রূপসা জমিদার বাড়ি
রূপসা জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৫নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নে অবস্থিত একটি জমিদার বাড়ি।[1]
রূপসা জমিদার বাড়ি | |
---|---|
সাধারণ তথ্য | |
ধরন | বাসস্থান |
শহর | ফরিদগঞ্জ উপজেলা, চাঁদপুর জেলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
সম্পূর্ণ | ১৮ শতকের মাঝামাঝি |
বন্ধ করা হয়েছে | ১৯ শতকের মাঝামাঝি |
স্বত্বাধিকারী | আহম্মদ রাজা চৌধুরী |
ইতিহাস
প্রায় ২৫০ বছর আগে বংশাল গ্রামের বর্তমান খাজুরিয়া গ্রামের হিন্দু জমিদারদের জমিদারির পতন হলে ব্রিটিশদের কাছ থেকে এই জমিদারি কিনে নেন রূপসা জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা এবং তিনি রূপসা জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত করেন। তবে এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে কিছু মতামত রয়েছে। একটি মতে এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আহম্মদ রাজা নামের একজন। আর আরেকটি মতে এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মোহাম্মদ গাজী নামের একজন। তবে বেশি প্রসিদ্ধ হচ্ছে আহম্মদ রাজা নামের একজনই এই রূপসা জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা। আর ওনার সন্তান ছিলেন মোহাম্মদ গাজী। আহম্মেদ রাজার মৃত্যুর পর এই জমিদার বাড়ির জমিদারিত্ব গ্রহণ করেন মোহাম্মদ গাজী। তারপর মোহাম্মদ গাজীর মৃত্যুর পর এই জমিদার বাড়ির জমিদারিত্ব পান তার সন্তান আহমেদ গাজী। এই জমিদাররা খাজনার জন্য প্রজাদের উপর কখনো অত্যাচার জুলুম করতেন না। উল্টো প্রজাদের দুঃখ-দুর্দশার সময় তাদেরকে সাহায্য করতেন। তাই তাদেরকে প্রজারা অনেক শ্রদ্ধা করত, যা এখনো বিদ্যমান রয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। এই রূপসা জমিদার পরিবারের একজন হলেন খান বাহাদুর আবিদুর রেজা চৌধুরী। তিনি ব্রিটিশ শাসনামলে নামকরা রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মী ছিলেন। এই জমিদার বাড়ির বংশধররা এখনো এই বাড়িটিতে বসবাস করতেছেন।[1][2]
মুক্তিযুদ্ধে অবদান
মহান মুক্তিযুদ্ধ এর সময় পূর্ব বাংলার বেশিরভাগ জমিদাররাই পাকিস্তান মিলিটারি বাহিনীকে অর্থ এবং বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছে। কিন্তু এই রূপসা জমিদাররা পাকিস্তানি মিলিটারিকে সাহায্য করেননি। তারা মূলত মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছেন। [1]
জমিদার বাড়ির অবকাঠামো
জমিদার বাড়ির সামনে বিশাল মাঠ। জমিদার বাড়িতে ইট দিয়ে তৈরি করা মোট তিনটি ভবন আছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে মূল ভবন, আর একটি আছে মুল ভবনের বাম পাশে এবং আরেকটি আছে মূল ভবনের পিছনে। এছাড়াও আছে ঢেউটিন দিয়ে তৈরি করা তিনটি ঘর। জমিদার বাড়িতে ঢুকার পথে ডানপাশে আছে জমিদার বাড়ির মসজিদ এবং জমিদার বাড়ির কবরস্থান। আর ঘাটবাঁধানো একটি বিশাল পুকুর ও জমিদার বাড়ির প্রবেশদ্বার।
বর্তমান অবস্থা
দেশের অন্যান্য জেলার বেশিরভাগ জমিদার বাড়িই অযত্ন ও অবহেলার কারণে প্রায় ধ্বংসের মুখে। কিন্তু বাংলাদেশের এই রূপসা জমিদার বাড়ি এখনো প্রায় আগের মতই আছে। রূপসা জমিদার বাড়িতে প্রবেশ পথে একটি গেইট রয়েছে, ভিতরে একটি মসজিদ, জমিদার পরিবারবর্গের একটি কবরস্থান, একটি কাছারি ঘর রয়েছে।[1]
চিত্রশালা
- রূপসা জমিদার বাড়ির প্রবেশদ্বার
- রূপসা জমিদার বাড়ির মূল ভবন
- রূপসা জমিদার বাড়ির মূল ভবন
- রূপসা জমিদার বাড়ির মূল ভবনের পিছনের ভবন
- রূপসা জমিদার বাড়ির দ্বিতীয় তলা
- রূপসা জমিদার বাড়ির মসজিদ
- রূপসা জমিদার বাড়ির কবরস্থান
- রূপসা জমিদার বাড়ির কবরস্থান
আরো দেখুন
তথ্যসূত্র
- "চাঁদপুরের ঐতিহ্য রূপসা জমিদারবাড়ী"। দৈনিক নয়া দিগন্ত। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- "ইতিহাস ও সৌন্দর্যের রুপসা জমিদার বাড়ী"। www.bd24live.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-২৪।