লাকি আলী
লাকি আলী (জন্ম: ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৫৮), জন্ম নাম হিসেবে পরিচিত মাকসুদ আলী, হলেন একজন ভারতীয় গায়ক, গীতিকার, সুরকার এবং অভিনেতা। লাকি তার গভীর বা উচ্চ ভাবপূর্ন ধাচের গান কিন্তু সাবলীলভাবে গান গাওয়া ও সুমধুর কন্ঠের জন্য সুপরিচিত।
লাকি আলী | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্ম নাম | মাকসুদ আলী |
জন্ম | মুম্বাই, ভারত | ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৫৮
ধরন | পপ, বিশ্ব, লোক |
পেশা | গীতিকার, শিল্পী, সুরকার, রেকর্ড প্রযোজক, অভিনেতা, মানবপ্রেমিক |
বাদ্যযন্ত্র | কন্ঠ |
কার্যকাল | ১৯৬২-বর্তমান |
লেবেল | ক্রেসসেন্ডো মিউজিক, সনি, ইউনিভার্সাল মিউজিক, জী রেকর্ডস, টি-সিরিজ, লাকি আলী ইন্টারটেইন্টমেন্ট |
ওয়েবসাইট | অফিসিয়াল সাইট অফিসিয়াল ব্লগ |
জীবনী
লাকি আলী ছিলেন জনপ্রিয় বলিউড কৌতুকাভিনেতা মেহমুদ আলীর সন্তান। তিনি ৮ ভাই-বোনদের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন। তার মাতা মালেকা ছিলেন বাঙালী এবং কিছুটা পাঞ্জাবি, এছাড়াও তিনি ১৯৬০ সালের একজন জনপ্রিয় ভারতীয় অভিনেত্রী মীনা কুমারী বোন। বলিউড অভিনেত্রী ও নৃত্য শিল্পী মিনো মুমতাজ হলেন তার পৈতৃক দিক থেকে চাচী। তিনি বম্বে স্কটিশ স্কুল মুম্বাইয়ে মানেকজি কুপার (কিন্ডারগার্টেন) (জুহু) পড়ালেখা করেন।[1]
আলী কঠোর মুসলিম হিসেবে পরিচিত। আলী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গীতে তার প্রিয় কুরআন এর অংশবিশেষ পাঠ করেন। কিন্তু তিনি বলছেন যে, ধর্ম উপর থেকে প্রচারিত হওয়ার কিছু নেই, কিন্তু একটি আধ্যাত্মিক অন্বেষী ঈশ্বরের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য ব্যবহার করে এমন একটি ব্যক্তিগত শাসন। [2] আলীর প্রথম স্ত্রী মেঘান জেনি ম্যাকক্লিয়ারী তার প্রথম অ্যালবাম সুনোহতে ভিডিও ও সানাম অভিনয় করেন। তার প্রথম স্ত্রী থেকে দুটি সন্তান রয়েছে- তাউজ এবং তাসমিয়া। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম হল ইনায়া (পার্সী মেয়ে)। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী থেকে সারা ও রাইয়ান নামে দুটি সন্তান রয়েছে। তিনি ২০১০ সালে তৃতীয়বারের মত বিবাহ করেন। তার তৃতীয় স্ত্রী ব্রিটিশ মডেল এবং সাবেক মিস ইংল্যান্ড কেট হ্যালাম।[3][4]
ব্যক্তিগত অ্যালবাম
লাকি একজন পপ গায়ক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন যেটি গভীর বা উচ্চ ভাবপূর্ন অ্যালবাম সুনাো এর মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন। এই অ্যালবামটি ভারতীয় সঙ্গীত জগতে শীর্ষ অনেক পুরস্কার জিতে নেয়, যেমন- শ্রেষ্ঠ পপ পুরুষ গায়ক ১৯৯৬ এর স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডসে এবং চ্যানেল ভি ১৯৯৭ সালের দর্শকর চয়েস অ্যাওয়ার্ড। এটা ৬০ সপ্তাহের জন্য এমটিভি এশিয়ার টপচার্টে ছিল। সুনো এ্যালবাম থেকে তার গান ও সানাম আলীর কর্মজীবন সুদুরপ্রসারী এবং শ্রেষ্ঠ ভারতীয় পপ শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।[1] তার পরবর্তী এ্যালবাম সিফার, সুনো এ্যালবামের মত পুরোপুরি সাফল্য অর্জন করেনি, কিন্তু এটা তার সঙ্গীত জীবনে গান এবং কন্ঠের উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল।
লাকি আলী তার স্বতন্ত্র সঙ্গীত শৈলীর জন্য বেশি সুপরিচিত এবং সাথে তার বলবান কন্ঠও। তার তৃতীয় অ্যালবাম এবং চতুর্থ অ্যালবাম ছিল একেএস ও কাভি এছা লাগতা হে, উভয় এ্যালবাম যুক্তিসঙ্গতভাবে সফল ছিল। পাঁচ বছরে দীর্ঘ বিরতী পর, তিনি ২০০৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তার জন্মদিনে, নতুন অ্যালবাম জুয়ি প্রকাশ করেন।
