সিডনি আর্ল চ্যাপলিন

সিডনি আর্ল চ্যাপলিন (ইংরেজি: Sydney Earl Chaplin; ৩০ মার্চ ১৯২৬ – ৩ মার্চ ২০০৯) ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেতা। তিনি চলচ্চিত্র অভিনেতা ও নির্মাতা চার্লি চ্যাপলিন এবং অভিনেত্রী লিটা গ্রের পুত্র। তার নাম রাখা হয় তার চাচা সিডনি চ্যাপলিনের নামানুসারে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল তার পিতার পরিচালনায় লাইমলাইট (১৯৫২)। তিনি ব্রডওয়ে মঞ্চে বেল্‌স আর রিংগিং মঞ্চনাটকে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ গীতিনাট্য অভিনেতার জন্য টনি পুরস্কার লাভ করেন এবং ফানি গার্ল সঙ্গীতনাট্যে আরেকটি টনি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

সিডনি আর্ল চ্যাপলিন
Sydney Earl Chaplin
জন্ম(১৯২৬-০৩-৩০)৩০ মার্চ ১৯২৬
মৃত্যু৩ মার্চ ২০০৯(2009-03-03) (বয়স ৮২)
র‍্যাঞ্চো মিরেজ, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যুর কারণস্ট্রোক
পেশাঅভিনেতা
কর্মজীবন১৯৫২–১৯৭৭
দাম্পত্য সঙ্গীনোয়েল অ্যাডাম (বি. ১৯৬০; বিচ্ছেদ. ১৯৮৫)
মার্গারেট বিব (বি. ১৯৯৮; মৃ. ২০০৯)
সন্তান
পিতা-মাতাচার্লি চ্যাপলিন (পিতা)
লিটা গ্রে (মাতা)
আত্মীয়দেখুন চ্যাপলিন পরিবার

জীবনী

প্রারম্ভিক জীবন

চ্যাপলিন ১৯২৬ সালের ৩০ মার্চ ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্মগ্রহণ করেন।[1] তার পিতা চলচ্চিত্র অভিনেতা ও নির্মাতা চার্লি চ্যাপলিন এবং মাতা অভিনেত্রী লিটা গ্রে। সিডনির নাম রাখা হয় তার চাচা সিডনি চ্যাপলিনের নামানুসারে। সিডনির বড় ভাই চার্লস চ্যাপলিন জুনিয়র। চার্লস জন্মের ১০ মাসের মধ্যে তার জন্ম হয় এবং তিনি পাঁচ সপ্তাহ পূর্বে ভূমিষ্ঠ হন। তার জন্মের এক বছরের মধ্যে তার পিতামাতা বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।[2] পরবর্তীতে তার পিতার উনা ওনিলের সাথে চতুর্থ বিবাহের ফলে তার আরও আট বৈমাত্রেয় ভাইবোন জন্মগ্রহণ করে।

সিডনির নাম রাখা হয় তার পিতা চার্লির বৈমাত্রেয় বড় ভাই সিডনি চ্যাপলিনের নামানুসারে। তার মা তাকে "টমি" নামে ডাকতে পছন্দ করতেন, কারণ তিনি চার্লির ভাই সিডনিকে পছন্দ করতেন না। সিডনি ও তার বড় ভাই চার্লস তার মা এবং মাতামহের কাছে লালিত পালিত হন। তাদের পরিবার ফ্রান্সের নিস শহরে বেশিরভাগ সময় কাটায়, ফলে তারা দুই ভাই ফরাসি ভাষায় দক্ষ হয়ে ওঠেন।[3]

কর্মজীবন

তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ইউরোপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং পরে তিনি মঞ্চ ও চলচ্চিত্রে অভিনয় জীবন শুরু করেন। চ্যাপলিন তার পিতা চার্লি পরিচালিত দুটি চলচ্চিত্র, লাইমলাইট (১৯৫২) ও আ কাউন্টেস ফ্রম হংকং (১৯৬৭) এ পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়া তিনি জর্জ মার্শালের পশ্চিমা ধাঁচের পিলারস অব দ্য স্কাই (১৯৫৬) ও জ্যাক শেরের ফোর গার্লস ইন টাউন (১৯৫৭) চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন।[3]

