শ্বসন
শ্বসন একটি বিপাকীয় ক্রিয়া। এ প্রক্রিয়া চলাকালে প্রতিটি জীব পরিবেশ থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে ও কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করে। শারীরবৃত্তীয় শ্বসন হল বাতাস হতে জীবের কলাতন্ত্রে অক্সিজেনের সরবরাহের এবং বিপরীত প্রক্রিয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নির্গমন প্রক্রিয়া। শারীরবৃত্তীয় শ্বসন প্রাণরসায়ন সংজ্ঞায়িত কোষীয় শ্বসন হতে আলাদা যা জীবের কোষে সংঘটিত হয় এবং এক্ষেত্রে অক্সিজেনের সাথে গ্লুকোজের রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে কোষ তার প্রয়োজনীয় শক্তি লাভ করে। শারীরবৃত্তীয় শ্বসন এবং কোষীয় শ্বসন উভয়েই জীবের জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য।
![](../I/Ademhaling.gif)
সরল এককোষী জীবের ক্ষেত্রে গ্যাস আদান-প্রদানের জন্য সাধারণ ব্যাপন প্রক্রিয়া যথেষ্ট কেননা প্রতিটি কোষ বাইরের সরাসরি বাইরের পরিবেশের সংস্পর্শে থাকে, কিন্তু জটিল বহুকোষী জীবের ক্ষেত্রে পরিবেশ এবং একদম ভেতরের কোষগুলোর মাঝে দূরত্ব অনেক বেশি, কাজেই আলাদা শ্বসনতন্ত্রের প্রয়োজন হয়।
শ্বসনের প্রভাবকসমূহ
- বাহ্যিক প্রভাবক
- তাপমাত্রা
- অক্সিজেন
- জল
- আলো
- কার্বন ডাই অক্সাইড
- অভ্যন্তরীণ প্রভাবক
- জটিল খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণ
- উৎসেচক
- কোষের বয়স
- কোষের অজৈব লবণ
- মাটিস্থ অজৈব লবণ
- কোষ-মধ্যস্থ পানি
শ্বসনের প্রকারভেদ
(ক) বহিঃশ্বসন (খ) অন্তঃশ্বসন
ক) বহিঃশ্বসনঃ যে প্রক্রিয়ায় ফুসফুসের মধ্যে গ্যাসীয় আদান-প্রদান ঘটে তাকে বহিঃশ্বসন বলে। এ পর্যায়ে ফুসফুস ও রক্ত জালিকা বা কৈশিক নালীর মধ্যে অক্সিজেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের বিনিময় ঘটে। বহিঃশ্বসন দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়। যথা -
১। প্রশ্বাস বা শ্বাস গ্রহণ
২। নিঃশ্বাস বা শ্বাস ত্যাগ
(খ) অন্তঃশ্বসনঃ অন্তঃশ্বসন প্রক্রিয়ায় দেহকোষস্থ খাদ্য অক্সিজেনের সাহায্যে জারিত হয়ে গতিশক্তি ও তাপশক্তিতে পরিণত হয়।ফুসফুসের রক্তে যে অক্সিজেন প্রবেশ করে তা রক্তের মাধ্যমে বাহিত হয়ে দেহের দূরবর্তী কৈশিক নালিতে পৌছায়।কৌশিকনালীরর গাত্র ভেদ করে আন্ত:কোষস্থ রস হয়ে কোষের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।তারপর এটি কোষের ভিতরের খাদ্যের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে শক্তি উৎপন্ন করে।এই কার্বন ডাই অক্সাইড আবার রক্ত দ্বারা বাহিত হয়ে ফুসফুসে ফেরত আসে।