রে এমরি

রেমন্ড উইলিয়াম জর্জ এমরি (ইংরেজি: Ray Emery; জন্ম: ২৮ মার্চ, ১৯১৫ - মৃত্যু: ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৮২) অকল্যান্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। এছাড়াও, রয়্যাল নিউজিল্যান্ড বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫০-এর দশকের শুরুরদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

রে এমরি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামরেমন্ড উইলিয়াম জর্জ এমরি
জন্ম(১৯১৫-০৩-২৮)২৮ মার্চ ১৯১৫
অকল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড
মৃত্যু১৮ ডিসেম্বর ১৯৮২(1982-12-18) (বয়স ৬৭)
অকল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৫)
৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৪
রানের সংখ্যা ৪৬ ১১৭৭
ব্যাটিং গড় ১১.৫০ ২৯.৪২
১০০/৫০ ০/০ ৩/৫
সর্বোচ্চ রান ২৮ ১২৩
বল করেছে ৪৬ ১৭৯০
উইকেট ২২
বোলিং গড় ২৬.০০ ৩৪.২৭
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/৫২ ৪/৪১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/- ১০/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৫ জুলাই ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে অকল্যান্ড ও ক্যান্টারবারি দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন রে এমরি

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

১৯৩৬-৩৭ মৌসুম থেকে ১৯৫৩-৫৪ মৌসুম পর্যন্ত রে এমরি’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৫২ সালে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট অ্যালমেনাক কর্তৃক বর্ষসেরা খেলায়াড়ের সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।

অকল্যান্ডভিত্তিক তাকাপুনা গ্রামার স্কুলে পড়াশুনো করেছিলেন রে এমরি।[1] ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে অকল্যান্ডের পক্ষে একটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

১৯৪৩-৪৪ মৌসুম থেকে ১৯৪৭-৪৮ মৌসুম পর্যন্ত অকল্যান্ডের পক্ষে নয়টি খেলায় অংশ নিলেও দলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। তন্মধ্যে, ১৯৪৬-৪৬ মৌসুমে ওতাগোর বিপক্ষে ১১০ ও ১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে ওয়েলিংটনের বিপক্ষে ১২৩ রান তুলেন। বাদ-বাকী ইনিংসগুলোয় ৩০ রানের মধ্যে অবস্থান করেছিলেন।

দল পরিবর্তন

১৯৪৭ সালের শেষদিকে ক্রাইস্টচার্চে চলে যান। সেখানে ১৯৫০-৫১ মৌসুম থেকে ক্যান্টারবারির পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। প্লাঙ্কেট শীল্ডে ৩০.০০ গড়ে ২৪০ রান তুলেন তিনি। তন্মধ্যে, ওয়েলিংটনের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ব্যাটিং উদ্বোধন করে ১১০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। নিম্নমূখী রানের ঐ খেলায় এ ইনিংসটিই ভিত্তি এনে দেয়।[2] ১৯৫১-৫২ মৌসুমেও ব্যাটিং উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। প্লাঙ্কেট শীল্ডে ৭২.১৬ গড়ে ৪৩৩ রান করেন। চারটি পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলে জাতীয় গড়ে শীর্ষস্থানে অবস্থান করেছিলেন রে এমরি।[3] গর্ডন লেগাটের সাথে বেশ শক্ত উদ্বোধনী জুটি গড়ে ক্যান্টারবারিকে প্লাঙ্কেট শীল্ডের শিরোপা বিজয়ে সবিশেষ ভূমিকা রাখেন।

সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়ে ২৯.৪২ গড়ে ১১৭৭ রান তুলেন। তন্মধ্যে, তিনটি শতরানের ইনিংস রয়েছে তার। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ৩৪.২৭ গড়ে ২২ উইকেট দখল করেছিলেন রে এমরি।

বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে রয়্যাল নিউজিল্যান্ড এয়ার ফোর্সে যোগ দেন ও ব্রিটেনে কাজ করেন। কানাডায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে রয়্যাল এয়ার ফোর্সের হারিকেন্স চালনা করেন।[4][5] যুদ্ধের পরও তিনি বিমানবাহিনী যুক্ত থাকেন। এ পর্যায়ে তিনি স্কোয়াড্রন লিডার পদবীধারী হন।[6] ১৯৪৭ সালে অস্ট্রেলীয় সিভিলিয়ান এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে রডনিস্কোপ ব্যবহারের বিষয়ে প্রতিবেদন রচনা করেন ও নিউজিল্যান্ডে এর প্রভাবের বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানান।[7]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন রে এমরি। সবগুলো টেস্টই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ তারিখে অকল্যান্ডে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

প্রায় ৩৭ বছর বয়স হওয়া সত্ত্বেও ১৯৫১-৫২ মৌসুমে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে উভয় টেস্ট খেলার জন্যে মনোনীত হন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী সিরিজে অংশ নেয়ার গৌরব অর্জন করেন। মৌসুমের শেষদিকে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত হওয়া সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে জিওফ রাবোনের সাথে ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটিতে নিজে করেন ২৮ রান।[8] এরপর, অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে মিডিয়াম পেস বোলিং করে ৪৬ বলের ব্যবধানে সফরকারী দলকে ২/৫২-এ নিয়ে যান। ফ্রাঙ্ক ওরেলক্লাইড ওয়ালকটের উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।[9] তাসত্ত্বেও, প্রতিপক্ষের সংগ্রহ ৫৪৬/৬ হয়। তবে, খেলায় তিনি খুব কমই ভূমিকা রাখতে পেরেছিলেন।[10]

অবসর

পরবর্তী দুই মৌসুমে তিনি চারটি খেলায় অংশ নেন ও মাত্র ৮০ রান তুলেন। এগুলোই তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বশেষ খেলায় অংশগ্রহণ ছিল।[11]

অকল্যান্ড বিমানবন্দর নির্মাণে ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। তার সম্মানার্থে বিমানবন্দরের একটি সড়ক রে এমরি ড্রাইভ রাখা হয়।[12]

ব্রিটেনে সাড়ে তিন বছর অবস্থানের পর নিউজিল্যান্ডে ফিরে আসেন। জুলাই, ১৯৪৫ সালে জ্যঁ মিলসন নাম্নী এক রমণীকে অকল্যান্ডের সেন্ট মেরিজ ক্যাথেড্রালে বিয়ে করেন।[13] ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৮২ তারিখে ৬৭ বছর বয়সে অকল্যান্ড এলাকায় রে এমরি’র দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

  1. "College Cricket: Takapuna Grammar"Auckland Star: 15। ২৬ এপ্রিল ১৯৩৩।
  2. "Wellington v Canterbury 1950-51"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৯
  3. 1951-52 batting averages
  4. "Raymond William George Emery"Auckland Museum। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৯
  5. "Hurricane Pilot"New Zealand Herald: 2। ১৬ মার্চ ১৯৪২।
  6. "Reserve of Air Force officers" (পিডিএফ)The New Zealand Gazette: 706। ১৯৬১।
  7. "Raymond William George Emery papers"MOTAT। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৯
  8. New Zealand v West Indies, Christchurch 1951-52
  9. New Zealand v West Indies, Auckland 1951-52
  10. Wisden 1953, pp. 837–41.
  11. "First-class Batting and Fielding in Each Season by Ray Emery"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৯
  12. David Frith, Silence of the Heart, Random House, London, 2011.
  13. "Service wedding"New Zealand Herald: 4। ১১ জুলাই ১৯৪৫।

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.