শ্রম অর্থশাস্ত্র
শ্রম অর্থশাস্ত্র বা শ্রম অর্থনীতিবিদ্যা বলতে অর্থশাস্ত্রের একটি উপক্ষেত্রকে বোঝায় যেখানে মজুরি বা বেতনভিত্তিক শ্রমের বাজারের কর্মপদ্ধতি ও এর উপর ক্রিয়াশীল শক্তিসমূহের আলোচনা ও গবেষণা করা হয়।
শ্রম বাজার বা কর্মসংস্থান বাজার (সহজ ভাষার "চাকুরির বাজার") শ্রমিক এবং চাকুরি প্রদানকারী নিয়োগকর্তার মধ্যকার আন্তঃক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করে থাকে। শ্রম অর্থনীতিবিদেরা শ্রম সেবার যোগানদার বা সরবরাহকারী (অর্থাৎ শ্রমিক-মজুর বা চাকুরিজীবী) এবং শ্রম সেবার চাহিদাকারী (অর্থাৎ নিয়োগকর্তা) উভয় পক্ষকেই পর্যবেক্ষণ করেন এবং এদের মধ্যকার লেনদেন বা আন্তঃক্রিয়ার ফলাফল হিসেবে সৃষ্ট মজুরি বা বেতন, কর্মসংস্থান ও আয়ের ব্যাপারগুলি বোঝার চেষ্টা করেন।
অর্থশাস্ত্রে শ্রম বলতে মানুষের দ্বারা সম্পাদিত কাজের একটি পরিমাপ বোঝায়। সাধারণত এটিকে পণ্য উৎপাদনের অন্যান্য উপাদান (বা উৎপাদক) যেমন ভূমি বা পুঁজি থেকে পৃথক করে দেখা হয়। শ্রমিকেরা যে দক্ষতার অধিকারী, সেগুলিকে কোনও কোনও অর্থনৈতিক তত্ত্বে "মানব পুঁজি" নামক ধারণা দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্তরে শ্রমবাজারের সরবরাহ ও যোগান আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারের উপর ক্রিয়াশীল চালিকাশক্তিগুলিসহ অন্যান্য কারণ যেমন অভিবাসন, জনসমষ্টির বয়স ও শিক্ষার স্তর ইত্যাদির দ্বারা প্রভাবিত হয়। এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক পরিমাপগুলি হল বেকারত্ব, উৎপাদনশীলতা, অংশগ্রহণের হার, মোট আয় এবং স্থুল আভ্যন্তরীণ উৎপাদন। ব্যষ্টিক অর্থনৈতিক স্তরে একেকটি ব্যবসা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিক বা চাকুরিজীবীদের সাথে লেনদেন করে, তাদেরকে চাকুরিতে নিয়োগদান করে, চাকুরিচ্যুত করে কিংবা বেতন ও কর্মঘণ্টার পরিমাণ বৃদ্ধি বা হ্রাস করে। চাকুরিজীবী বা শ্রমিক কত ঘণ্টা কাজ করবে এবং তার বিনিমিয়ে সে কতটুকু মজুরি, বেতন ও অন্যান্য সুবিধা পাবে, তা চাহিদা ও যোগানের সম্পর্ক দ্বারা ভাবিত হয়।[1]
তথ্যসূত্র
- "Labor Market"। Investopedia।