শরৎচন্দ্র কুঠি
শরৎচন্দ্র কুঠি হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাওড়া জেলার অন্তর্গত সমতাবেড় গ্রামে অবস্থিত সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বসতবাটী। শরৎচন্দ্রের জন্ম হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে। কিন্তু তার সাহিত্য জীবনের প্রথম দিনগুলি কেটেছিল হাওড়া জেলার সমতাবেড়ে। এখানে তার বাড়িটি শরৎচন্দ্র কুঠি নামে পরিচিত।
শরৎচন্দ্র কুঠি | |
---|---|
ইতিহাস ও স্থাপত্য
শরৎচন্দ্র সমতা গ্রামে এই বাড়িটিতে থাকতেন। তিনি স্থানীয় জেলে ও ধোপাদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন বলে, সমাজে তাকে একঘরে করা হয়। তারা এই এলাকাটিকে গ্রাম থেকে আলাদা করে নিয়ে সমতাবেড় নাম দিয়েছিল।
আগে রূপনারায়ণ নদ এই বাড়িটির ঠিক পাশ দিয়ে বয়ে যেত। শরৎচন্দ্রের পড়ার ঘর থেকে নদী দেখা যেত। এখন নদী খাত পরিবর্তন করে দূরে সরে গেছে। এই পড়ার ঘরে বসেই শরৎচন্দ্র অভাগীর স্বর্গ, কমললতা, শেষপ্রশ্ন, পল্লীসমাজ, রামের সুমতি, পথের দাবী ও মহেশ-এর মতো গল্প-উপন্যাসগুলি লেখেন। বাড়িটি দোতলা। শরৎচন্দ্র ও তার ভাই স্বামী বেদানন্দ এখানে থাকতেন। বেদানন্দ বেলুড় মঠের সন্ন্যাসী ছিলেন। উভয়ের সমাধিই এই বাড়িতে আছে। শরৎচন্দ্রের স্বহস্তে পোঁতা গুলঞ্চ, পেয়ারা ইত্যাদি গাছ এই বাড়িতে এখনও রয়েছে। এটি এখন একটি পর্যটন কেন্দ্র।[1]
যে মাটির ঘরটি বাড়ির রান্নাঘরটি ১৯৭৮ সালের বন্ন্যায় ভেঙে পড়ে। হাওড়া জেলা পরিষদ ৭৭,০০০ টাকা খরচ করে ওটি আবার তৈরি করে দেয়। ২০০১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন অ্যাক্ট অনুসারে এটিকে ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক স্থলের স্বীকৃতি দেয়।[2][3] ২০০৯ সালে পুরো বাড়িটি সংস্কার করা হয়েছে।
গ্যালারি
- বাড়ির একতলায় শরৎচন্দ্রের পড়ার ঘর।
- বাড়ির ভিতর।
- শরৎচন্দ্রের হাতে লাগানো গাছ।
- শরৎচন্দ্রের সমাধি।
- পল্লীসমাজ উপন্যাসের উল্লিখিত পুকুর।
- বাড়ির ঠাকুরদালান।
- বাড়ির সামনে শরৎচন্দ্রের মূর্তি।
- শরৎচন্দ্রের ব্যবহৃত আসবাবপত্র।
- একতলার একটা ঘর।
- রান্নাঘর। মূল মাটির ঘরটি ১৯৭৮ সালের বন্যায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
পাদটীকা
- "House of Sarat Chandra"। ২৩ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১২।
- Origin of W.B. Heritage Commission
- "West Bengal Heritage Commission Act 2001 (Act IX of 2001)" (পিডিএফ)। ২২ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১২।