রুনু বিশ্বাস

রুনু বিশ্বাস (জন্ম:১৪ জুলাই ১৯২২) একজন বাংলাদেশী নৃত্যশিল্পী, নৃত্য গুরু, উপমহাদেশের আবৃত্তিনৃত্য কলার পথিকৃৎ। তিনি নৃত্যগুরু রুনু বিশ্বাস নামে খ্যাত। নৃত্য কলায় বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৯৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।[1] তিনি নৃত্যকে অস্ত্র বানিয়ে দেশদ্রোহীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন৷

রুনু বিশ্বাস
জন্ম১৪ জুলাই ১৯২২
মৃত্যু১ জানুয়ারি ১৯৯৭
জাতীয়তাবাঙালি
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ
আদি নিবাসচট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
সন্তানকৃষ্ণা বিশ্বাস
পুরস্কারএকুশে পদক

আবৃত্তিনৃত্য

ভারতীয় উপমহাদেশে তিনিই প্রথম আবৃত্তি নৃত্য কলার স্রষ্টা। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতাকে নিয়ে আবৃত্তিনৃত্য ও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের রানার কবিতা নিয়ে আবৃত্তিনৃত্য করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নির্ঝরের স্বপ্ন ভঙ্গ ইত্যাদি আবৃত্তি নৃত্য এবং রেকর্ড সংখ্যক নাট্যনৃত্য তৈরি করে নৃত্যকলায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন।

নৃত্যসাধনা ও প্রদর্শনী

নৃত্যগুরু রুনু বিশ্বাস বিয়াল্লিশের দশক থেকে একটানা চুয়ান্ন বছর পর্যন্ত নিজেকে নৃত্য সাধনায় উৎসর্গ করেন। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরে চট্টগ্রাম মুসলিম হল চত্বরে আয়োজিত যুদ্ধবিরোধী সমাবেশে তৎকালীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতা বঙ্কিম সেনের উৎসাহে হিটলার নৃত্য পরিবেশন করেন। এর পর সর্বভারতীয় ছাত্র ফেডারেশনের নেতা সত্যপাল ডং ও কমিউনিস্ট নেতা কমরেড পি জি যোশীর উদ্যোগে দুর্ভিক্ষ পীড়িত মানুষের সাহায্যার্থে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মহামারী ও কংকাল নৃত্য পরিবেশন করেন। এছাড়া তিনি নৃত্যের মাধ্যমে চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহণ, ধূমকেতু, অর্জুন-উর্বশী, নবান্ন, মহিষাসুর মর্দিনী, বসন্ত উৎসব, ছায়ানৃত্য সহ বেশ কিছু প্রদর্শনী করেছেন।

শিল্পকলা ও অবদান

রুনু বিশ্বাস চট্রগ্রাম নগরীতে তার ঘটফরহাদবেগস্থ বাসায় প্রথমে কর্ণফুলী একাডেমি অব ফাইন আর্টস প্রতিষ্ঠা করে শাস্ত্রীয় নৃত্য ও সঙ্গীতের উপর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করেন। ১৯৬৭ সালে নৃত্য গুরুর সহধর্মিণী রানী বিশ্বাসের প্রস্তাবে এ প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করে বাঙ্গালী সঙ্গীতজ্ঞ উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নামানুসারে আলাউদ্দিন ললিতা কলা কেন্দ্র রাখা হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ১ম - ৬ষ্ঠ বর্ষ পর্যন্ত দেওয়া হয় সঙ্গীত, তবলানৃত্যের উপর নিয়মিত প্রশিক্ষণ। ২০০০ সালে তৎকালীন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় নৃত্যগুর রুনু বিশ্বাস স্বর্ণ পদক। ২০০৩ সালে কবরী সরওয়ার ও ২০১১ সালে কথক নৃত্য শিল্পী রেশমা ফিরোজকে এ পদক দেওয়া হয়। ৫০ বছর পূর্তিতে কবি আবুল মোমেনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ঢোল বাজিয়ে গিনেস বিশ্ব রেকর্ড গড়া পণ্ডিত সুদর্শন দাশ ৪ বছর বয়স থেকে তবলায় হাতেখড়ি আলাউদ্দিন ললিতা কলা কেন্দ্রে।

তথ্যসূত্র

  1. "একুশে পদকপ্রাপ্ত সুধীবৃন্দ ও প্রতিষ্ঠান" (পিডিএফ)সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পৃষ্ঠা ১০। ২২ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৯
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.