রূপসা উপজেলা
রূপসা বাংলাদেশের খুলনা জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
রূপসা | |
---|---|
উপজেলা | |
রূপসা রূপসা | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৫০′১৪″ উত্তর ৮৯°৩৫′৩″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
জেলা | খুলনা জেলা |
সরকার | |
• উপজেলা নির্বাহী অফিসার | নাসরিন আকতার |
আয়তন | |
• মোট | ১২০.১৫ বর্গকিমি (৪৬.৩৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০০১)[1] | |
• মোট | ১,৬৭,৬০৪ |
• জনঘনত্ব | ১,৪০০/বর্গকিমি (৩,৬০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৪.৬৮% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৪০ ৪৭ ৭৫ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
উত্তরে তেরখাদা উপজেলা, দক্ষিণে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলা ও বটিয়াঘাটা উপজেলা, পূর্বে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলা ও মোল্লাহাট উপজেলা, পশ্চিমে কোতোয়ালী থানা ও খালিশপুর থানা।
প্রশাসনিক এলাকা
এই উপজেলার ইউনিয়ন সমূহ -
ইতিহাস
[[ ক) নৃতাত্ত্বিক পরিচয় :
বাংলার দক্ষিনাঞ্চলে গাঙ্গেয় উপ-দ্বীপ বলে পরিচিত। একাধিক নদী পুরো স্থলভূমিকে অসংখ্য দ্বীপ-উপদ্বীপে পরিনত করেছে। নানা প্রাকৃতিক উত্থান-পতন ও জোয়ার ভাটায় নদী ভেঙেছে, চর পড়েছে, প্লাবিত হয়েছে জমি, জেগে উঠেছে নতুন নতুন স্থলভূমি।
এ সময় দক্ষিনের এ দ্বীপ অঞ্চলের নাম ছিল চন্দ্র দীপ। নানা ভাগ উপভাগে আবার বিভক্ত ছিল এ দ্বীপাঞ্চল। চন্দ্রদ্বীপের পূর্ব দিক, বাগেরহাটের অধিকাংশ অঞ্চল রাঙদ্বীপ (রাঙদিয়া) ও মধুদীপ (মধুদিয়া) পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বর্তমান রূপসা উপজেলা ছিল এ উপ-দ্বীপের সাথে সংযুক্ত। পুরো অঞ্চল ছিল সুন্দরবনের অংশ।
খ) খুলনা নামের উৎপত্তি ও রূপসার স্থান :
অতীতকাল থেকে এ অঞ্চলের মানুষ সুন্দরবন থেকেই কাঠ সংগ্রহ করত। এ এলাকার যত কাঠ প্রয়োজন হতো তা আসত সুন্দরবন থেকে। কাঠ সংগ্রহকারী বাওয়ালী গোষ্ঠী ছাড়াও ছাড়াও মধু ও মোম আহোরন করতে ক্ষুদ্র এক গোষ্ঠি জড়িত ছিল। প্রচুর মাছ ছিল সুন্দরবনের নদী এ খাল গুলোয়। তবে এখান থেকে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে মাছ আহোরনের চিন্তা অতীতে ছিল না। তবে সুন্দরবনে যারাই যেত জনপদের শেষ সীমা নয়াবাদ নামের এক জায়গায় তারা স্থান নিত। বন কেটে বসতি গড়ে তোলার নতুন আবাদ ছিল এটা। ভৈরব নদী সেনের বাজার কে উত্তরে ফেলে পূর্বে মোড় নিয়েছে যেখানে, এটা ছিল সে জায়গা। এখানে সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করত নৌকার বহর। রাতে কেউ নৌকা খুলতে চাইলে “বনদেবী” বারন করত, বলত, খুলো না। কালে কালে খুলনা নামের উৎপত্তি এখান থেকেই বলে অনেকের ধারণা।
তবে খুলনা নামের সূচনা নিয়ে আরও একটি গ্রহনযোগ্য কিংবদন্তি আছে। তা হলো, অতীতে ধনপতি নামে এক সওদাগর বাস করতেন এ অঞ্চলে। তার দুই স্ত্রী ১) লহনা এ ২) খুল্লনা। লহনা সন্তানবর্তী তবে ঈর্ষাপরায়না ছিলেন। ধনপতি বানিজ্যে গেলে খুল্লনা কে কষ্ট দিতেন। অন্যদিকে অপরূপ সুন্দরী খুল্লনা ছিলেন বন্ধ্যা। এ জন্য দৃ:খের সীমা ছিল না তার। অবশ্য ধনপতি প্রচন্ড ভালবাসতেন খুল্লনা কে। তার নামে ভৈরবের পাড়ে খুল্লনেশ্বরী মন্দির গড়ে তোলেন। এখন থেকে প্রায় পৌনো দুশো বছর আগে এ মন্দির নদীগর্ভে (বর্তমান আঠারবেকী) বিলীন হয়ে যায়। তার পর থেকে ঐ গ্রামের নাম হয় খুলনা। পরবর্তীতে কিসমত খুলনা। দেখা যাচ্ছে, খুলনা নামের উৎপত্তি নিয়ে দুটো কিংবদন্তিই বর্তমান রূপসা উপজেলা অঞ্চলে প্রচলিত রয়েছে।
গ) রূপসা নামের উৎপত্তি :
