সাইদা খানম

সাইদা খানম (২৯ ডিসেম্বর ১৯৩৭ - ১৮ আগস্ট ২০২০[1]) ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী।[2] বেগম পত্রিকার মাধ্যমে সাইদা খানম আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার ছবি ছাপা হয় দৈনিক অবজারভার, মর্নিং নিউজ, ইত্তেফাক, সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায়। আলোকচিত্রী হিসেবে দেশেও দেশের বাইরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নেন তিনি। তিনি বাংলা একাডেমিইউএনবির আজীবন সদস্য।

সাইদা খানম
জন্ম(১৯৩৭-১২-২৯)২৯ ডিসেম্বর ১৯৩৭
মৃত্যু১৮ আগস্ট ২০২০(2020-08-18) (বয়স ৮২)
জাতীয়তা বাংলাদেশি
পরিচিতির কারণবাংলাদেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী
পুরস্কারনিচে দেখুন

প্রাথমিক ও শিক্ষাজীবন

সাইদা খানম মাত্র ১৩-১৪ বয়সেই ছবি তোলার কাজটি শুরু করেন। তার জন্ম ১৯৩৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর। পৈতৃক বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙায় হলেও সাইদা খানমের জন্ম পাবনায়ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৬৮ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। [3] পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে পুনরায় লাইব্রেরি সায়েন্সে স্নাতকোত্তর করেন। তার বাবার নাম আবদুস সামাদ খান এবং মায়ের নাম নাছিমা খাতুন। পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশ) তিনিই ছিলেন একমাত্র ও প্রথম নারী আলোকচিত্রী।

কর্মজীবন

সাইদা খানম আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসেবে 'বেগম' পত্রিকার আলোকচিত্রী ১৯৫৬ সাল থেকে। ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরিতে লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কাজ করেছেন। প্রেস ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। দুটো জাপানি পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তার তোলা আলোকচিত্র মুদ্রিত হয়েছে। তার ছবি ছাপা হয় ‘অবজারভার’, ‘মর্নিং নিউজ’, ‘ইত্তেফাক’, ‘সংবাদ’সহ বিভিন্ন পত্রিকায়। আলোকচিত্রী হিসেবে দেশেও দেশের বাইরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নেন সাইদা খানম। অস্কারজয়ী সত্যজিৎ​ রায়ের ছবিও তোলেন সাইদা খানম। সত্যজিতের তিনটি ছবিতে আলোকচিত্রী হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। ১৯৫৬ সালে ঢাকায় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশ নেন সাইদা খানম। ওই বছরই জার্মানিতে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড কোলন পুরস্কার পান তিনি। ভারত, জাপান, ফ্রান্স, সুইডেন, পাকিস্তান, সাইপ্রাসমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বেশ কয়েকটি দেশে তাঁর ছবির প্রদর্শনী হয়। ১৯৬২ সালে ‘চিত্রালী’ পত্রিকার হয়ে একটি অ্যাসাইনমেন্টে গিয়ে বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার ও অস্কারজয়ী সত্যজিৎ রায়ের ছবি তুলে সমাদৃত হন সাইদা খানম।

আলোচিত কাজ

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে দেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী ঢাকার আজিমপুর এলাকায় অস্ত্র হাতে প্রশিক্ষণরত নারীদের ছবি তোলেন। [4] ১৬ ডিসেম্বর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের (পরে শেরাটন ও রূপসী বাংলা) সামনে পাকিস্তানি সেনারা গোলাগুলি শুরু করে। খবর পেয়ে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে সেখানকার ছবি তুলতে যান তিনি। প্রচণ্ড গোলাগুলির কারণে সেদিন অবশ্য ছবি তুলতে পারেননি।

গ্রন্থতালিকা

  • ধূলোমাটি (১৯৬৪)[2]
  • আমার চোখে সত্যজিৎ রায় (২০০৪)[2]
  • স্মৃতির পথ বেয়ে[2][5]
  • আলোকচিত্রী সাইদা খানম-এর উপন্যাসত্রয়ী[2][6]

পুরস্কার এবং স্বীকৃতি

  • ইউনেসকো অ্যাওয়ার্ড, জাপান
  • অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার
  • বেগম পত্রিকার ৫০ বছর পূর্তি পুরস্কার
  • বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সম্মানসূচক ফেলো
  • একুশে পদক

মৃত্যু

সাইদা ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।[1]

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম আর নেই, প্রথম আলো, ১৮ আগস্ট ২০২০
  2. জাহিদুল করিম (মার্চ ০৮, ২০১৫)। "দেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ০৯, ২০১৫ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  3. "গোল্ডেন ফেমিনা বিডি"। ১৫ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১৫
  4. বিডিনিউজ ২৪ ডট কম
  5. রকমারি ডট কম
  6. "দৈনিক আজাদী"। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-০৯

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.