শামস নাভেদ উসমানি
শামস নাভেদ উসমানি (১৯৩১ – ২৬ আগস্ট ১৯৯৩) একজন ভারতীয় শিক্ষক, দার্শনিক ও মুসলিম পণ্ডিত ছিলেন। তিনি একইসাথে ইসলাম, হিন্দুধর্ম, খ্রিস্টধর্ম, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ শাস্ত্রের পণ্ডিত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাসের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে সংলাপের জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি দেওবন্দের উসমানি পরিবারের সদস্য। উসমানি একইসাথে হিন্দু ও ইসলাম ধর্মে শিক্ষালাভ ও পারদর্শীতার জন্য সম্মানিত আচার্য ও মাওলানা উপাধি লাভ করেছিলেন।[1] তার গবেষণার প্রাপ্তিসমূহ ভারতের শিক্ষাবিদদের কাছে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।
শামস নাভেদ উসমানি | |
---|---|
شمس نوید عثمانی | |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৯৩১ |
মৃত্যু | ২৬ আগস্ট ১৯৯৩ ৬১–৬২) | (বয়স
ধর্ম | ইসলাম |
আদি নিবাস | দেওবন্দ |
নাগরিকত্ব | ভারতীয় |
আন্দোলন | দেওবন্দি |
শিক্ষা | স্নাতকোত্তর |
যে জন্য পরিচিত | ধর্ম বিশ্বাসের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে সংলাপ |
আত্মীয় | দেওবন্দের উসমানি পরিবার |
প্রারম্ভিক জীবন
শামস নাভেদ উসমানি ১৯৩১ সালে দেওবন্দে জন্মগ্রহণ করেন।[2] তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা ফজলুর রহমান উসমানি'র পৌত্র এবং শাব্বির আহমেদ উসমানি'র ভ্রাতুষ্পুত্র।[3] ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ছিলেন। খাদেজা নাভেদ উসমানি তার স্ত্রী।[1] তিনি মাদ্রাসা শিক্ষা গ্রহণ করেননি। দেওবন্দের উলামা পরিবারে জন্মগ্রহণের কারণে শৈশবে নিজগৃহে ইসলাম শিক্ষা গ্রহণ করেন। স্বাগ্রহে সংস্কৃত চর্চা শুরু করেন। তিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতকোত্তর অর্জন করেন এবং উত্তর প্রদেশের রামপুরে আধা-সরকারি বিদ্যালয়ে ইতিহাস ও ভূগোল পড়াতেন।[4]
উল্লেখযোগ্য কর্ম
শামস নাভেদ উসমানি একইসাথে ইসলাম, হিন্দু, খ্রিস্ট, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ ধর্ম শাস্ত্রে পণ্ডিত ছিলেন। তিনি হিন্দুপুরাণে বর্ণিত প্রথম মানব মনুকে ইসলাম ধর্মের নবী নূহ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।[5] ইসলামী ঐতিহ্যে ইঞ্জিল এবং তওরাত সম্পর্কিত বিশ্বাস অনুসারে তিনি দাবি করেছিলেন যে, বেদও একটি ঐশ্বরিক গ্রন্থ, তবে গ্রন্থটির বিশুদ্ধতা নষ্ট হয়েছে।[6] উসমানি পরামর্শ দেন যে, হিন্দু ধর্মানুসারীরা মনু'র প্রতি ভুল বিশ্বাস আরোপ করেছে।[5] তাবিশ মেহেদীর মতে, "তার গবেষণা থেকে যে ফলাফল এসেছে, তা একাডেমিক জগতে অস্থিরতার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে"।[3] তার অধ্যায়নের প্রাপ্তিসমূহ ভারতের শিক্ষাবিদদের কাছ থেকে ব্যাপক সমালোচনা লাভ করে। তিনি একইসাথে আচার্য ও মাওলানা উপাধি ধারণ করেছেন।[2]
শামস নাভেদ উসমানি তার জীবদ্দশায় নিজে কোন গ্রন্থ রচনা করেননি।[2] তবে সৈয়দ আবদুল্লাহ তারিক তার উপাখ্যান সংগ্রহ এবং সংকলন প্রকাশ করেছেন।[4] তার উপাখ্যানসমূহ আগার অভ ভি না জাগে তো গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে।[4]
মৃত্যু
শামস নাভেদ উসমানি ১৯৯৩ সালের ২৬ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।[1]
তথ্যসূত্র
- "Sketch of Shams Naved Usmāni"। workglobal.in (ইংরেজি ভাষায়)। World Organisation of Religions & Knowledge। ২০১৯-০৩-১০। ২০২০-১২-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-০৮।
- সিকন্দ, যোগিন্দর। Muslims in India Since 1947: Islamic Perspectives on Inter-Faith Relations (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা ১৩৩।
- তাবিশ মেহেদি (সেপ্টেম্বর ২০১০)। "Yād-e-Raftgān: Shams Naved Usmāni"। জিন্দেগি-ই-নাউ (উর্দু ভাষায়)। ৩৬ (৯)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-০৮।
- "An innovative approach to Hindu-Muslim dialogue"। টু সার্কেলস। ২০০৮-০৫-১৬। ২০২১-০১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-০৭।
- সিকন্দ, যোগিন্দর। Muslims in India Since 1947: Islamic Perspectives on Inter-Faith Relations (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা ১৩৮।
- সিকন্দ, যোগিন্দর। Muslims in India Since 1947: Islamic Perspectives on Inter-Faith Relations (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা ১৩৭।
গ্রন্থসূত্র
- সিকন্দ, যোগিন্দর। "NOW or NEVER: The inter-faith dialogue project of Acharya Maulana Shams Naved 'Usmani"। Muslims in India Since 1947: Islamic Perspectives on Inter-Faith Relations (২০০৪ সংস্করণ)। রুটলেজ। পৃষ্ঠা ১৩৩–১৫০। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-০৮।