শফি উসমানি
মুহাম্মদ শফি বিন মুহাম্মাদ ইয়াসিন উসমানি দেওবন্দি (উর্দু: محمد شفیع بن محمد ياسین عثمانی دیوبندی; আরবি: محمد شفيع بن محمد ياسين العثماني الديوبندي, Muḥammad Shafī‘ ibn Muḥammad Yāsīn al-‘Uthmānī ad-Diyūbandī; আনু. ২৫ জানুয়ারী ১৮৯৭ – ৬ অক্টোবর ১৯৭৬),[note 1] বা মুফতি মুহাম্মদ শফি ছিলেন পাকিস্তানের দেওবন্দি ধারার বিখ্যাত সুন্নি ইসলামি পণ্ডিত।
মুহাম্মদ শফি উসমানি | |
---|---|
مفتی محمد شفیع | |
দারুল উলুম করাচির প্রথম মুহতামিম | |
অফিসে ১৯৫১ – ৬ অক্টোবর ১৯৭৬ | |
পূর্বসূরী | অবস্থান তৈরি করা হয়েছে |
উত্তরসূরী | আবদুল হাই আরিফী |
দারুল উলুম দেওবন্দের ৪র্থ প্রধান মুফতি | |
অফিসে আনু. ১৩ আগস্ট ১৯৩১ – আনু. নভেম্বর ১৯৩৫ | |
পূর্বসূরী | রিয়াজুদ্দিন বিজনুরি |
উত্তরসূরী | মুহাম্মদ সাহুল ভাগলপুরী |
দারুল উলুম দেওবন্দের ৭ম প্রধান মুফতি | |
অফিসে আনু. ৪ এপ্রিল ১৯৪০ – আনু. ২৩ মার্চ ১৯৪৩ | |
পূর্বসূরী | কিফায়াতুল্লাহ গাঙ্গুহী |
উত্তরসূরী | ফারুক আহমদ |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | আনু. ২৫ জানুয়ারি ১৮৯৭ |
মৃত্যু | ৬ অক্টোবর ১৯৭৬ ৭৯) | (বয়স
ধর্ম | ইসলাম |
জাতীয়তা | পাকিস্তানি |
নাগরিকত্ব |
|
যুগ | বিংশ শতাব্দীর দর্শন |
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
ধর্মীয় মতবিশ্বাস | মাতুরিদি |
আন্দোলন | দেওবন্দি |
প্রধান আগ্রহ | তাফসির |
উল্লেখযোগ্য কাজ | মাআরিফুল কুরআন |
যেখানের শিক্ষার্থী | দারুল উলুম দেওবন্দ |
তরিকা | চিশতি (সাবিরি-ইমদাদি) |
মুসলিম নেতা | |
এর শিষ্য | আশরাফ আলি থানভি মাহমুদ হাসান দেওবন্দি |
শিষ্য | |
যার দ্বারা প্রভাবিত
| |
যাদের প্রভাবিত করেন
|
তিনি একজন হানাফী আইনজ্ঞ এবং মুফতি। শরিয়াহ, হাদীস, কুরআনের ব্যাখ্যা ছাড়া সুফিতত্ত্বের উপরও তার অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল। ব্রিটিশ ভারতের দেওবন্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দারুল উলূম দেওবন্দ থেকে ১৯১৭ সালে স্নাতক হন, যেখানে তিনি পরে হাদিস শিক্ষা দেন এবং প্রধান মুফতির পদে অধিষ্ঠিত হন। পাকিস্তান আন্দোলনে সময় দেওয়ার জন্য তিনি ১৯৪৩ সালে দেওবন্দ থেকে ইস্তফা দেন। স্বাধীনতার পর তিনি পাকিস্তানে চলে যান, যেখানে তিনি ১৯৫১ সালে দারুল উলূম করাচি প্রতিষ্ঠা করেন। তার লিখিত রচনাগুলির মধ্যে কুরআনের তাফসীর মাআরিফুল কুরআন সর্বাধিক পরিচিত।[2]
জন্ম এবং বাল্যকাল
মুহাম্মাদ ইয়াসিনের পুত্র মুহাম্মদ শফি ২৫শে জানুয়ারী ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে (২১ শাবান ১৩১৪ হিজরী) ব্রিটিশ ভারতের দেওবন্দে একটি উসমানি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[3][4] তার নাম "মুহাম্মদ শফি" محمد شفيع) তার পিতার উস্তাদ রশিদ আহমদ গাঙ্গুহির প্রদায়িত। যদিও তার আসল নাম তার দাদা খলিফা তাহসিন আলি মুহাম্মদ মুবিন (محمد مبین) রেখেছিলেন।[4][5][6] শফি একটি ধর্মীয় পরিবেশে বেড়ে উঠেন। শৈশবে তিনি দারুল উলূম দেওবন্দের আঙিনায় খেলাধুলা করতেন এবং তাঁর পিতার সাথে বসতেন, যিনি মাদরাসাটির শিক্ষক ছিলেন।[6]
জীবনী
মুফতী মুহাম্মদ শফি ১৩১৪ হিজরী সনের শা'বান মাসের ২১ তারিখে (২৫ জানুয়ারি ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দ) জন্মগ্রহণ করেন । তার নাম "মুহাম্মদ শফি" হযরত রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী কর্তৃক প্রস্তাবিত। ১৩২৫ হিজরীতে (১৯০৭/১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে) তিনি দারুল উলূম দেওবন্দে ভর্তি হন । তিনি ১৩৩৬ হিজরীতে (১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দ) দারুল উলূম দেওবন্দ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন, তখন তার বয়স ২১ বছর ছিল। এরপর ১৩৩৭ হিজরীতে (১৯১৮/১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দ) তিনি দারুল উলূম দেওবন্দের প্রাথমিক শ্রেণীর শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি খুবই তাড়াতাড়ি উচ্চতর শ্রেণীর শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ১৩৫০ হিজরী সনে (১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দ) দারুল উলূম দেওবন্দের মুফতীয়ে আযম তথা প্রধান মুফতী (গ্রেন্ড মুফতী) নিযুক্ত হন। দেশ বিভাগের পর তিনি তার পিতৃভূমি দেওবন্দ ছেড়ে পাকিস্তান চলে আসেন। তিনি ১৩৭০ হিজরীতে (১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দ) পাকিস্তানে দারুল উলূম করাচী প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় দেড়শত এর মত বই (কিতাব) লেখেছেন। তার বিশ্বখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ "মা'আরিফুল কুরআন" যা বহু ভাষায় অনুবাদ হয়েছে যা তিনি সমাপ্ত করেন (ঊর্দূতে) তার মৃত্যুর চার বছর আগে। এই আলেমে দ্বীন ও মনীষী ১৩৯৬ হিজরী সনের শাওয়াল মাসের ১০ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।[7][8]
আরো দেখুন
পাদটীকা
- ياسين (ইয়াসিন) এর বানান یٰسین ও লেখা হয়ে থাকে।
তথ্যসূত্র
- "إجازة الشيخ محمد شفيع للشيخ عبدالعزيز في الحديث وثنائه عليه"। binbaz.org.sa।
- রিজভী, সৈয়দ মেহবুব (১৯৮১)। History of Darul Uloom Deoband [দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাস]। ২। এফ. কুরাইশি, মুরতাজ হুসাইন কর্তৃক অনূদিত। দেওবন্দ: ইদারায়ে এহতেমাম। পৃষ্ঠা ৯৩–৯৪। ওসিএলসি 20222197।
- Muhammad Taqi Usmani (৪ ডিসেম্বর ২০১১) [Originally written March 1964]। "Shaykh Muhammad Shafi': The Mufti of Pakistan"। Deoband.org। Translated by Zameelur Rahman from introduction to Zafar Ahmad Usmani; Jamil Ahmad Thanawi; Muhammad Shafi Deobandi; Muhammad Idris Kandhlawi (২০০৮) [First published 1987]। احكام القرآن / Aḥkām al-Qur'ān (আরবি ভাষায়)। Volume 3। Karachi: ادارة القرآن والعلوم الاسلامية / Idārat al-Qur’ān wa-al-‘Ulūm al-Islāmīyah। পৃষ্ঠা 1–19।
- Muhammad Rafi Usmani (মে ২০০৫) [First published 1994]। حیات مفتی اعظم / Ḥayāt-i Muftī-yi A'ẓam (উর্দু ভাষায়)। Karachi: ادارة المعارف / Idāratul-Ma‘ārif।
- Sayyid Mahbub Rizvi (১৯৮১)। History of the Dar al-Ulum Deoband। Volume 2। Translated by Prof. Murtaz Husain F. Quraishi। Deoband, India: Idara-e Ihtemam, Dar al-Ulum।
- Muhammad Shafi Deobandi (c. 1973)। "Rare interview on YouTube: Mufti Shafi Usmani talks about his life (1973 interview in Urdu language with captions in English)" (সাক্ষাৎকার)। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - আশরাফ খাতাক, মুহাম্মদ শাহাব (২০১৩)। "Mufti Muhammad Shafi and Tafsir Maariful Qur'an: An Introduction & Review" (পিডিএফ)। Gomal University Journal of Research: ১২৯–১৩৪। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০১৩।
গ্রন্থপঞ্জি
- বিরিশিক, আব্দুলহামিত (২০২০)। MUHAMMED ŞEFΑ DİYÛBENDÎ। টিডিবি এনসাক্লোপিডিয়া অব ইসলাম (তুর্কি ভাষায়)। ৩০। ইস্তাম্বুল, তুরস্ক: ইসলামি গবেষণা কেন্দ্র, ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর। পৃষ্ঠা ৫৭৩–৫৭৪। আইএসবিএন 9789753894142।
- আজমী, নূর মুহাম্মদ (২০০৮)। হাদিসের তত্ত্ব ও ইতিহাস। বাংলাবাজার, ঢাকা: এমদাদিয়া পুস্তকালয়। পৃষ্ঠা ১৯২।
বহিঃসংযোগ
- মাটির ঘর
- তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন
- আবদুর রাজ্জাক, অধ্যক্ষ (২০১৫)। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ১০০ মুসলিম মনীষী। বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০: মীনা বুক হাউস। পৃষ্ঠা ৪১২। আইএসবিএন 9789848360194।
- সাখরবী, আবদুর রউফ (মে ২০১৬)। আশরাফী আকাশের দুই নক্ষত্র। আবুল কালাম সিদ্দিক, কাজী কর্তৃক অনূদিত। বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০: মাকতাবাতুত তাকী। পৃষ্ঠা ১৩ — ৮১।
- গোলাম রব্বানী, ডক্টর (২০১৪)। উর্দু সাহিত্যে খ্যাতিমান আলিমদের অবদান (১৮৫৭ - ১৯৪৭)। বাংলাবাজার, ঢাকা: মাকতাবাতুত তাকওয়া। পৃষ্ঠা ১৬২–১৭২, ৩৮৬। আইএসবিএন 9789849039107।