লাসা
লাসা (ইংরেজি ভাষা: Lhasa) তিব্বতের রাজধানী। এটি ঐতিহাসিকভাবে দালাই লামার বাসস্থানও বটে। এই শহরকে তিব্বতী বজ্রযান বৌদ্ধধর্মের আঁতুরঘরও বলা হয়
লাসা 拉萨市 • ལྷ་ས་གྲོང་ཁྱེར། | |
---|---|
Prefecture-level city | |
চীন এবং তিব্বতের মধ্যে অবস্থান | |
Relief map of Lhasa | |
স্থানাঙ্ক: ২৯°৩৯′ উত্তর ৯১°০৭′ পূর্ব | |
দেশ | চীন |
অঞ্চল | তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল |
সরকার | |
• ধরন | Prefecture-level city |
• মেয়র | জাং তিনগিং |
• ডেপুটি মেয়র | জিগমে নামগ্যাল |
আয়তন | |
• Prefecture-level city | ২৯,২৭৪ বর্গকিমি (১১,৩০৩ বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ১৬৮ বর্গকিমি (৬৫ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ৪,২০০ মিটার (১৩,৮০০ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১০) | |
• Prefecture-level city | ৫,৫৯,৪২৩ |
• জনঘনত্ব | ১৯.১/বর্গকিমি (৪৯/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | চীন সময় (ইউটিসি+8) |
এলাকা কোড | ৮৯১ |
ওয়েবসাইট | www |
লাসা শব্দটির আক্ষরিক অর্থ দেবতাদের আবাস। প্রাচীন তিব্বতী দলিলপত্র অনুযায়ী এই স্থানের আদি নাম ছিল রাসা (যার অর্থ দরবার বা ছাগলের আবাস)। সমূদ্রসমতল হতে এর উচ্চতা ৩,৬৫০ মিটার ১২,০০০ ফুট), যা বিশ্বের উচ্চতম শহর গুলির মধ্যে পড়ে। এখানে প্রায় ৩০০০০০ এর অধিক লোক বাস করে।
অবস্থান
লাসা তিব্বত এর রাজধানী। একে নিষিদ্ধ শহরও বলা হয়ে থাকে। শহরের আয়তন ১৬৮ বর্গ কিলোমিটার।[1][2]
ইতিহাস
তিব্বতের বৌদ্ধদের জীবন্ত ঈশ্বরনামে খ্যাত আগের দালাই লামার নগরী লাসার নামের অর্থ ‘দেবতাদের ভূমি‘ (Land of the Gods)। তিব্বতের প্রাচীন পাণ্ডুলিপি অনুযায়ী, আগে এ জায়গার নাম ছিল ‘রাসা’ যার মানে কিনা ‘ছাগলদের ভূমি’। তবে হতে পারে শব্দটা এসেছে রাও-সা থেকে যার মানে ‘দেয়াল আবিষ্ট এলাকা’। হতে পারে, মারপরি টিলার রাজকীয় পরিবারের শিকার করবার সংরক্ষিত এলাকা হবার কারণে এরকম নাম ছিল। ৮২২ সালে চীন ও তিব্বতের মাঝে হয়ে যাওয়া চুক্তিতে প্রথমবারের মতো ‘লাসা’ নামখানা উল্লেখিত দেখা যায়। প্রসংগত উল্লেখ্য, রাজা সংস্তান গ্যাম্পোকে বলা হয় তিব্বতী সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা, যার হাত ধরে এখানে বৌদ্ধ ধর্মের আবির্ভাব হয়।
দর্শনীয় স্থান
- পোটালা প্রাসাদ
এটা মূলত দালাই লামার শীতকালীন আবাস। ১৬৪৫ সালে পঞ্চম দালাই লামা নির্মাণ করেন পোটালা প্রাসাদ। পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় একটি জায়গা হলো এই প্রাসাদ যেখানে রয়েছে ১৩টি তলা, প্রায় ১,০০০ কক্ষ, ১০,০০০ মঠ এবং ২ লাখ মূর্তি। মার্পো রি বা রেড হিলের চূড়ায় ৩৮৪ ফুট উঁচু এ প্রাসাদ উপত্যকা ভূমি থেকে প্রায় ১,০০০ ফুট উঁচু।
- জোখাং মন্দির
রাজা সংস্তান গ্যাম্পো সপ্তম শতকে এটি নির্মাণ করেন। এখানে রয়েছে শাক্যমুনি বুদ্ধের মূর্তি, যেটি কিনা রাজকুমারী ওয়েন চেং ১,৩০০ বছর আগে নিয়ে আসেন, তিব্বতের সবচেয়ে পূজনীয় বস্তু এটিই। চার তলা উঁচু সোনায় মোড়া ছাদওয়ালা মন্দিরটি দক্ষিণমুখী ও দেখতে চমৎকার। পুরনো লাসার মাঝখানে অবস্থিত বার্খোর স্কোয়ারে রয়েছে এ মন্দিরটি।
- নরবুলিংখা প্রাসাদ
এটি দালাই লামার গ্রীষ্মকালীন আবাস। ১৭৫৫ সালে সপ্তম দালাই লামা এটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই পুরনো প্রাসাদখানাতে আছে ছোট একটি চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং একটি ম্যানশন। পোটালা থেকে এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নরবুলিংক্ষা পর্যটনের বড় একটি কেন্দ্র।
- বার্খোর স্ট্রিট মার্কেট
সপ্তদশ শতকের মাঝে তিব্বতের বিদেশী পণ্য কেনাবেচার শ্রেষ্ঠ স্থান হয়ে দাঁড়ায় জমজমাট বার্খোর। এ এলাকায় থাকতেন বণিক ও দেশান্তরীগণ। স্থানটি মুখর থাকে পর্যটকদের বুলিতে। তিব্বতী নানা হাতের কারুকাজ এখানে কিনতে পাওয়া যায়।
- তিব্বত জাদুঘর
১৯৯৯ সালের ৫ অক্টোবর তিব্বত মিউজিয়ামের যাত্রা শুরু হয়। এটি তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় যাদুঘর। এখানে প্রায় ১,০০০ এর মতো মূল্যবান বস্তু রয়েছে। পোটালা প্রাসাদের পশ্চিমে নরবুলিংখা রোডের কোণায় একটি L-আকৃতির ভবনে এ মিউজিয়াম রয়েছে।
তথ্যসূত্র
- "Lhasa City Master Plan"। gov.cn। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৮-০৭।
- Cox, W (২০১৮)। Demographia World Urban Areas. 14th Annual Edition (পিডিএফ)। St. Louis: Demographia। পৃষ্ঠা 84।
বিষয়শ্রেণিঃলাসার মোট জনসংখ্যা www.lasa.gov.cn