নেপথ্য গান গাওয়া কর্মজীবন
লাকি আলী ১৯৭৮ সালের এক বাপ সে বেটে চলচ্চিত্র থেকে গানের মাধ্যমে তার প্লেব্যাক গান গাওয়া কর্মজীবন শুরু করেন। গানটির শিরোনাম ছিল "ওয়াকিং এন্ড আই এ্যাম ওয়াকিং এ্যালোনা"। এই ছবিতে অভিনয় করেন মেহমুদ লাকি নিজেসহ এবং তার আর ৬ ভাই।
অভিনয় জীবন
ভারতের এক মহান অভিনেত্রী মীনা কুমারীর ভাগ্নে এবং তার উপরে মেহমুদ এর পুত্র হওয়া লাকি আলীর অভিনেতা হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ করতে প্রয়োজনীয় সুযোগের অভাব হয়নি। তিনি ১৯৭০ সালে এবং ১৯৮০ সালের মধ্যে কয়েক ছায়াছবিতে অভিনয় করেন; যেমন ইয়ে হে জিন্দেগী (১৯৭৭) হামারে তুমহারে (১৯৭৯) এবং শ্যাম বেনেগাল' ট্রিকাল (১৯৮৫)। তিনি শ্যাম বেনেগাল এর নির্দেশিত টেলিভিশন ধারাবাহিক ভারত ইক খোজতে অভিনয় করেন। অভিনয় থেকে একটি দীর্ঘ বিরতির পর তিনি সঞ্জয় গুপ্তা এর কান্তে (২০০২) সালে অভিনয় করেন, যেখান অভিনয় করেন প্রধান তারকাদের মধ্যে অমিতাভ বচ্চন, সঞ্জয় দত্ত, কুমার গৌরভ এবং সুনীল শেঠী। লাকি এছাড়াও টিভি সিরিয়াল জারা হাটকে (২০০২) সালে তিনি একজন অভিনেতা হিসেবে প্রশংসা অর্জন করেন।
ডিস্কসমূহ
তার ডিস্কোগ্রাফিতে ৬টি স্টুডিও অ্যালবামরয়েছে, ৬ এমনকী, ৭টি একক, ১৮টি সাউন্ডট্র্যাক, ২টি কনসার্টের সফর এবং (একজন সুরকার হিসাবে) ২টি অন্যান্য অ্যালবাম।
স্টুডিও অ্যালবাম
- সুনো (১৯৯৬)
- সিফার (১৯৯৮)
- একেএস (২০০১)
- কাভি এ্যছা লাগতা হে (২০০৪)
- রাস্তে ম্যান (২০১১)
- এক্সুই (২০০৯)
- গোরি তেরে আখে...
সাউন্ডট্র্যাক
- আমেন (২০১৩)
- ডেভিড (২০১৩)
- দেব এস/ও অব মিডিল গাউদা (২০১১)[5]
- আনজানা আনজানি (২০১০)
- পাঠশালা (২০১০)
- রোড (২০১০)
- বাচনা এ হাসিনো (২০০৮)
- কালাই (২০০৮)
- Vellitherai (2008)
- দ্যা ফিল্ম ২০০৯
- যুবা (২০০৪)
- আনান্দ (২০০৪)
- আয়ুথা এজহুথু (২০০৪)
- এসওয়াই (২০০৪)
- চুপকে সে (২০০৩)
- বয়েজ (২০০৩)
- কাটে (২০০২)
- কাহোন না... প্যায়ার হে (২০০০)
- ভোপাল এক্সপ্রেস (১৯৯৯)
- দুশমন দুনিয়া কা (১৯৯৬)
ভিডিওগ্রাফী
তার ভিডিওগ্রাফীতে অভিনেতা হিসেবে ১৪টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র রয়েছে, অভিনেতা হিসেবে দুইটি টেলিভিশন ধারাবাহিক এবং একজন প্রযোজক ও পরিচালক হিসাবে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র রয়েছে।
চলচ্চিত্রের তালিকা
- রানওয়ে (২০০৯)
- গুড় লাক! (২০০৮)
- কাসাক (২০০৫)
- লাভ এ্যাট টাইমস স্কোয়ার (২০০৩)
- কাটে (২০০২)
- সুর-দ্যা মেলোডী অব লাইফ (২০০২)
- ট্রিকাল (১৯৮৫)
- হামারে তুমহারে (১৯৭৯)
- কিতাব (১৯৭৭)
- গিনি অর জনি (১৯৭৬)
- ইয়ে হে জিন্দেগী (১৯৭৭)
- কুনওয়ারা বাপ (১৯৭৪)
- ছোটে নবাব (১৯৬২)
টেলিভিসন সিরিজ
- ভারত ইক খোজ (১৯৮৮)
- জারা হাটকে (২০১২)
তথ্যসূত্র
- Mala Kumar (২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৩)। "Ali is a Maali at Home"। Chennai, India: The Hindu। ২১ মে ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮।
- http://www.filmfare.com/articles/lucky-ali-still-feeling-lucky-2489.html
- http://www.thisweekbangalore.com/?p=1119
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০১৩-০৭-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৩-০১।
- "Lucky Ali makes Sandalwood debut"। The Times Of India। ৯ নভেম্বর ২০১১। ৮ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৪।
বহিঃসংযোগ
- লাকি আলীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ জুলাই ২০১৭ তারিখে
- লাকি আলীর ব্লগ
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে লাকি আলী (ইংরেজি)
- ভারতীয় এক্সপ্রেস নিবন্ধ