ব্রডওয়ে মঞ্চে তিনি অধিক সফলতা অর্জন করেন। ব্রডওয়ে মঞ্চে তার প্রথম কাজ ছিল বেলস্‌ আর রিংগিং। ১৯৫৭ সালে মঞ্চস্থ এই নাটকে তার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন জুডি হলিডে। নাটকটি ৯২৪ বার মঞ্চস্থ হয় এবং এই নাটকে অভিনয়ের জন্য তিনি সঙ্গীতনাট্যে শ্রেষ্ঠ চরিত্রাভিনেতা বিভাগে টনি পুরস্কার লাভ করেন।[3] জর্জ এক্সেলরডের হাস্যরসাত্মক গুডবাই চার্লি (১৯৫৯)-এ তিনি লরেন বাকলের বিপরীতে অভিনয় করেন। পরবর্তী কালে তিনি সাবওয়ে আর ফর স্লিপিং (১৯৬১) সঙ্গীতনাট্যে কাজ করেন। তার ইন দ্য কাউন্টিং হাউজ (১৯৬২) নাটকটি ব্যর্থ হয় এবং মাত্র চারটি পরিবেশনার পরই তা বন্ধ হয়ে যায়। তার সেরা ও শেষ ব্রডওয়ে নাটক ছিল ১৯৬৪ সালের ফানি গার্লবারবারা স্ট্রাইস্যান্ডের বিপরীতে অভিনীত এই সঙ্গীতনাট্যে অভিনয়ের জন্য তিনি আরেকটি টনি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[3]

তিনি সার্কেল থিয়েটারের (যা বর্তমানে এল সেন্ট্রো থিয়েটার নামে পরিচিত) সার্কেল প্লেয়ার্সের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তিনি এই থিয়েটারের স্বাধীন ও স্বল্প বাজেটের ফলো দ্যাট ম্যান (১৯৬১) ও দি অ্যাডিং মেশিন (১৯৬৯) মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন, এই দুটি নাটক সার্কেলের প্রথম উল্লেখযোগ্য সফল নাটক।[3]

ব্যক্তিগত জীবন

১৯৬০ সালে চ্যাপলিন ফরাসি নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী নোয়েল অ্যাডামকে বিয়ে করেন। অ্যাডামের স্টিফেন (জন্ম ১৯৬০) নামে একটি পুত্র ছিল। ১৯৮৫ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। চ্যাপলিন ১৯৭০ এর দশকে অভিনয় থেকে অবসরে যান এবং ১৯৮০ এর দশকে ক্যালিফোর্নিয়ার পাম স্প্রিংসে "চ্যাপলিন্স" নামে একটি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করতেন। ১৯৯৮ সালে ১৪ বছরের সম্পর্কের পর তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী মার্গারেট বিবকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির এক পুত্র - স্টিভান। তার পৌত্রী তামারা।

চ্যাপলিন তার মা লিটা গ্রেকে তার আত্মজীবনী ওয়াইফ অব দ্য লাইফ অব দ্য পার্টি (১৯৯৮) লিখতে ও প্রকাশ করতে সহায়তা করেন।

মৃত্যু

চ্যাপলিন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ২০০৯ সালে ৩ মার্চ ৮২ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ার র‍্যাঞ্চো মিরেজে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।[4]

চলচ্চিত্রের তালিকা

  • লাইমলাইট (১৯৫২) - নেভিল
  • কলম্বাস ডিস্কোভার্স ক্রেউইঙ্কল (১৯৫৪)

তথ্যসূত্র

  1. রবিনসন, পৃ. ৩৫৫, ৩৬৮।
  2. রবিনসন, পৃ. ৩৭৮।
  3. রবিনসন, ডেভিড (১০ মার্চ ২০০৯)। "Obituary: Sydney Chaplin"দ্য গার্ডিয়ান (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০১৯
  4. "Oldest surviving child of Charlie Chaplin dies at 82"কোয়াড সিটি টাইমস। ৯ মার্চ ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০১৯

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.