শেরপুর

শেরপুর বাংলাদেশের উত্তরে অবস্থিত ময়মনসিংহ বিভাগের একটি শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি শেরপুর জেলার সদরদপ্তর। এর আয়তন ২৩.৪ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ৯৭,৯৭৯ জন। এটি ক শ্রেণীর পৌরসভা দ্বারা শাসিত হয়।

শেরপুর
শহর
স্থানাঙ্ক: ২৫.০১৯° উত্তর ৯০.০১৩° পূর্ব / 25.019; 90.013
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগময়মনসিংহ বিভাগ
জেলাশেরপুর জেলা
উপজেলাশেরপুর সদর উপজেলা
সরকার
  ধরনপৌরসভা
  শাসকশেরপুর পৌরসভা
আয়তন
  মোট২৩.৪ বর্গকিমি (৯.০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
  মোট৯৭,৯৭৯
  জনঘনত্ব৪,২০০/বর্গকিমি (১১,০০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+৬)

নামকরণ

পুর্বে শেরপুরে যেতে ব্রহ্মপুত্র নদ খেয়া পাড়ি দিতে হত। খেয়া পারাপারের জন্য দশকাহন কড়ি নির্ধারিত ছিল বলে এ এলাকা দশকাহনিয়া নামে পরিচিতি লাভ করে। সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ভাওয়ালের গাজী, ঈসা খানের বংশধর থেকে দশকাহনিয়া এলাকা দখল করে নেয়। দশকাহনিয়া পরগনা পরবর্তীতে গাজী বংশের শেষ জমিদার শের আলী গাজীর নামানুসারে শেরপুর নামে নামকরণ করা হয়।

ইতিহাস

শেরপুর অঞ্চল প্রাচীনকালে কামরূপা রাজ্যের অংশ ছিল। মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে এই এলাকা দশকাহনিয়া বাজু নামে পরিচিত ছিল। ওয়ারেন হেস্টিংস থেকে কর্ণওয়ালিস-এর সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং স্থানীয় জমিদারদের বিরুদ্ধে ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ অনুষ্ঠিত হয়; ফকির আন্দোলনের নেতা টিপু শাহ এই এলাকায় সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করে এবং গরজরিপার তার রাজধানী স্থাপন করেন। খোশ মুহাম্মদ চৌধুরীর নেতৃত্বে শেরপুরের কামারের চরে ১৯০৬, ১৯১৪ ও ১৯১৭ সালে কৃষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৮৩৮-৪৮ সালে নানকার, টঙ্ক, বাওয়ালী, মহাজনী, ইজারাদারি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শেরপুরে কমিউনিস্টরা বিদ্রোহ করে। ১৮৯৭ সালে এক ভয়াবহ ভূমিকম্প ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ পশ্চিম দিকে পরিবর্তন করে এবং যমুনার সঙ্গে একত্রীকরণ করতে বাধ্য করে; এটি অনেক প্রাচীন ভবনেও মারাত্মক ক্ষতি করে।

ভূগোল

শেরপুর ময়মনসিংহ থেকে উত্তর পশ্চিমে এবং যমুনা সেতু থেকে উত্তর পূর্বে, ২৫°১'৯" উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০'৪৯" পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।[1] সড়কপথে ঢাকা থেকে শেরপুরের দুরত্ব ১৯৮ কিলোমিটার।

জনসংখ্যা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী শেরপুরের জনসংখ্যা ৯৭,৯৭৯ জন।[2] যার মধ্যে পুরুষ ৪৯,৬২২ জন এবং নারী ৪৮,৩৫৭ জন। যারা ২২,৬৬৫টি পরিবারে বা খানায় বাস করে। নারী ও পুরুষের লিঙ্গ অনুপাত হল ১০০ঃ১০৩, যেখানে জাতীয় লিঙ্গ অনুপাত হল ১০০.৩ এবং জাতীয় শহুরে লিঙ্গ অনুপাত হল ১০৯। শেরপুর শহরের স্বাক্ষরতার হার ৫৬.২%, যেখানে জাতীয় শহুরে স্বাক্ষরতার হার ৬৬.৪%।[3]

ঐতিহাসিক স্থাপনা

শেরপুর পৌরসভা

শেরপুর সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমী

প্রশাসন

শেরপুর মিউনিসিপ্যাল ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে মিউনিসিপ্যাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অর্ডার অনুযায়ী মিউনিসিপ্যাল কমিটিতে পরিবর্তন হয়। ১৯৭২ সালে এটি পৌরসভায় রূপান্তর হয়। শেরপুর পৌরসভার আয়তন ২৩.৪ বর্গকিলোমিটার।

শেরপুর পৌরসভা ৯টি ওয়ার্ড ও ৪৬টি মহল্লা নিয়ে গঠিত। প্রতি ওয়ার্ডের জন্য সরাসরি ভোটে নির্বাচিত একজন কাউন্সিলর থাকেন। পৌরসভার প্রধান হলেন মেয়র। এছাড়াও তিন জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রয়েছেন।

তথ্যসূত্র

  1. "25.019398, 90.013863 Latitude longitude Map"www.latlong.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৬
  2. "Sherpur Town"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা ২২৮। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
  3. "BANGLADESH URBAN CENSUS RESULTS AT A GLANCE"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা x। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৯
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.