লুক্সেমবুর্গের ভূগোল

লুক্সেমবুর্গ একটি ছোট্ট দেশ। এটি উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ এর অংশে অবস্থিত একটি নিম্ন ভূমির দেশও বটে। এর সীমান্ত বরাবর রয়েছে পশ্চিম এবং উত্তর দিকে বেলজিয়াম ১৪৮ কিলোমিটার (৯২ মাইল), দক্ষিণ দিকে ফ্রান্স (২৩ কিমি [১৪ মা]) এবং পূর্ব দিকে জার্মানি (১৩৮ কিমি [৮৬ মা])। উত্তর সাগর থেকে বেলজিয়াম দ্বারা পৃথক হয়ে যাওয়ার কারণে লুক্সেমবুর্গ একটি পুরোপুরি স্থলবেষ্টিত দেশ।

লুক্সেমবুর্গের শহর ও নদী

দেশটির ভূসংস্থান খুব স্পষ্টভাবে বিভক্ত। গ্র্যান্ড ডুচির উত্তর তৃতীয়াংশে পার্বত্য ওয়েসলিং এবং দক্ষিণ দিকে দুই তৃতীয়াংশ দখল করে রয়েছে সমতল গুটল্যান্ড। দেশের দীর্ঘতম নদী হ'ল সাউয়ের। এটি মোজেলের একটি শাখা নদী। এই সাউয়ের-এর প্রায় পুরো অববাহিকা জুড়ে রয়েছে লুক্সেমবুর্গের অঞ্চল। অন্যান্য প্রধান নদীগুলির মধ্যে রয়েছে দক্ষিণে আলজেট এবং উত্তর দিকে উইল্টজ

রাজধানী এবং এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় শহরটি হল লুক্সেমবুর্গ শহর যা গুটল্যান্ডে অবস্থিত। এখানে এস্ক-সুর-আলজেট, ডুডেল্যাঞ্জ, এবং ডিফারডেঞ্জ সহ দেশের বেশিরভাগ প্রধান জনসংখ্যা কেন্দ্র রয়েছে। লুক্সেমবুর্গ ছাড়াও অন্যান্য প্রধান শহরগুলি মূলত দক্ষিণের রেড ল্যান্ডস অঞ্চলে অবস্থিত যা দক্ষিণে লুক্সেমবুর্গ এবং ফ্রান্সের সীমানা রেখা বরাবর অবস্থান করছে।

প্রাকৃতিক ভূগোল

ভূসংস্থান

লুক্সেমবুর্গের রিলিফ মানচিত্রে উত্তরের পার্বত্য ওসলিং এবং দক্ষিণের গুটল্যান্ড এর মধ্যে দ্বিবিভাজন স্পষ্টত চিত্রিত করছে।

আকার ছোট হলেও ভূদৃশ্যে দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য সহ লুক্সেমবুর্গের বৈচিত্রপূর্ণ ভূসংস্থান রয়েছে দেখা যায়। দেশের উত্তর ভাগ আরর্দেনস এর মালভূমির অংশ দ্বারা গঠিত। সেখানে পর্বতের উচ্চতার বিস্তার ৪৫০ থেকে ৬০০ মিটার (১,৫০০ থেকে ২,০০০ ফুট) পর্যন্ত। দেশের বাকি অংশ সুবিস্তৃত উপত্যকার সাথে ঢেউখেলানো গ্রামাঞ্চল নিয়ে গঠিত। রাজধানী লুক্সেমবুর্গ শহর দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত।

ইউরোপের সবুজ হৃদয়

যেহেতু এখানের মাটি চাষ করার পক্ষে খুব কঠিন তাই বেশিরভাগ জমি গবাদি পশুদের জন্য চারণভূমি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। আর্দনেস অঞ্চলটিও আপার সিওর ন্যাশনাল পার্ক এর অন্তর্গত। এই পার্কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষণ অঞ্চল এবং সেখানে হাইকারের পশ্চাদপসরণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

সাউয়ের এর দক্ষিণ অংশটি সে দেশে গুটল্যান্ড নামে পরিচিত। এই অঞ্চলটি দেশের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি স্থান জুড়ে রয়েছে।

ক্রমশ উঁচু দেখতে ভূখণ্ডটির গড় উচ্চতা ২০০ মি (৭০০ ফু)। উর্বর মাটি থেকে গুটল্যান্ড শব্দটি উদ্ভূত এবং ঐ অঞ্চলে কৃষিকাজই মূল জীবিকা। ডুচির এই অংশটিতে ওসলিং অঞ্চলের তুলনায় গ্রীষ্মের অভিজ্ঞতা হয় উষ্ণ ও শুষ্ক।

ফলে স্ট্রবেরি, আপেল এবং চেরি জাতীয় ফল এবং শাকসবজি প্রচুর পরিমাণে জন্মায়। এই অঞ্চলে নদীর ক্ষয়ের ফলে গভীর গর্জ এবং গুহা সৃষ্টি হয়েছে। সে গুলির দ্বারা এই অঞ্চলে বেশ কিছু দর্শনীয় দৃশ্যাবলী তৈরি হয়েছে।

দেশের এক্কে বারে দক্ষিণে "লাল পাথরের জমি" রয়েছে যা এখানে প্রাপ্ত সঞ্চিত খনিজের একটি নিদর্শণ স্বরূপ। প্রায় ১৯ কিমি (১২ মা) প্রসারিত ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ লোহা আকরিক এর জন্য জেলাটি রোমানদের সময় বা তারও আগে থেকে পরিচিত ছিল। লৌহ এবং ইস্পাত কাজের লম্বা চিমনিগুলি শিল্প নির্ভর দক্ষিণের ভূমির সাধারণ চিহ্ন-স্বরূপ। পূর্ব দিকে রয়েছে আঙ্গুর-উৎপাদক মোজেল এর উপত্যকা। নদীর তীর ধরে গভীর উপত্যকায় ও দ্রাক্ষাক্ষেত্রের পিছনে অসংখ্য গ্রাম। বেশিরভাগ গ্রামে কমপক্ষে একটি ওয়াইনারি রয়েছে। এই পূর্বদিকেই রয়েছে "লিটল সুইজারল্যান্ড" অঞ্চলটি। এই উপত্যকাটি কাঠ এবং অস্বাভাবিক শিলা গঠনের বৈশিষ্ট্যযুক্ত ক্ষেত্র।

তথ্যসূত্র

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.