লেপচা জাতি

লেপচা, রোংকুপ ও রোংপা ইত্যাদি বিবিধ নামে পরিচিত এই জাতি ভারতীয় রাজ্য সিকিম এবং নেপালের আদিবাসীদের মধ্যে অন্যতম। এদের সংখ্যা প্রায় ৮০,০০০। পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম ভুটান, তিব্বত, দার্জিলিং, পূর্ব নেপালের ১ নং প্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়েও অনেক লেপচা জাতির লোকেদের দেখা পাওয়া যায়। অঞ্চলভেদে লেপচা জনগোষ্ঠী চারটি প্রধান স্বতন্ত্র সম্প্রদায়ের সমন্বয়ে গঠিত। এই চার সম্প্রদায়ের নাম হল, সিকিমের রেঞ্জংমু; কালিম্পং, কার্সিয়ং এবং মিরিকের দামসাংমু ; নেপালের ইলাম জেলার ইলামু; দক্ষিণ-পশ্চিম ভুটানের সামতসে এবং চুখার প্রমু। [1] [2] [3]

লেপচাদের নিজস্ব ভাষা আছে, যা লেপচা ভাষা নামে পরিচিত। এটি তিব্বত-বার্মা ভাষার বোডিশ-হিমালয় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত। লেপচারা তাদের ভাষা তাদের নিজস্ব লিপিতে লেখে, যাকে বলা হয় রং বা লেপচা লিপি, যা তিব্বতি লিপি থেকে উদ্ভূত। এই লিপি ও ভাষা সতেরো এবং আঠারো শতকের মধ্যে বিকশিত হয়েছিল। সম্ভবত সিকিমের তৃতীয় চোগিয়াল (তিব্বতীয় রাজা) এর রাজত্বকালে থিকুং মুন্সুলং নামে একজন লেপচা পণ্ডিত দ্বারা এই ভাষার বিকাশ ঘটে। [1]

বেশিরভাগ লেপচারা বৌদ্ধ, যদিও লেপচাদের একটি বিশাল সংখ্যক জনগন আজ খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছে। [4] [5] কিছু লেপচা তাদের শামানবাদী ধর্ম ত্যাগ করেনি, যা মুন নামে পরিচিত।। কিছু লেপচাদের মধ্যে মুন এবং বৌদ্ধ ধর্মের আচারগুলি প্রায়শই একে অপরের পাশাপাশি পরিলক্ষিত হয়। উদাহরণস্বরূপ তাদের একটি আচার অনুসারে ট্যান্ডং লো রুমফ্যাট নামক স্থানীয় অনুষ্ঠানগুলিতে পৈতৃক পর্বতশৃঙ্গগুলিকে নিয়মিতভাবে সম্মানিত করা হয়। [1] সিকিমে, লেপচারা ৩৭০ টিরও বেশি প্রজাতির প্রাণী, ছত্রাক এবং গাছপালা তাদের আচার ও অনুষ্ঠানে ব্যবহার করে। [6] নেপালের ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, নেপালের ৩,৬৬০ জন লেপচা-এর মধ্যে ৮৮.৮০% বৌদ্ধ এবং ৭.৬২% হিন্দু। সিকিম, দার্জিলিং এবং কালিম্পং পাহাড়ের অনেক লেপচা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহন করেছে। [5] [4] যদিও এদের মধ্যে বৌদ্ধ ধর্মও প্রচলিত।

তথ্যসূত্র

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.