেষণে এটি ব্যবহৃত হয়।

কর্মজীবন

পোয়াসোঁর গবেষণার বিষয় ছিল স্থিতিস্থাপকতা, চুম্বকত্ব ও তত্ত্বীয় তড়িৎবিজ্ঞান এবং ফলিত গণিত। বস্তুত সম্ভাবনাতত্ত্বের গাণিতিক উন্নতিতে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন।[1]

টীকা

  1. এই ফরাসি নামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় ফরাসি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ-এ ব্যাখ্যাকৃত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে। বাংলা রচনাবলীতে কদাচিৎ "পৈসুঁ", ইত্যাদি বিকল্প বানান পরিলক্ষিত হতে পারে। উইকিপিডিয়াতে ব্যক্তিনামের সঠিক ফরাসি উচ্চারণের সবচেয়ে কাছাকাছি ও সহজপাঠ্য প্রতিবর্ণীকরণ করার চেষ্টা করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র

  1. দাশগুপ্ত, ধীমান (এপ্রিল ১৯৯৭)। বিজ্ঞানী চরিতাভিধান (১ সংস্করণ)। কলকাতা: বাণীশিল্প। পৃষ্ঠা ২৪। আইএসবিএন বিহীন |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য)
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.