রেলগাড়ি
ট্রেন (বাংলাতে রেলগাড়ি) হচ্ছে এক ধরনের রেল পরিবহন যা কিছু সংযুক্ত যানবাহনের একটি সারি নিয়ে গঠিত, এবং যা যাত্রী বা মালামাল পরিবহণের জন্য সাধারণত একটি রেলপথের উপর চলে। ট্রেন শব্দটি প্রাচীন ফরাসি শব্দ ট্রাহিনার থেকে এসেছে, যা ল্যাটিন শব্দ ট্রাহিয়ার থেকে উদ্ভূত (অর্থ টানা, টেনে আনা)।[1]
রেল পরিবহন |
---|
একটি সিরিজের অংশ |
|
|
সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি
ট্রেন যে সমান্তরাল ধাতব পাতদ্বয়ের উপরে দিয়ে চালিত হয়, তাকে বলা হয় রেললাইন। আধুনিক চৌম্বকীয় ট্রেন অবশ্য রেললাইনের উপরে শূন্যে চালিত হয়ে থাকে। রেললাইনে সাধারণত দুটি সমান্তরাল পাত থাকে, তবে কিছু ট্রেন, যেমন মনোরেইলে একটি মাত্র পাত থাকে।
ট্রেনের যাত্রী বা মালামাল পরিবহণকারী কক্ষগুলোকে বগি বলে। ট্রেনের বগিগুলোর প্রতিটির তলায় ধাতব চাকা থাকে। বগিগুলো সামনে ও পিছন দিকের সংযোগস্থলের সাহায্যে একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে।
ট্রেনের ইঞ্জিন বা লোকোমোটিভ দিয়ে রেলের বগিগুলোকে চালনা করা হয়। বিংশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত রেলইঞ্জিনগুলো ছিল বাষ্পচালিত। বর্তমানে অবশ্য ডিজেল বা বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনের ব্যবহার বেশি।
রেল লাইনের কিছুদূর পরপর ট্রেন থামার স্থানগুলোকে রেলওয়ে স্টেশন বলা হয়। দুইয়ের অধিক রেলপথ যেসব রেলস্টেশনে এসে মিলিত হয়, সেসব রেল স্টেশনকে জংশন স্টেশন বলা হয়।
চালিকা শক্তি
প্রথম দিকের ট্রেনগুলো দড়ি দিয়ে ঘোড়া বা মাধ্যাকর্ষণের টানে চালিত হত। তবে ঊনবিংশ শতকের প্রথম ভাগ থেকে প্রায় সকল ট্রেন বাষ্পচালিত লোকোমোটিভ দ্বারা চালিত হতে শুরু করে। ১৯১০ এর দশক থেকে বাষ্পচালিত লোকোমোটিভের স্থলে ডিজেল ও বৈদ্যুতিক লোকোমোটিভের ব্যবহার শুরু হয়। বাষ্পীয় ইঞ্জিনের চাইতে এধরনের ইঞ্জিনগুলো অনেক কম পরিবেশ দূষণ করে, আর তাছাড়া এগুলো চালাতে লোকবলও কম লাগে। ১৯৭০ এর দশক নাগাদ প্রায় সব দেশেই বাষ্পীয় ইঞ্জিনের ব্যবহার উঠে যায়। তবে সস্তা কয়লা ও জনশক্তির দেশ, যেমন চীনে এখনো বাষ্পীয় রেল ইঞ্জিনের ব্যবহার আছে, যা ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে। বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনের মাইল-পিছু পরিবহন খরচ কম, তবে শুরুর দিকে স্থাপনা ব্যয় অনেক বেশি। তাই অনেক বেশি যাত্রী চলে, এমন পথে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন চালু করা লাভজনক। স্থাপনা ব্যয়ের কারণে দূরপাল্লার পথে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনের ব্যবহার কম। বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনগুলোতে রেললাইনের উপরে খুঁটিতে স্থাপিত তার, অথবা রেললাইনের পাশে বা মধ্যে স্থাপিত বিদ্যুৎবাহী রেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
- A British Rail Class 153 DMU
- A heritage steam train in Poland
- Interior of a 6 door passenger car in Japan, when the bench seats are folded
- একটি বৈদ্যুতিক মালবাহী ট্রেন
যাত্রীবাহী ট্রেন
একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে যাত্রী-বহনকারী গাড়ি থাকে এবং এটি প্রায়শই দীর্ঘ ও দ্রুতগামী হয়ে থাকে। এটি স্ব-চালিত মাল্টিপল ইউনিট বা রেলকার, অথবা এক বা একাধিক লোকোমোটিভ এবং কোচ, গাড়ি বা কামরা বলে পরিচিত এক বা একাধিক বিদ্যুতহীন ট্রেলারের সমন্বয় হতে পারে। যাত্রীবাহী ট্রেন স্টেশন বা ডিপোসমূহের মধ্যে চলাচল করে, যেখানে যাত্রীরা উঠতে ও নামতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, যাত্রীবাহী ট্রেন একটি নির্দিষ্ট সময়সূচীতে পরিচালিত হয় এবং মালবাহী ট্রেনের চেয়ে অধিক ট্র্যাক দখলের সুবিধা রাখে।
রেলগাড়ির ইতিহাস
জর্জ স্টিফেনসের প্রচেষ্টায় ইংল্যান্ডে ১৮২৫ সালের ২৭ শে সেপ্টেম্বর বিশ্বের প্রথম রেলগাড়ি চলাচল শুরু হয়। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে রেলগাড়ির যাত্রা শুরু হয়।
রেল পরিবহন
- আর্মার্ড ট্রেন
- ড্রামহেড (চিহ্ন)
- হেডবোর্ড (ট্রেন)
- সবচেয়ে ভারী ট্রেন
- রেল পরিবহনের ইতিহাস
- হাইড্রেল
- রেল কোম্পানির তালিকা
- নামযুক্ত যাত্রীবাহী ট্রেনের তালিকা
- বিলাসবহুল ট্রেন
- রকেট স্লেড
- ইউনিট ট্রেন
রেল দুর্ঘটনা
তথ্যসূত্র
- "Definition of train (noun) in Compact OED"। AskOxford.com। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। ২০০৫-০৫-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-১৮।
আরও পড়ুন
- Glancey, Jonathan (২০০৫)। "The Train"। Carlton Publishing Group। আইএসবিএন 978-1-84442-345-3।, 256 pp.