রেগ সিম্পসন
রেজিনাল্ড টমাস সিম্পসন (ইংরেজি: Reg Simpson; জন্ম: ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯২০ - মৃত্যু: ২২ নভেম্বর, ২০১৩) নটিংহামের শারউড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[1] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৫ সময়কালে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে মূলতঃ ডানহাতি মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন রেগ সিম্পসন। এছাড়াও, দলের প্রয়োজনে ডানহাতি অফ ব্রেক বোলিং করতেন তিনি।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | রেজিনাল্ড টমাস সিম্পসন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | শারউড, নটিংহাম, ইংল্যান্ড | ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯২০|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২২ নভেম্বর ২০১৩ ৯৩) | (বয়স|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৩৪১) | ১৬ ডিসেম্বর ১৯৪৮ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৫ মার্চ ১৯৫৫ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩ ডিসেম্বর ২০১৮ |
শৈশবকাল
নটিংহামের শারউড এলাকায় রেগ সিম্পসনের জন্ম। নটিংহাম হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ১৩ বছর বয়সে অভ্যন্তরীণ খেলায় হেনরি বেটসের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ৪৬৭ রান তুলেছিলেন। এপর হাই স্কুলের প্রথম একাদশে খেলার জন্য তাকে মনোনীত করা হয়। উচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের সদস্যরূপে ট্রেন্ট ব্রিজে আরএএফের বিপক্ষে ১৯৪০ সালে অপরাজিত ১৩৪ রান তুলে স্বীয় যোগ্যতার বহিঃপ্রকাশ ঘটান।
বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন আরএএফের পক্ষে পাইলট হিসেবে নিযুক্ত হন। এ সময়ে ওয়ালি হ্যামন্ড ও বিল এডরিচের ন্যায় খেলোয়াড়দের সাথে একত্রে আরএএফের পক্ষে ক্রিকেট খেলেছিলেন। ভারতে ইউরোপিয়ান্সের সদস্যরূপে জো হার্ডস্টাফ জুনিয়র ও ডেনিস কম্পটনের সাথে খেলার পাশাপাশি মাঝে-মধ্যে নটসের পক্ষে খেলতেন। যুদ্ধের পর ক্রিকেট খেলার প্রতি তার অনুরাগ আরও বৃদ্ধি পায়।
টেস্ট ক্রিকেট
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২৭ টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয় তার।[2] ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা গমনের উদ্দেশ্যে ইংরেজ দলে রেগ সিম্পসনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেখানেই তিনি প্রথম টেস্ট খেলায় অংশ নেন। কিন্তু, তেমন সফলতা পাননি তিনি। ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে রেগ সিম্পসনের।
১৯৪৯ সালে ইংল্যান্ড দলে মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে উপস্থাপিত করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন। খেলায় তিনি সেঞ্চুরি হাঁকান। তবে, লেন হাটন ও সিরিল ওয়াশব্রুকের ন্যায় ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদ্বয়ের কারণে প্রায়শঃই তিনি নিজেকে নিয়মিতভাবে দলে স্থান পাকাপোক্ত করতে পারেননি।[1]
১৯৫০ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন তিনি। ১৯৫০-৫১ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজ খেলার উদ্দেশ্যে ইংরেজ দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। এ সফরে ৩৮.৭৭ গড়ে ৩৪৯ রান তুলে লেন হাটনের পর ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে নিজস্ব ৩১তম জন্মদিনে অপরাজিত ১৫৬ রান তুলেন তিনি।[3] এ ইনিংসটি তার খেলোয়াড়ী জীবনের সবচেয়ে সেরা ছিল। লেন হাটনের সাথে ১৩১ রান তোলার পর শেষ উইকেট জুটিতে ৭৪ রানের মধ্যে ৬৪ রান করেছিলেন। এরফলে ইংল্যান্ড দল ১০৩ রানে এগিয়ে যায় ও ১৯৩৮ সালের পর প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় তুলে নেয়। এটিই তার টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। তবে, শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা বিজয়ী নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেন ২৫৯ রান। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে লেন হাটনের নেতৃত্বাধীন অ্যাশেজ সিরিজেও তিনি অংশ নেন। তবে, এ সিরিজে একটিমাত্র টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন রেগ সিম্পসন।
কাউন্টি ক্রিকেট
ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে ভীতিহীন ও কার্যকরী খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত পান রেগ সিম্পসন। কিন্তু, স্পিন বোলারদের বিপক্ষে তার ব্যাটিং বেশ নাজুক ছিল।
১৯৫১ সালে অস্থায়ীভাবে নটিংহ্যামশায়ারের অধিনায়কের দায়িত্ব পান। বিরক্তিকর আঘাতপ্রাপ্তি নিয়েও পরবর্তী এক দশক এ দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তার প্রাণপন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এ সময়ে কাউন্টি দলটি সফলতার মুখ দেখেনি। তবে, ব্যক্তিগত সাফল্য পেয়েছিলেন ও ৩০,০০০-এর অধিক রান তুলেছেন তিনি।[1] সামগ্রিকভাবে ৬৪টি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। ১৯৬২ সালে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাটিং গড়ে শীর্ষস্থান অধিকার করেন। ৫৪.১৮ গড়ে ৮৬৭ রান তুলেন।[4] ১৯৬৩ মৌসুম শেষে খেলার জগতকে বিদায় জানান তিনি।
ব্যক্তিগত জীবন
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর রেগ সিম্পসন নটিংহ্যামশায়ার কমিটির সাথে যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও গান এন্ড মুরের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ৪ এপ্রিল, ২০১০ তারিখে অ্যালেক বেডসারের দেহাবসানের পর রেগ সিম্পসন মৃত্যু-পূর্ব পর্যন্ত ইংল্যান্ডের সর্ববয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট খেলোয়াড়ের মর্যাদা লাভ করেছিলেন।[5] ২২ নভেম্বর, ২০১৩ তারিখে ৯৩ বছর বয়সে রেগ সিম্পসনের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
- Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 147। আইএসবিএন 1-869833-21-X।
- "Reg Simpson, who had been England's oldest surviving Test player, has died | Cricket News"। Sky Sports। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১১-২৭।
- Australia v England, Melbourne 1950–51
- Wisden 1963, p. 289.
- List of oldest living Test players
আরও দেখুন
বহিসংযোগ
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে রেগ সিম্পসন (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে রেগ সিম্পসন (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
ক্রীড়া অবস্থান | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী উইলিয়াম সাইম |
নটিংহ্যামশায়ার ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯৫১–১৯৬০ |
উত্তরসূরী জন ক্লে |