সার্কি (নৃগোষ্ঠী)

সারকি বা সার্কি বা মিজার (নেপালি: सार्की) হল নেপালের খস জনজাতির অন্তর্গত এক ঐতিহ্যগত জাতি। এরা পেশাগতভাবে চামড়া শ্রমিকদের অন্তর্গত অর্থাৎ এরা চামড়ার কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।[1] এরা পার্বত্য জনজাতির অন্তর্ভুক্ত এবং এরা সাধারনত হিমালয়, নেপাল, দার্জিলিং এবং কালিম্পং এর পাহাড় জুড়ে এবং ডুয়ার্সের তরাই অঞ্চলে বাস করে। তারা মাদল বাদ্যযন্ত্র বাজাতে এবং এক বিশেষ দলগত নৃত্য পরিবেশনে পারদর্শী হয়। এই বিশেষ দলগত নৃত্যের নাম খেয়ালী মারুনি এবং এটি সার্কি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যের পরিচায়ক। নেপালের ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, নেপালের জনসংখ্যার ১.৪% লোক সার্কি‌ জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত[2] অর্থাৎ নেপালে সেইসময় প্রায় ৩৭৪,৮১৬ জন সার্কি‌ জনজাতিভুক্ত লোক নেপালে বসবাস করত। নেপালি ও থাকালি ভাষায় সার্কি‌ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়।[3]

১৮৫৪ সালের নেপালী মুলুকি আইন (আইনি কোড) সার্কি‌ জনগোষ্ঠীকে একটি বিভাগে শ্রেণীবদ্ধ করেছিল।[4] নেপাল সরকার সার্কি‌ সহ দামাই, বাদি, কামি এবং গাইন এই নটি সামাজিক গোষ্ঠীকে পার্বত্য দলিত-এর অধীনে শ্রেণীবদ্ধ করেছিলেন।[2]

নেপালে বর্ণ-ভিত্তিক ব্যবস্থা ও বৈষম্য নির্মূল করতে নেপাল সরকার একটি চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহন করতে উদ্যোগী হন। ১৯৬৩ সালে নেপাল সরকার কর্তৃক একটি আইন পাশ হয়। সেই আইনে অস্পৃশ্যতা (একটি নির্দিষ্ট বর্ণের বঞ্চনা) সহ যে কোনও বর্ণ-ভিত্তিক বৈষম্যকে অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।[5] নেপাল পূর্বে একটি হিন্দু রাজতন্ত্র দ্বারা শাসিত একটি হিন্দু রাষ্ট্র ছিল। স্বাধীনতা ও সমতার দিকে নেপালের এই পদক্ষেপের সাথে তা এক একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত হয়।[6] ২৮ মে ২০০৮ সালে হিন্দু রাজতন্ত্রের শাসন থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়ে[7] নেপাল এক প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।[8]


তথ্যসূত্র

  1. Whelpton 2005, পৃ. 31।
  2. "Nepal Census 2011" (পিডিএফ)
  3. Vinding, Michael (১৯৯৮)। The Thakali: A Himalayan Ethnography। Serindia Publications। পৃষ্ঠা 388, 443। আইএসবিএন 9780906026502।
  4. Gurung, Harka (2005) Social Exclusion and Maoist Insurgency. Paper presented at National Dialogue Conference at ILO Convention 169 on Indigenous and Tribal peoples, Kathmandu, 19–20 January 2005.
  5. Welle (www.dw.com), Deutsche। "Nepal: Deadly caste-based attacks spur outcry over social discrimination | DW | 16.06.2020"DW.COM (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-২৮
  6. "Nepal king stripped of most powers"CNN। ১৮ মে ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০২০
  7. Crossette, Barbara (৩ জুন ২০০১)। "Birenda, 55, Ruler of Nepal's Hindu Kingdom"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০২০
  8. "Nepal votes to abolish monarchy"BBC News। ২৮ মে ২০০৮। ৭ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০২০
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.