সতীশচন্দ্র আচার্য বিদ্যাভূষণ

সতীশচন্দ্র আচার্য বিদ্যাভূষণ, মহামহোপাধ্যায় ( ৩০ জুলাই, ১৮৭০  — ২৫ এপ্রিল, ১৯২০) ছিলেন সংস্কৃত পালি ভাষার বাঙালি পণ্ডিত ও কলকাতার সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ।

জন্ম ও শিক্ষা জীবন

সতীশচন্দ্র আচার্য ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দের ৩০ শে জুলাই বৃটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার নবদ্বীপে। তার পিতা ছিলেন জ্যোতিষশাস্ত্রজ্ঞ পীতাম্বর বিদ্যাবাগীশ। মাইনর পরীক্ষায় নদিয়া বিভাগে বৃত্তি সহ সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করেন ও নবদ্বীপ হিন্দু স্কুলে ভরতি হন। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে বৃত্তিসমেত এন্ট্রান্স এবং কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃতে অনার্স সহ বি. এ পরীক্ষায় অবিভক্ত  বাংলার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে স্বর্ণ পদক পান। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত কলেজ থেকে সংস্কৃতে এম. এ. পাশ করেন। এরপর ব্যাকরণ, দর্শন, স্মৃতি ও বেদাদি পড়েন। [1] ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ভারতবর্ষের সর্বপ্রথম পালি ভাষায় এম.এ.পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে স্বর্ণপদক লাভ করেন। [2][3] 'নবদ্বীপ বিদগ্ধ জননী সভা'র পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে পাশ করে ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে "বিদ্যাভূষণ" উপাধি পান।

কর্মজীবন

বিদ্যাভূষণ উপাধি প্রাপ্তির পর তিনি কৃষ্ণনগর কলেজে সংস্কৃতের প্রধান অধ্যাপক হন। তিনি পালি ভাষার চর্চার সাথে বৌদ্ধশাস্ত্রও অধ্যয়ন করেন। সরকার কর্তৃক তিনি 'Buddhist Text Society' র সহযোগী সম্পাদক নিযুক্ত হন। এই পদে দীর্ঘ বাইশ বৎসর অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং এই সময় পালি ভাষায় বহু গ্রন্থও রচনা করেন। [4] ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে সরকার কর্তৃক সহকারী তিব্বতীয় অনুবাদকের পদে নিযুক্ত হয়ে রায়বাহাদুর শরচ্চন্দ্র দাসের সঙ্গে তিব্বতীয় বৌদ্ধ ও সংস্কৃত অভিধান প্রণয়নের ভার নেন। ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে মার্চ মাসে বদলি হয়ে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক হন। এই সময়ে তিনি ফরাসি ও জার্মান ভাষা শেখেন। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় ও ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে 'Middle Age School of Indian Logic' শীর্ষক প্রবন্ধ রচনা করে পি.এইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

[5][6][7] ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে তিনি শিক্ষার্থে শ্রীলঙ্কা যান এবং ফিরে এসে কলকাতার  সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ হন।[8] ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে 'সিদ্ধান্ত মহাবোধি' এবং বৌদ্ধ সাহিত্যে পাণ্ডিত্যের জন্য "ত্রিপিটক বাগীশ্বর" উপাধি পান। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ডক্টরেট। তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ সহ বহু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল -

  • আত্মতত্ত্ব প্রকাশ
  • পালি ব্যাকরণ
  • ন্যায় দর্শনের ইংরাজী অনুবাদ
  • বুদ্ধদেব
  • এ হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়ান লজিক

[1]

জীবনাবসান

সতীশচন্দ্র আচার্য বিদ্যাভূষণ ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ২৫ শে এপ্রিল পরলোক গমন করেন

তথ্যসূত্র

  1. Vol - I, Subodh C. Sengupta & Anjali Basu (২০১৬)। Sansad Bangali Charitavidhan (Bengali)। Kolkata: Sahitya Sansad। পৃষ্ঠা 743। আইএসবিএন 978-81-7955-135-6।
  2. Padmanabh S. Jaini (২০০১)। Collected Papers on Buddhist Studiesআইএসবিএন 9788120817760। সংগ্রহের তারিখ মে ২, ২০১৮
  3. "Department of Pali"caluniv.ac.in। মে ৩, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ২, ২০১৮
  4. Dr. Mantosh Mandal। Indian Paṇdits Engaged in Tibetan Translations of Buddhist Logicআইএসবিএন 9781312791336। সংগ্রহের তারিখ মে ২, ২০১৮
  5. C. Hayavadana Rao। "The Indian Biographical Dictionary (1915)"। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২১, ২০১৮
  6. Sukumar Dutt (৫ নভেম্বর ২০১৩)। Early Buddhist Monachism: 600 BC - 100 BCআইএসবিএন 9781136378539। সংগ্রহের তারিখ মে ২, ২০১৮
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.