ভৈরব নদের সাথে রূপসা উপজেলা তথা খুলনার ইুতহাস ওতোপ্রতভাবে জড়িত। বস্তুত: ব্যবসা কেন্দ্র হিসাবে খুলনার যাত্রা ভৈরবকে কেন্দ্র করেই। ভৈরব দক্ষিনাঞ্চলের সবচেয়ে দীর্য়্য নদী। এক সময় ভয়ংকর মুর্তি ছিল এই নদীর। এভন সেই তান্ডব রূপস আর নেই। ভৈরবের উৎপত্তি এই রূপসায়। মালদহের মধ্যদিয়ে শ্রুতকীর্তি নদ যেখানে পদ্মায় পড়েছে তার উল্টো দিক থেকে ভৈরবের শুরু। কিছু দুর এসে জলঙ্গী নদীর সাথে মিশে পরে আবার মুক্ত হয়ে মেহেরপুর, দর্শনা, কোটচাঁদপুর ও যশোর হয়ে এসছে খুলনায়। সেনের বাজারকে বায়ে ফেলে ঘুরে গেছে পূর্বে। ওদিকে দক্ষিনের পশুর নদী খুলনার পূর্ব দিকের বিল পর্যন্ত বিস্তৃত। পশ্চিমে বিল পাবলা থেকে উল্লেখিত একটা খাল দক্ষিনে ময়ুর নদীতে (মৈয়ারগাঙ্গ) মিশে।]]
ভাষা ও সংষ্কৃতি
রূপসা উপজেলার ভূ-প্রকৃতি ও ভৌগোলিক অবস্থান এই উপজেলার মানুষের ভাষা ওসংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত এইউপজেলার দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গেপসাগর ও সুন্দরবন। এখানে ভাষার মূল বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশের অন্যান্য উপজেলারমতই, তবুও কিছুটা বৈচিত্র্য খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন কথ্য ভাষায় মহাপ্রাণধ্বনি অনেকাংশে অনুপস্থিত, অর্থাৎ ভাষা সহজীকরণের প্রবণতা রয়েছে।
যেসব সরকারী সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা রূপসায় কাজ করছে সেগুলো হলোঃ
* উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী, * বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, * প্রভৃতি।
শিক্ষা
- সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ
- রূপসা কলেজ
- কাজদিয়া সরকারি কলেজ
- কাজদিয়া সরকারি উচ্চ মাধমিক বিদ্যালয়
- কাজদিয়া মহিলা বিদ্যালয়
- আলাইপুর কলেজ
- কাজদিয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়
- রুপসা মহিলা কলেজ
- গাজী মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- রহিমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- রহমত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- বামনডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- বামনডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- বামনডাঙ্গা সালাফিয়া মাদ্রাসা
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
- হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ, মহাসচিব ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
- মাওঃ সাখাওয়াত হোসেন, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
- আব্দুস সালাম মুর্শেদী, এমপি, খুুলনা-০৪, সাবেক জাতীয় ফুুুটবল দলের সদস্য ও সিনিয়র সহসভাপতি, বাফুফে
- আমজাদ হোসেন, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী, পাকিস্তান
- সরদার আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক ট্রেজারার, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠাতা, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, রূপসা এবং সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ।
- আজিজুল বারী হেলাল, কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক বি এন পি , সাবেক সভাপতি কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
- সরদার ফেরদৌস আহমেদ, সাবেক অধ্যক্ষ, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, রূপসা ও রূপসা কলেজ, খুলনা এবং বিশিষ্ট সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ
- আব্দুল গণি মোল্লা, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও ধর্মীয় নেতা। বামনডাঙ্গা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বামনডাঙ্গা সালাফিয়া মাদ্রাসা ও মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা।
- হাসান মাহমুদ সিদ্দিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠক। কালিয়া, বড়দিয়া, তেরখাদা প্রভৃতি অঞ্চলে ১৯৭১ সালে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে রূপসা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৮ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারী ২০১৫।