শঙ্খিনী
শঙ্খিনী বা ভোতালেজ কেউটে বা ডোরা কাল কেউটে বা ডোরা শঙ্খিনী বা শাঁখামুটি (ইংরেজি: Banded Krait) বৈজ্ঞানিক নাম: Bungarus fasciatus) হচ্ছে এলাপিডি পরিবারভুক্ত এক প্রকার বিষধর সাপ। এটি Bungarus গণের আওতাভুক্ত। এই সাপের বিস্তৃতি দেখা যায় ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায়।[1] এটি কেউটে সাপের ভেতরে সবচেয়ে দীর্ঘ এবং এটির সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য হতে পারে ২.১ মি (৬ ফু ১১ ইঞ্চি)।[2]
শঙ্খিনী বা শাঁখামুটি Banded krait | |
---|---|
![]() | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | কর্ডাটা |
উপপর্ব: | Vertebrata |
শ্রেণী: | Reptilia |
বর্গ: | Squamata |
উপবর্গ: | Serpentes |
পরিবার: | Elapidae |
গণ: | Bungarus |
প্রজাতি: | B. fasciatus |
দ্বিপদী নাম | |
Bungarus fasciatus (স্নাইডার, ১৮০১) | |
প্রতিশব্দ | |
|
বর্ণনা
শঙ্খিনীদের সহজেই চিহ্নিত করা যায় তাদের সুপরিচিত কালোর মধ্যে হলুদ ডোরা দিয়ে। তবে হলুদের মধ্যে মাথা হতে লেজ পর্যন্ত সোজা কালো ডোরাও দেখে গেছে যদিও তা বিরল খুব। শঙ্খিনী/ডোরা কাল কেউটে সাপের দৈর্ঘ্য ১৫০ সেমি, সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ২২৫ সেমি পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়েছে। সাপটি বেশ বড় হলেও সাপটির লেজের অংশটি ছোট ও ভোতা। সদ্য প্রস্ফুটিত অবস্থায় এদের দৈর্ঘ্য ২০ থেকে ৪০ সেমি উল্লেখ করা হয়েছে।[3] এই সাপটি সাধারনত মানুষ দেখলে পালানোর চেষ্টা করে। মাথা ঝোপ বা মাটির মধ্যে লুকিয়ে রাখে। তখন ভোতা লেজটিকে অনেকে মাথা ভেবে ভুল করে।
স্বভাব
শান্ত ও লাজুক স্বভাবের। সাধারণত মানুষ এড়িয়ে চলে। এমনকি বিরক্ত করলে শরীর পেঁচিয়ে মাথা শরীরের নিচে লুকিয়ে রাখে। বলা যায় মানুষের জন্য হুমকিস্বরুপ নয় মোটেও। তবে শিকারে বেশ দ্রুত। অন্য সাপ খায় বিশেষ করে রাসেল ভাইপারের মত বিষাক্ত সাপগুলিও। কাল কেউটে সাপ সমতল ভূমির উন্মুক্ত স্থানে বাস করে। তবে পাহাড়ি জলস্রোতেও এদের দেখা যায়। এরা ধীর গতিসম্পন্ন এবং তীব্র বিষ ধারণ করে। স্ত্রী সাপ এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে ৪ থেকে ১৪টি ডিম দেয় এবং ডিমের পরিস্ফুটনকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করে। ডিমের পরিস্ফুটনের জন্য ৬১ দিন সময় লাগে।[3]
বিস্তৃতি
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষে ডোরা কাল কেউটে সাপকে বাংলাদেশের আবাসিক সাপ হিসেবে ধরা হয়েছে। এ প্রজাতির সাপ বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় ব্যাপক বিস্তৃত। এরা ভারত, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, লাওস, ম্যাকাও, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং ব্রুনেই অংশে পাওয়া যায়।[3]
অবস্থা
আইইউসিএন এটিকে বাংলাদেশে বিপন্ন এবং বিশ্বে বিপদমুক্ত বলে বিবেচনা করে।[3] বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[4]
তথ্যসূত্র
- "Clinical Toxinology-Bungarus fasciatus"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৫।
- Smith, Malcolm A. Fauna of British India...Vol III - Serpentes, pages 411 to 413
- জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.), বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: উভচর প্রাণী ও সরীসৃপ, খণ্ড: ২৫ (ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০০৯), পৃ. ১৬৭।
- বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৫০৭
বহিঃসংযোগ

- Integrated Taxonomic Information System - Bungarus fasciatus